দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির অধীনস্থ ৫টি ইউনিট কমিটি ঘোষণা করেছেন জেলা বিএনপির আহবায়ক মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন ও সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন। তবে কমিটিগুলো গঠনে কেন্দ্রের নির্দেশনা মানা হয়নি বলে দাবি করছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
আর কমিটিগুলো ঘোষণা দেওয়ার পরেই শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। যার ফলে অনেকটা বিপাকে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন এমন গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছে। অপরদিকে জেলা বিএনপির ১নং যুগ্ম আহবায়ক মামুন মাহমুদও কমিটিগুলোকে অবৈধ বলে দাবি করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কথা বলেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক তৃণমূল নেতাকর্মী জানান, জেলা বিএনপির অধীনস্থ ৫টি ইউনিট কমিটি গঠনে স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম ও দলীয় নিয়মনীতি উপেক্ষা করেছেন জেলা বিএনপির আহবায়ক মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন ও সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন। বিভিন্ন ইউনিটের ত্যাগী ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন ইচ্ছামতো কমিটি গঠন করেছেন। তবে ত্যাগী নেতাকর্মী যারা সামনের সারিতে থেকে আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রনী ভুমিকা পালন করেছেন তাদেরকেই বাদ দেওয়া হয়েছে। জেলা বিএনপির আহবায়ক মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন সিনিয়র ও অভিজ্ঞ নেতা। তবে তার মতো সিনিয়র লোক যদি ত্যাগী নেতাকর্মীদের মাইনাস করে কমিটির গঠন করেন তা দুঃখজনক।
বিএনপির হাইকমান্ড সূত্রে জানা যায়, জেলা বিএনপির অধীনস্থ ৫টি ইউনিট কমিটি গঠনে স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম ও দলীয় নিয়মনীতি উপেক্ষা করার কারণে জেলা বিএনপির আহবায়ক মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন ও সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকনের বিরুদ্ধে যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। এমনকি জেলা বিএনপির আহবায়ক মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন ও সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকনের ৯ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্তও করা হতে পারে বলে জানায় সূত্রটি।
গত সপ্তাহে জেলার অন্তর্গত ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ ও রূপগঞ্জ থানা এবং রূপগঞ্জের কাঞ্চন ও তারাব পৌর বিএনপি’র কমিটি অনুমোদন করা হয়। তৃণমূলের নেতাদের অনেকের দাবি সুবিধাভোগীরা কমিটিতে স্থান পেয়েছে। যাদের গত ১২-১৩ বছর বিএনপি’র আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে তেমন একটা সক্রিয় দেখা যায়নি। তাছাড়া সুবিধাভোগীরা শীর্ষ পদে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় তাদের অনুসারীরা কমিটিতে স্থান পাচ্ছে।
তবে ঘোষিত ৫টি ইউনিট কমিটির একটিতেও ছিল না মামুন মাহমুদের স্বাক্ষর। এমনকি তাকে জানানো হয়নি কমিটির বিষয়ে।
জেলা বিএনপি’র প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন মাহমুদ জানান, এটি দলের নির্দেশনা অমান্য করা ছাড়া কিছু নয়। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারমান ও মহাসচিব কমিটিতে উল্লেখ করে দিয়েছেন যে ৩ জনের স্বাক্ষরে কমিটি হবে কিন্তু তা হয়নি। দলের চেইন অব কমান্ড মানা হয়নি। আমার সঙ্গে এ ব্যাপারে বিন্দুমাত্র আলোচনা করা হয়নি, আমাকে জানানো হয়নি। এ কমিটি নিয়ম অনুযায়ী অবৈধ।
প্রসঙ্গত, গত ২০২২ সালের ১৫ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ৯ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াসউদ্দিনকে ও সদস্য সচিব করা হয়েছে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক গোলাম ফারুক খোকনকে। এতে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে মামুন মাহমুদ, মনিরুল ইসলাম রবি, শহিদুল ইসলাম টিটু, মাসুকুল ইসলাম রাজীব, লুতফর রহমান খোকা, মোশারফ হোসেন ও জুয়েল আহমেদকে। উক্ত কমিটির কাগজের নিচের দিকে উল্লেখ ছিল, আহবায়ক এবং ১ম যুগ্ম আহবায়ক ও সদস্য সচিবের যৌথ স্বাক্ষরে অধীনস্থ ইউনিট কমিটি অনুমোদিত হবে। তবে ঘোষিত ৫টি ইউনিট কমিটির একটিতেও ছিলনা মামুন মাহমুদের স্বাক্ষর। এমনকি তাকে জানানো হয়নি বলে দাবি করেছেন তিনি।