দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় আলোচিত আব্দুল হালিমকে (৩০) জবাই করে হত্যা করে লাশ গুম করার ঘটনায়, ৯ বছর পর মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তে এক আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারী) রাতে ঢাকার খিলগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে ফতুল্লা মডেল থানার একটি টিম তাকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামি নাম সোহাগ (৪৫) ফতুল্লার পশ্চিম দেওভোগ পানির ট্যাংকী সাউপাড়া এলাকার শাহজাহানের ছেলে।
জানা যায়, কয়লা ব্যবসার জন্য চুক্তি ভিত্তিতে ফতুল্লার উত্তর নরসিংপুর এলাকার আফসার উদ্দিনের ছেলে আব্দুল হালিমের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছিল বন্ধু ইকবাল। দীর্ঘদিন ওই ব্যবসার লাভ কিংবা মূল টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো টালবাহনা করছিল। এসব কারণেই তাদের মধ্যে মনমালিন্য হয়। সেই বিরোধের জের ধরে ২০১৪ সালের ১৬ আগস্ট সন্ধ্যায় টাকা দেয়ার কথা বলে আব্দুল হালিমকে ফতুল্লার শাসনগাওস্থ বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায় ইকবাল। সেখানে ইকবালের ছাদে হালিমকে প্রথমে ইকবাল হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে অচেতন করে। তারপর ইকবালের নেতৃত্বে কয়েকজন মিলে হালিমকে ধারালো দেশি অস্ত্র দিয়ে কেটে পাঁচ টুকরো করে লাশ গুম করে ফেলে।
এদিকে, ঘটনার পরদিন হালিমের ছোট ভাই শামীম উদ্দিন বাদী হয়ে ইকবালের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আসামি করে ফতুল্লা মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় প্রথমে সাদেকুর রহমান গ্রেফতার হলে তাঁর দেওয়া তথ্যে ফতুল।লার কাশিপুর এলাকায় আবদুল হালিমের বস্তাবন্দি অবস্থায় হাত-পা বিহীন লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পর্যায়ক্রমে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১৮ জুলাই নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আনিছুর রহমান ওই রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে হত্যার পর লাশ গুমের চেষ্টার অভিযোগে একই সঙ্গে আরও ৭বছর করে সশ্রম কারাদন্ড ও সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড করা হয়। অর্থদন্ডের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে আরও ৬মাস করে কারাভোগ করতে হবে।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলো, ফতুল্লার শাসনগাও এলাকার মৃত ফুলচানের ছেলে ইকবাল হোসেন (৩৫), পশ্চিম দেওভোগ সাউপাড়া এলাকার শাহজাহানের ছেলে সোহাগ (৪০), সুনামগঞ্জের মৃত ইছাক মোল্লার ছেলে সাদেকুর রহমান (৩৮) ও শরিয়তপুরের মৃত হারুন কাজীর ছেলে বাবু কাজী (৪৫)। তাদের সবার বাড়ি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার মুসলিমনগর এলাকায় বসবাস করতো। হত্যার অভিযোগে চারজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করতে রায়ের আদেশে বলা হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় দন্ডপ্রাপ্তরা পলাতক ছিল।
এ মামলায় তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। খালাসপ্রাপ্ত তিন আসামি হলো আবুল হোসেন, মেহেদী ও মোক্তার হোসেন। রায় ঘোষণার সময় খালাসপ্রাপ্ত তিনজনই আদালতে উপস্থিত ছিল।
ফতুল্লা মডেল থানার ইন্সপেক্টর (অফিসার ইনচার্জ) শেখ রিজাউল হক দিপু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ফতুল্লার উত্তর নরসিংপুর এলাকার ওয়ার্কশপ মালিক বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যার অভিযোগে ৪জনকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেছেন আদালত। রায়ের পর থেকে আসামীরা পলাতক ছিল। আর মৃত্যুদন্ড পলাতক আসামী সোহাগকে ঢাকার খিলগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।