দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলায় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন শুরু হতে যাচ্ছে।এ বছর জেলায় মোট ৩ লাখ ২৩ হাজার ৬৪৩ জন ভিটামিন এ গ্রহন করবে।
রবিবার(১৯ ফেব্রুয়ারি )দুপুর ১২ টায় নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জনে জেলা সাংবাদিকদের নিয়ে এক ওরিয়েন্টেশন কোর্সে এ তথ্য জানান নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা.আবুল ফজল মুহাম্মদ মুশিউর রহমান ।
এবছর নারায়ণগঞ্জ জেলায় জাতীয় ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন ২০ ফেব্রুয়ারি দিনব্যাপী নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ব্যতিত ৫টি উপজেলায় সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৬-১১ মাসের ৩৮,৯০৩ জন শিশুকে একটি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল( ১,০০,০০০ আই ইউ) এবং ১২-৫৯ মাস বয়সের ২,৮৪,৭৪০ জন শিশুকে ১টি লাল রংঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (২,০০,০০০ আই ইউ) খাওয়ানো হবে। জেলার সিটি করপোরেশন ব্যতিত স্থায়ী ও অস্থায়ী ১,০৫৬টি টিকাদান কেন্দ্রে প্রতি কেন্দ্রে ৩ জন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মী, শিক্ষক ও স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে জাতীয় ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন কার্যক্রম বাস্তবায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
ওরিয়েন্টেশন কোর্সে নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন বলেন, ভিটামিন ‘এ ‘এর অভাবজনিত অপুষ্টি ও শিশুমৃত্যুর হার কমানোর লক্ষ্যে কোভিড১৯ মহামারীর প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জাতীয় ‘ভিটামিন এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন সফল করার লক্ষ্যে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি দিনব্যাপী সারাদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জ জেলায় পালন করা হইবে।
উক্ত দিবসে ৬-১১ মাস বয়সী প্রতিটি শিশুকে একটি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (১লক্ষ আই,ইউ) ও ১২-৫৯ মাস বয়সী প্রতিটি শিশুকে একটি লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (২লক্ষ আই,ইউ) খাওয়ানো হইবে । শিশুকে জন্মের ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত বুকের দুধ পান করাতে হইবে এবং শিশুর বয়স ৬মাস পূর্ন হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি ঘরে তৈরী সুষম খাবার খাওয়ানো বিষয়ে পুষ্টি বার্তা প্রচার করা হইবে।
তিনি আরো বলেন,ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন এর জেলা এ্যাডভোকেসি ও প্ল্যানিং সভা, উপজেলা পর্যায়ে উপজেলায় কর্মরত সকল বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে এডভোকেসী সভা এবং উপজেলায়তেও এডভোকেসী সভা, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগীয় কর্মীদের সমন্বয়ে ওরিয়েন্টশন এবং প্লানিং সভা সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়াও ওয়ার্ড পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবদের ওরিয়েন্টশন সম্পন্ন করা হয়েছে। দিবসটি পালনের জন্য সর্বস্তরের জনগোষ্ঠিকে অবহিত করার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের মাধ্যমে সর্বত্র মাইকে প্রচারনার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তাছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে দিবসটি সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করছে। জেলা তথ্য বিভাগ, নারায়ণগঞ্জ এর মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য ও মাইকিং এর মাধ্যমে জনগনের মাঝে সচেতনতা মূলক প্রচারনা অব্যাহত আছে।টিকা কেন্দ্রে সরকারী/বেসরকারী সংস্থার কর্মীদের অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য অফিস প্রধানদের অনুরোধ জানানোর পাশাপাশি জেলার সকল মসজিদের ইমামদের জুম্মার নামাজের খুত্বা পাঠের আগে ও অন্যান্য সময় মসজিদে আগত মুসল্লীদের জাতীয় ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন এর বিষয়ে অবহিত করার জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মহোদয় ইতিমধ্যেই পত্র দ্বারা অবহিত করেছেন।
এ ছাড়া জরুরী পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতাল এবং প্রতিটি উপজেলা হাসপাতালে বিশেষ মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
সিভিল সার্জন সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন,ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল নিরাপদ। এতে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হওয়ার তেমন কোন ঝুঁকি নেই। তাই এই কার্যক্রমে সফল বাস্তবায়নের জন্য সন্মানিত সাংবাদিক বৃন্দের সহযোগীতা কামনা করি এবং পূর্বের মতো এবারও সকলের সার্বিক সহযোগীতার মাধ্যমে অত্র জেলায় “জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন” ২০ ফেব্রুয়ারি , ২০২৩ইং এর সুষ্ঠু ও সফল বাস্তবায়ন সম্ভব।
এর আগে ভিটামিন এ এর গুরুত্ব, প্রয়োজনীয়তা,শিশুরা ভিটামিন না খেলে কি কি অসুবিধা হতে পারে সহ ‘ভিটামিন এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন সিভিল সার্জন মেডিকেল অফিসার ডা.শিল্পী আকতার।
এসময় ওরিয়েন্টেশন কোর্সটি নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা.আবুল ফজল মুহাম্মদ মুশিউর রহমানের সভাপতিত্বে ও মেডিকেল অফিসার ডা.মেহেদী হাসান ও জেলা ইপিআই সুপারিন্টেনডেন্ট মোঃলূৎফর রহমানের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক স্বপন কুমার দেবনাথ,জুনিয়র স্বাস্থ্য অফিসার শাকির হোসেন, জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী ভূইয়া,সিসিটি মোঃআনোয়ার হোসেন,নারায়ণগঞ্জ সিটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল্লাহ মাহমুদ টিটু,নারায়ণগঞ্জ জেলা রিপোর্টাস ইউনিটির সভাপতি শহীদুল্লাহ রাসেল সহ নারায়ণগঞ্জ জেলার প্রিন্ট,ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।