দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান (বীর উত্তম) এর ৪২তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির আয়োজনে দোয়া মিলাদ মাহফিল ও দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।
বুধবার ৩১ মে বেলা ১১টায় নারায়ণগঞ্জ সদর থানা ১১নং ওয়ার্ডের কিলøাপুরে অনুষ্ঠিত হয়।
নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির আহবায়ক ও মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য হাজী মোঃ ফারুক হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন, বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও মহানগর বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক মোঃ আতাউর রহমান মুকুল।
প্রধান বক্তা ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও যুগ্ম আহবায়ক আব্দুস সবুর খান সেন্টু, বিশেষ অতিথি ছিলেন, মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ফখরুল ইসলাম মজনু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক ও নাসিক ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা, বন্দর থানা বিএনপি আহবায়ক ও সাবেক কাউন্সিরর হান্নান সরকার, অ্যাডভোকেট শরিফুল ইসলাম শিপলু। অনুষ্ঠান সঞ্চালয়না করেন নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সদস্য সচিব মোঃ আওলাদ হোসেন।
কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা বলেন, যে গণতন্ত্র জন্য জীবন বাজি রেখে সাধারণ মানুষ ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করেছে। সেই মুক্তিযোদ্ধারে স্বাধীন বাংলাদেশ গণতন্ত্র ফিরে আনতে বর্তমানে বিএনপি সরকারে বিকল্প নেই। মানুষ এখন এই জালিম সরকারের পতনের অপেÿায় রয়েছে। বিএনপিকে শক্তিশালী করার জন্য ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া কোন নেই। শহীদ জিয়াউর রহমানের অবদানের কথা বলে শেষ হবে না। তার মধ্যে যোগ্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ আর হবে না। শহীদ জিয়া রাষ্ট্রের সেনাবাহিনী ও রাষ্ট্র প্রধান থাকাবস্থায় মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করে গেছেন।
তিনি রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব পালনে আরো সময় পেলে, এই দেশ আরো উন্নত আরো বহুত আগে। বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলে বাংলাদেশের পরিচিতি ছিলো ইমার্জিং টাইগার। সেজন্যই আওয়ামীলীগ জিয়া পরিবারকে ভয় পায়। আমাদের সবাইকে শহীদ জিয়া ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার স্বপ্ন পূরণে কাজ করতে হবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে। সেজন্য সরকারের পদত্যাগ এখন সময়ের দাবি।
তারা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। দেশকে ধংসের শেষ পর্যায়ে নিয়ে গেছে। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে।
আব্দুস সবুর খান সেন্টু বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জিয়া পরিবারকে নিয়ে ভয় পায় বলেই নতুন প্রজন্মকে মিথ্যা ইতিহাস শেখাচ্ছে। কিন্তু এটাই বা¯Íবতা যে, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস লেখা সম্ভব নয়। দেশের সার্বিক উন্নয়নে জিয়াউর রহমানের অনস্বীকার্য অবদান রয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতারা যখন দেশ থেকে পালিয়েছিলেন তখন কারো নির্দেশ ছাড়াই তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান ‘উই রিভোল্ট‘ বলে বিদ্রোহ করেন। তিনি তার অধিনায়ক জেনারেল জানজুয়াকে গ্রেফতার ও হত্যার মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা করে নিজে যুদ্ধ করেন।
এভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা করেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তিনি ছাড়া এ দাবি কেউ করতে পারবে না। অথচ নতুন প্রজন্মকে মিথ্যা ইতিহাস শেখাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার। শহীদ জিয়া তার শাসনামলে বাংলাদেশের সংবিধানের সংশোধন করে ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে ‘বিসমিলøাহির রাহমানির রাহিম’ সংযোজন করেন। ইনশাআলøাহ এটা কেউ পরিবর্তন করতে পারবে না। তিনি সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা বিষয়টির পরিবর্তন করেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সংবিধানের সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি বাতিল করে মুক্তবাজার তথা অংশগ্রহণমূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা চালু করেছেন।
আতাউর রহমান মুকুল বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সবচেয়ে বড় অবদান ২টি জায়গায়। একটা হলো বাংলাদের স্বাধীনতা ঘোষণা করা। রাজনৈতিক নেতৃত্ব একেবারে শূন্য হয়ে গিয়েছিল, অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল। হতাশা অবস্থা ছিল। সেই সময়ে তিনি ঘোষণা দিয়ে পুরো জাতিকে একটা স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। এটা একটা দিক। আরেকটা দিক হচ্ছে রাজনৈতি সংস্কার। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থায় নিয়ে আসা। সম¯Í পত্রিকা খুলে দেয়া। মানুষের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।
মুক্ত চিন্তা করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। আরেক দিক অর্থনৈতিক দিক। তিনি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছিলেন। সেটা তাঁর পক্ষে করা সম্ভব হয়েছিল কারণ তিনি মানুষটাই ছিলেন বৈপ্লবিক। তাঁর পুরো জীবনটাই বৈপ্লবিক। তিনি সব কিছুতে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছেন। রাষ্ট্র পরিচালনায় তিনি নিজে আসেন নাই। তিনি ক্ষমতায় আসেননি। এখানে একটা বিপ্লব হয়েছে, সিপাহী-জনতার বিপ্লব হয়েছে। ৭ নভেম্বব মানুষ বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে তাঁকে ক্ষমতায় নিয়ে এসেছে।
জাতির ক্রান্তিকালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এক ঐতিহাসিক যুগান্তকারী দায়িত্ব পালন করেন। দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য নেতৃত্বহীন জাতির দিশারী হয়ে শহীদ জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণায় মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হয় এবং তিনি যুদ্ধে অসীম বীরত্বের পরিচয় দিয়েছেন। বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের কারণে বাংলাদেশ আজ গণতন্ত্র হারিয়ে গেছে। সেই গণতন্ত্র ফিরে আনতে বাংলাদেশে বিএনপি সরকার দরকার।