23 C
Nārāyanganj
বুধবার, মার্চ ২২, ২০২৩

সোনারগাঁয়ে ক্লুলেস মামলার ৪ আসামী র‌্যাবের জালে

দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে সংঘটিত “ক্লুলেস আল-আমিন হত্যা” মামলার রহস্য উন্মোচন এবং তদন্তে প্রাপ্ত সন্ধিগ্ধ চার আসামীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে র‌্যাব-১১ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল জেলার সোনারগাঁও থানাধীন পূর্ব সনমান্দি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আল-আমিন হত্যা মামলার তদন্তে প্রাপ্ত সন্ধিগ্ধ আসামী নুরুল আমিনের ছেলে সৈয়দ হোসেন সাগর,ইলিয়াস মিয়ার ছেলে মোঃ কবির হোসেন, জাকির হোসেনের ছেলে মোঃ ইউসুফ ও জাকির হোসেনের স্ত্রী নাসিমা বেগমকে গ্রেফতার করে।

র‌্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধের উৎস উদ্ঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার, অপরাধ দমন ও আইন শৃঙ্খলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর এবং আলোচিত অপরাধের অপরাধীদের গ্রেফতারেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। নিবিড় গোয়েন্দা নজরদারী ও পরিকল্পিত আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অপরাধী গ্রেফতার এবং আইনের আওতায় এনে র‌্যাব ইতিমধ্যেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।

র‌্যাবের লেঃ কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা স্বাক্ষরিত এ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিস্তারিত জানা যায়।

গত ১৭ জানুয়ারী সোনারগাঁ থানাধীন হামছাদি এলাকায় জমির আইলের উপর জমানো আগাছার স্তপের মধ্য হতে আল-আমিন (২২) এর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং ৩২ তারিখ ১৭/০১/২০২৩। উল্লখিত বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংগ্রহসহ নৃশংস এই হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতারের জন্য র‌্যাব-১১, ব্যাটালিয়ন সদর এর একটি গোয়েন্দা দল ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার আসামীদেরকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

প্রাথমিক অনুসন্ধান ও আটককৃত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, নিহত আল-আমিন (২২) মুলত এলাকায় চুরি এবং ছিনতাই কাজে জড়িত ছিলো। তার এই কাজের জন্য তার পরিবারকে প্রায় সময়ই বিব্রত হতে হয় এবং বারংবার জরিমানা দিতে হয়। এই নিয়ে গ্রামে স্থানীয় মেম্বারকে নিয়ে একাধিকবার সালিশ হয়। তার এরূপ আচরণের জন্য প্রায় সময়ই তার পরিবার তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখতো। গত ৯ জানুয়ারী সে শিকল খুলে পালিয়ে গেলে তাকে আর খুঁজাখুঁজি করে পাওয়া যায়নি।

আল-আমিন পালিয়ে যাওয়ায় তার পরিবার ও তার প্রতিবেশীরা পুনরায় চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটতে পারে ভেবে ভিকটিমের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়। র‌্যাব-১১ এর ছায়া তদন্তের এক পর্যায়ে তদন্ত কাজে ভিকটিমের পরিবারের অনিহা এবং অসহযোগিতা পরিলক্ষিত হলে ভিকটিমের বড় ভাই ইউসুফকে সন্দেহ হয় এবং তাকে র‌্যাব-১১ এর সদর দপ্তরে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে উক্ত হত্যাকান্ডের ব্যাপারে বেশ কিছু গুরুত্বপূূর্ণ তথ্য প্রদান করে। তার বক্তব্যমতে, ভিকটিম চুরি ও ছিনতাই এর কাজে জড়িত থাকার কারণে তার প্রতি বিক্ষুব্ধ হয়ে ভিকটিমের চাচাতো ভাই সৈয়দ হোসেন সাগর, ভিকটিমের প্রতিবেশী কবির এবং জহির তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এরই প্রেক্ষিতে গত ১০ জানুয়ারী সন্ধ্যায় ভিকটিমকে তার বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে ফসলের মাঠে সৈয়দ হোসেন সাগর, কবির এবং জহির গামছা দিয়ে মুখ বেধে মারধর করছে বলে ভিকটিমের মা জানতে পারে। বিষয়টি ভিকটিমের মা তার বড় ছেলে ইউসুফকে জানালে ইউসুফ ঘটনাস্থলে আসে এবং তার ভাইকে মারধর না করতে অনুরোধ করে।

পরবর্তীতে ভিকটিমের বড় ভাই ইউসুফ মুগড়াপাড়া পুরাতন সেবা ক্লিনিক এলাকায় নাইট ডিউটির কাজ করে বিধায় সে তার কর্মস্থলে ফিরে আসে। সে রাতেই ভিকটিমের মা ইউসুফকে আবার ডাকলে সে ঘটনাস্থলে পুনরায় যায় এবং সেখানে তার মা ও তার মামা শহীদুল্লাহ এবং সৈয়দ হোসেন সাগর, জহির এবং কবিরকে দেখতে পায়।

ইউসুফ তার মাকে তার ভাই আল-আমিনের কথা জিজ্ঞাসা করলে সে জানতে পারে যে আল-আমিনকে সৈয়দ হোসেন সাগর, কবির এবং জহির মিলে শ^াসরোধ করে হত্যা করে জমির আইলের উপরে রাখা আগাছার স্তুপের মধ্যে লুকিয়ে রেখেছে। ঘটনাস্থলে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ইউসুফ, তার মা ও মামাকে এব্যাপারে মুখ খুললে তাদেরকেও হত্যা করবে বলে হুমকি দেয়। তাছাড়া গত ১৭ জানুয়ারী আল-আমিনের লাশ উদ্ধারের পর মামলা করতে গেলে সৈয়দ হোসেন সাগর ভিকটিমের পরিবারকে মামলা না করতে এবং উক্ত মামলার তদন্তে কোন প্রকার সহযোগিতা না করতে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments

0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x