দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: ফতুল্লা মডেল থানায় গত মে মাসে প্রায় ৭২টি মামলা হয়েছে। আর বিভিন্ন মামলায় ১১২ জনকে গ্রেফতার এবং প্রায় সাড়ে ৩৯ লাখ টাকার মাদক উদ্ধার করা হয়েছে।
তবে মাদক অধ্যুষিত ফতুল্লা মডেল থানায় এত কম পরিমানে মাদক উদ্ধার এবং আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন থানাধীন এলাকায় বসবাসকারীরা।।
ফতুল্লা মডেল থানা সুত্রে জানা যায়, মে মাসের ৩১ দিনে থানা পুলিশ সাড়ে ৯৬ গ্রাম হেরোইন,৮১৪২ পিস ইয়াবা,২১ কেজি ২শ গ্রাম গাজাঁ এবং ২০ বোতল ফেন্সিডিল এবং নগদ ১৫ হাজার ৬শত টাকা উদ্ধার করে।
তবে থানাধীন এলাকায় অভিযান চালিয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ, র্যাব এবং কাউন্টার টেরিজম কি পরিমানে মাদক উদ্ধার করে থানায় হস্তান্তর করেছে তার কোন বিবরন জানায়নি থানা পুলিশ। থানায় গত এক মাসে ৭২টি মামলার মধ্যে মাদক মামলা রয়েছে ৩১টি, হত্যা মামলা ২টি এবং অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে ৮টি।
৩১ টি মাদক মামলার মধ্যে মাত্র ৭টি হয়েছে থানায় আর বাকীগুলো জেলা গোয়েন্দা পুলিশ, র্যাব এবং কাউন্টার টেরিজম এর।
তবে এপ্রিল মাসে ফতুল্লা মডেল থানাধীন এলাকায় আলোচিত আফজাল হত্যা মামলার প্রধান আসামী রাজু প্রধানকে র্যাবের একটি চৌকস টিম মুন্সিগঞ্জ থেকে আটক করে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
ফতুল্লা মডেল থানাধীন এলাকায় বসবাসকারী অনেক বাসিন্দা বলেন, ফতুল্লা থানা এলাকাটি একটি শিল্পাঞ্চল এবং ঘনবসতিপুর্ন এলাকা।
এখানে দেশের বিভিন্ন জেলার সাধারন মানুষগুলো গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন কলকারখানায় কাজ করার সুবাদে ঘনবসতিটা একটু বেশী হওয়ায় পুরো থাকা এলাকাটি এখন মাদক ও বিভিন্ন অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে রুপান্তরিত হয়ে পড়েছে।
প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করলেও পুলিশের ভুমিকা যেন রহস্যজনক আবার হত্যাকোন্ডের মত ঘটনা ঘটলে থানায় একটি মামলা নেয়া ছাড়া আর কোন কিছুই করছেনা পুলিশ। বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় কিশোরগ্যাং-মাদক-সন্ত্রাস এর মত বিভিন্ন অপরাধ ঘটলেও পুলিশের নিরব ভুমিকায় ভাবিয়ে তুলেছে অভিভাবকসহ আপমর জনগনকে।
তারা আরও বলেন,যেখানে হাত বাড়ালেই মাদকের ছড়াছড়ি সেখানে যৎসামান্য মাদক উদ্ধার যেন আমাদের মুখে হাসি ফুটানোর খোরাকের মতই। আবুল নামে মাসদাইরের এক বাসিন্দা বলেন,এক সময়ে ফতুল্লা মডেল থানায় প্রতি মাসে ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠিত হতো।
সেখানে গিয়ে আমাদের এলাকার সমস্যাগুলো পুলিশের সামনে উপস্থাপন করা হলে পরবর্তীতে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতো। এখন আর ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠিত হয়না তাই এলাকাতে মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধ এখন অনেকটাই ওপেন সিক্রেট। থানায় গিয়ে অভিযোগ করকে সাহস পাইনা। তাই পরিবার-পরিজন নিয়ে কোনমতে দিন-যাপন করছি।
মাসদাইর গভঃ স্কুলের পাশের এক বাসিন্দা বলেন, থানা এলাকার আইন-শৃংখলা আগের মত নেই। আমরা যেখানে বসবাস করছি এখানে সন্ধ্যা নামলেই শুরু হয় ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ। স্কুলের সামনেই রয়েছে একটি কমিউনিটি পুলিশের কার্যালয়। এটা কবে নাগাদ খোলা হয়েছিলো তা বলতে পারছিনা। তবে পুলিশী টহল ব্যবস্থা জোরদার এবং প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থাগুলোর পুনরায় চালু করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এগুলো দ্রুত চালু না করা হলে আগামীতে ফতুল্লা এলাকার আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি আরো অবনতি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
ফতুল্লা থানাধীন এলাকায় বসবাসকারীদের দাবী, আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির উন্নয়নে পুলিশের আরো কঠোর ভুমিকা পালন করা উচিত। বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় মাদক-সন্ত্রাস-ইভটিজিংসহ নানাবিধ অপরাধ রোধে থানার অফিসার ইনচার্জসহ জেলা পুলিশ সুপারের সদস্য হস্তক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয়রা।