দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করার পর থেকেই নানা সমালোচনার জন্ম দিয়েছে সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা। একের পর এক অভিযোগ প্রকাশিত হতে দেখা যাচ্ছে স্থানীয় মিডিয়াতে।
শুধু তাই নয় কমিটির দায়িত্বরত দুই কর্তাবাবুর পাশাপাশি এবার অভিযোগ উঠছে সহযোগী সংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে। তবে সব অভিযোগই অর্থ কেলেঙ্কারীর সীমানায় আবদ্ধ। তবে সব কিছুই নিয়েই কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করার দাবি জানিয়েছে দলটির তৃণমূল।
এদিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ৪১ সদস্য বিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। যেখানে আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয় মহানগর বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি এ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খানকে। আর সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয় সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে।
কিন্তু কমিটি ঘোষনা করার পর পরই নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র ১৫ জন নেতা দুই নেতার নেতৃত্বকে বয়কট করে নিজেরা আলাদা ব্যানারে দলীয় কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন। এর কিছু দিন পর নাটকীয় অধ্যায়ের জন্ম দিয়ে আরেক যুগ্ম-আহবায়ক এম এইচ মামুন সাখাওয়াত ও টিপুর নেতৃত্বকে বয়কট করে সিনিয়র নেতাদের কাতারে পারিজমান।
এর পর থেকেই মহানগর বিএনপির রাজনীতিত্বে শুরু হয় নয়া সমিকরন। সদস্য সচিব টিপুর বিরুদ্ধে একের পর এক তথ্য ফাঁস হতে শুরু করে। উঠে আসে কমিটি বানিজ্যের অর্থ কেলেঙ্কারীর বিষয়। এরইধারাবাহিকতায় বের হতে শুরু করে থলের বিড়াল। সদর থানা বিএনপির কমিটিতে গুরুত্বপুর্ন পদের লোভ দেখিয়ে মহানগর যুবদল নেতা রাশেদুল ইসলাম টিটুর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন সদস্য সচিব এ্যাড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু।
এছাড়াও নেতাকর্মীদের কাছ থেকে অর্থের বিনিময় মাইকে বক্তব্য দেয়ার অভিযোগও বাদ যায়নি সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে। এই বিষয়গুলো নিয়ে যখন রাজনৈতিক মহল সরগম ঠিক তখনই আরো একটি কলরেকর্ড ভাইরাল হয়, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আব্দুস সালাম আজাদের। যেখানে টিপুর অর্থ কেলেঙ্কারীর পক্ষে কিছুটা কৌশলে সাফাইগান কেন্দ্রীয় ঐ নেতা।
শুরু হয় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির রাজনীতিতে নয়া মেরুকরন। এ যেন রাজনৈতিক মহলে মেঘ না চাইতে বৃষ্টির সামিল। এছাড়াও কর্মীদের সাথে অস্বাদ আচরনের কারনে এ্যাড. সাখাওয়াত ও টিপুর বলয় দিন দিন খাট্ হতে শুরু করে।
তাছাড়া এ্যাড. আবু আল ইউসুফ খান টিপুর দেয়া বিগত দিনের বক্তব্যে অনেকটাই পরিষ্কার নাসিক নির্বাচনে ক্ষমতাশীনদের কাছ থেকে ২ কোটি টাকা নিয়েছেন এ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খান। বর্তমান কমিটি আসার পর নতুন করে এ্যাড. সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে এই ধরনের কোন অভিযোগ না থাকলেও, পূর্বের সেই অভিযোগই তার জন্য রাজনৈতিক পারায় বড় বাধা হয়ে দাড়িয়েছে।
এদিকে এই দুই নেতার কর্মকান্ড নিয়ে যখন স্থানীয় মিডিয়াতে চলছে সমালোচনার ঝড় ঠিক সেই মূর্হুতে অর্থ কেলেঙ্কারীর অভিযোগ উঠেছে মহানগর মহিলা দলের সভানেত্রী দিলারা মাসুদ ময়নার বিরুদ্ধে।
স্থানীয় মিডিয়ার সূত্রে জানা যায়, সিলেটে বর্ন্যাতদের সহযোগীতার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের নির্দেশ মোতাবেক দিলারা মাসুদ ময়না স্থানীয় মহিলা নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে বিএনপির অনেক নেতাদের কাছ থেকে চাঁদা তুলেন। কিন্তু সেটা সিলেট বাসীর কাছে না পাঠিয়ে নিজেই হজম করে দেন। যা নিয়ে এখন রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
বিএনপির অনেক নেতাই বলছেন, যেখানে আহবায়ক দলের সাথে বেঈমানী করে ক্ষমতাশীনদের সাথে আতাঁত করে হাটেন কোটি নিয়ে। আর সদস্য সচিব নেতাদের পদ লোভ দেখিয়ে স্বপ্ন দেখেন অর্ধলাক্ষে সেখানে মহিলা দলের সভানেত্রী বর্ন্যাতদের টাকা হজম করলে। সেটার বিচার করার ক্ষমতা কতটুকু থাকে আমাদের জানা নাই। কারন যদি এর বিচার করতে হয় তাহলে প্রথমে ২ কোটি টাকার হিসেব নিতে হবে। আর সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে সেটা আইনী প্রক্রিয়ায় চলমান।
তারা আরও বলেন, তবে সব কিছুরই তদন্তের জন্য ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে মাঠ পর্যায়ে প্রতিনিধি পাঠিয়ে তদন্তের আহবান জানিয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।