দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: ফতুল্লা থানাধীন দেওভোগ বাশমুলি এলাকা থেকে তুলে নিয়ে কাশিপুর ইউনিয়ন ৭ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি মো.আফজালকে রগ কেটে হত্যাকান্ডের ঘটনার একমাস পেরিয়ে গেলেও প্রধান আসামী সন্ত্রাসী রাজু প্রধানসহ অন্যান্য আসামীদের এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি ফতুল্লা থানা পুলিশ।
হত্যাকান্ডে জড়িতদেরকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার না করার ফলে নিহতের পরিবারসহ পুরো এলাকার সাধারন মানুষের মাঝে পুলিশের রহস্যজনক ভুমিকা পালন নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। গত ৬ এপ্রিল প্রকাশ্যে রাস্তা থেকে উঠেয়ে নিয়ে নির্মমভাবে আফজালকে হত্যা করে রাজু প্রধানসহ তার সঙ্গীয়রা।
এ ঘটনায় ২২ জনকে আসামী করে মামলা করেছে নিহতের বাবা এবাদুল প্রধান। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে প্রধান আসামী রাজু প্রধানের বাবা মামলায় এজাহারনামীয় আসামী রিয়াজ প্রধান ও তার পায়েল প্রধানকে অঅটক করে পুলিশে দেয় নিহতের স্বজন এবং স্থানীয়রা। পওে র্যাবের অভিযানে কাউসার মুন্সিকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।
তবে মামলায় অজ্ঞাত দুইজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় থানা পুলিশ কিন্তু নিহতের স্বজনদের দাবী উক্ত দুইজনকে আমরা চিনিনা। পুলিশ কেনইবা তাদেরকে আটক করে এ মামলার আসামী দেখিয়েছে তাও আমাদের বোধগম্য নয়।
আফজাল হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের বাবা এবাদুল হোসেন প্রধান বাদি হয়ে ফতুলøা মডেল থানায় একটি মামলা করেছে। এতে ১৬ জনের নাম উলেøখ্য করা হয়। আরও ৫-৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, মামলায় গ্রেফতারকৃত রিয়াজ প্রধানের তিন ছেলে রাজু প্রধান,সাজু প্রধান ও পায়েল প্রধান তিনজনই এলাকায় দূর্ধর্ষ অপরাধী হিসেবে পরিচিত। পিতা রিয়াজ প্রধানের আস্কারায় অনেকটাই ভয়ংকর হিসেবে এলাকায় আবির্ভুত হয়ে তিন সন্তান। এর সাথে রয়েছে রিয়াজ প্রধানের ছোটবোনের ছেলে সোলেয়মান হোসেন ওরফে সায়মন। আর রাজু প্রধানের অপরাধ সা¤্রাজ্য চালাতে রয়েছে রাসেল ওরফে বিয়াই¯Íা রাসেল, রাশেদ, রাশু, হিটলার, ভোমড়া রাসেল, কাউসার মুন্সি, সালাউদ্দিন,সফিকুল ইসলাম প্রধান, শামীম এবং আপন চাচা সফিউল্লাহ সফিসহ প্রায় ২০/২৫ জনের একটি চক্র।
যে চক্রটির মুল কাজই ছিলো বিভিন্ন বড় বড় অপরাধ সংঘটিত করে এবং স্থানীয়দেরকে ভীতি প্রদর্শন করে চাদাঁবাজি,মাদক,জমি দখল,চুরি,ছিনতাই, দেহ-ব্যবসাসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ করা। আর ওদের কৃত অপরাধের প্রতিবাদ করলেই প্রকাশ্যে কিংবা রাতের আধারে চালাতো নির্যাতনের ষ্টিমরোলার।
নিহতের স্বজনদের দাবী, আফজাল হত্যাকান্ড একমাস পেরিয়ে গেলো অথচ থানা পুলিশ এখনও পর্যন্ত প্রধান আসামী রাজু প্রধানসহ অন্যান্য আসামীদেরকে গ্রেফতার করতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। তবে গুঞ্জন উঠেছে যে, হত্যাকান্ডে জড়িত মামলা ২নং আসামী সোলেয়মান হোসেন ওরফে সায়মন নাকি বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন। থানা পুলিশের গাফলতির কারনেই এ মামলার আসামীরা এখনও শহর ও শহরতলীতে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
তারা আরও বলেন, আসামীদের স্বজনদের ব্যবহৃত মুঠোফোনগুলোও ট্রাকিং করে আসামীরা কোথায় অবস্থান করছে তাও করতে পারেনি মামলার দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সান্তনা স্বরুপ একটি বাক্য উচ্চারন করে বলেন,অচিরেই আসামীদেরকে গ্রেফতার করা হবে। কিন্তু কবে নাগাদ করবে তার কোন সদুত্তর দেননা তিনি। এদিকে মামলার আসামীদের চিহিৃত করতে এবং গ্রেফতারের সুবিধার্থে শহর ও শহরতলীতে যে পোষ্টার সাটানো হয়েছিলো তাও কালি লেপন এবং ছিড়ে ফেলেছে রাজু প্রধানের সহযোগিরা।
তার সহযোগিরা এখন এলাকায় প্রবেশ করে আগের মতই চুরি-ছিনতাই শুরু করেছে কিন্তু স্থানীয়রা কিছুই বলতে সাহস পাচ্ছেনা। তবে নিহতের বাবা এবাদুল প্রধান বলেন, একটি পত্রিকায় হত্যাকান্ডের শিকার আমার ছেলে আফজালকে নিয়ে বিভ্রান্তির সংবাদ প্রকাশ করেছে যা আদৌ কাম্য নয়। মামলার মোটিভ ভিন্নভাতে প্রবাহিত করতে আসামীপÿের লোকজন টাকার বিনিময়ে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করিয়ে প্রকৃত সত্যকে আড়াল করে আসামীদেরকে রÿার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন। তার দাবী পুলিশের নিরবতা আমাদের পরিবারকে হুমকীর মুখে ফেলছে।
এক মাস পেরিয়ে গেলেও আফজাল হত্যা মামলার আসামীরা প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং প্রধান আসামী সহ অন্যান্য আসামী গ্র্রেফতারে পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক ? এ প্রশ্নের জবাবে মামলার দায়িত্ব প্রাপ্ত ফতুলøা থানার উপ পরিদর্শক হুমায়ন জানান,আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এটা সত্যি না। আসামীদের গ্রেফতারে অবহেলা করার কোন কারনই নেই। আপনেরা তো জানেনই হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতার করলে ক্রেডিট আমারই হবে। আজ যদি আসামী গ্রেফতার করি আগামীকাল পত্রিকায় আসবে এতে আমারই নাম হবে যে অমুক থানার পুলিশ হত্যা মামলার আসামী গ্রেফতার করছে।
তিনি আরো বলেন, হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতারে আমরা বিন্দু পরিমান ত্রুটি দিচ্ছি না। শুধু আমরা না এই মামলা নিয়ে ডিবি,র্যাব সবাই কাজ করছে। আসামীরা তাদের ব্যবহৃত পুরান মুঠোফোন ব্যবহার করছে না শুধু মাত্র ইমু বা ওয়াটসএপ ব্যবহার করছে। তদন্তের খাতিরে আমরা অনেক কিছুই বলতে পারছি না। তবে রাজু প্রধানের ডান হাত অর্থাৎ সহযোগিকে আমরা গ্রেফতার করেছি তার রিমান্ড চাওয়া হয়েছে তারপর তার থেকে আমরা বি¯Íারিত জানতে পারবো। এছাড়াও আমরা এই মামলার ৫জন আসামীকে গ্রেফতার করেছি।
সায়মন বিদেশে পাড়ি জমানোর গুঞ্জনের বিষয়ে এস আই হুমায়ন বলেন,বিদেশের যাবার এখন প্রশ্নই আসে না। কারন এখন যেকোন মামলায় অনলাইনে নিবন্ধন হয়। দেশের যেকোন প্রান্তেই মামলা হোক না কেন এয়ারপোর্টে গেলে নাম দিয়ে সার্চ দিলে নাম চলে আসবে। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি আফজাল হত্যা মামলার প্রধান আসামী সহ অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে।
স্থানীয়রা জানান,প্রায় একমাস অতিবাহিত হলেও এখনও পর্যন্ত কেনইবা পুলিশ রাজু প্রধানসহ অন্যান্য আসামী গ্রেফতার করছেনা তা আমাদের কাছে বোধগম্য হচ্ছেনা। আমরা অনতিবিলম্বে আফজাল হত্যাকান্ডে জড়িত রাজু প্রধানসহ সকল আসামীদেরকে গ্রেফতার করতে জেলা পুলিশ সুপার ও র্যাব-১১’র সদয় হ¯Íÿেপ কামনা করছি।