দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর উপজেলার আল আমিন নগর এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী,নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সদস্য লুৎফর রহমানের নিকট ২০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে মারধর করে পাঁচ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান বন্দর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান জানান তথাকথিত যুবলীগ নেতা নামধারী খান মাসুদের উপস্থিতিতে তার পালিত সন্ত্রাসীরা আমাকে বন্দর ঘাটে পেয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায় এবং ২০ লাখ টাকা চাঁদা না দিলে প্রাণে মেরে লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে।
শুধু তাই নয় তার সাথে থাকা ব্যবসায়ের পাঁচ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে বন্দর থানায় একটা লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
মোঃ লুৎফর রহমান (৪২), পিতা- মৃত শহিদ উল্লাহ, সাং- আমিন আবাসিক এলাকা, থানা- বন্দর, জেলা- নারায়ণগঞ্জ হাজির হয়ে এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করিতেছি যে, বিবাদী ১। খান মাসুদ (৪১), পিতা- শামসুদ্দিন খান, সাং- বন্দর খানবাড়ি, ২। ডালিম হাসান (৪০), পিতা-মোবারক হোসেন, সাং- ছালেহনগর পশ্চিমপাড়া, ৩। মোঃ পাভেল (৩২), পিতা- অজ্ঞাত, সাং- পূর্ব হাজীপুর, ৪।
গোলাম সারোয়ার সবুজ (৪২), পিতা- মৃত গোলাম হোসেন সাহেব, সাং- র্যালী আবাসিক এলাকা, ৫। শ্রাবণ আলম সুজন (৪৫), পিতা- খলিলুর রহমান, সাং- আমিন আবাসিক এলাকা, অজ্ঞাত আরো ১০/১২ জন সর্ব থানা- বন্দর, সর্ব জেলা- নারায়ণগঞ্জ। আমি প্রায় ২০ বছর যাবৎ নারায়ণগঞ্জ সদর থানাধীন ১নং রেল গেট এ থান কাপড়ের ব্যবসা করে আসছি। আমি গত ১ বছর পূর্বে আমার বাড়ির সামনে ০৬ শতাংশ এর জায়গা ক্রয় করি।
জমি ক্রয় করার পর থেকেই ১নং বিবাদী আমার কাছ থেকে প্রায় ২০,০০,০০০/- (বিশ লক্ষ টাকা) চাঁদা চেয়ে আসছিল। গত ১৬/০৮/২০১৩ তারিখ আনুমানিক সন্ধা ৭.০০ ঘটিকার সময় বন্দর থানাধীন বন্দর ঘাট সংলগ্ন স্ট্যান্ড এর মধ্যে আমার পথরোধ করে উক্ত বিবাদীরা পুনরায় আমার কাছ থেকে ২০,০০,০০০/- টাকা দাবি করে এবং আমাকে এই বলে হুমকি দেয় যে আমি যদি আজ ইং ১৭/০৮/২০২৩ তারিখ এর মধ্যে বিবাদীদেরকে ২০,০০,০০০/- টাকা না দেই তাহলে আমাকে হত্যা করে আমার লাশ শীতলক্ষা নদীতে ফেলে দিবে। এরই সূত্র ধরে ১৭/০৮/২০২৩ তারিখ আনুমানিক রাত ০৮.৪৫ ঘটিকার সময় আমি বন্দর থানাধীন বন্দর ঘাট সংলগ্ন অটোস্ট্যান্ড দিয়ে আসার সময় উক্ত বিবাদীরা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র ধারালো রামদা, পিস্তল নিয়ে আমার পথরোধ করে।
অতঃপর বিবাদীরা আমার কাছ থেকে ২০,০০,০০০/- টাকা চাঁদা দাবি করে। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে উক্ত বিবাদীরা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। আমি এর প্রতিবাদ করলে ২নং বিবাদী আমাকে পিস্তল এর উল্টো পাশ দিয়ে আমার মুখের মধ্যে সজোরে আঘাত করে আমার মুখে নীলাফুলা জখম করে। ৩নং এবং ৪নং বিবাদী আমাকে মাটিতে ফেলে এলোপাথারীভাবে আমার শরীরের বিভিন্নস্থানে কিল-ঘুষি এবং লাথি মারতে থাকে।
৫নং বিবাদী আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার পেটের মধ্যে ধারালো ছুরি আঘাত করার চেষ্টা করলে আমার ডাকচিৎকারে এলাকার লোকজন এগিয়ে আসলে উক্ত বিবাদীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
পুরো ঘটনাটিই ১নং বিবাদীর উপস্থিতিতে এবং তার আদেশে সংগঠিত হয়েছে। উক্ত বিবাদীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় আমার সাথে থাকা ব্যবসার টাকা বাবদ প্রায় ৫,০০,০০০/- টাকা আমার কাছ থেকে জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে যায়। উক্ত বিবাদীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পূর্বে আমাকে এই বলে হুমকি দেয় যে আমি যদি তাদের দাবিকৃত চাঁদা না দেই তাহলে আমার এবং আমার পরিবারের লোকজনের সদস্যদেরকে পথেঘাটে একা পেলে অপহরণ করে হত্যা করবে। বিবাদীরা পুনরায় যেকোনো সময় আমার এবং আমার পরিবারের লোকজনের ক্ষতিসাধন করিতে পারে আশংকা ব্যক্ত করেছেন ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান।
এলাকাবাসী জানান, যুবলীগ নেতা নামধারী খান মাসুদের নেতৃত্বে তার সকল অপকর্মের হোতা ডালিম,পাভেল,সবুজ ও সুজন বন্দর ঘাট সংলগ্ন বাজার, অটো ও সিএনজি ষ্ট্যান্ড হতে জোরপূর্বক প্রতিদিন অর্ধ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করে থাকে।
এছাড়াও বাড়িঘর নির্মাণ, জমি ক্রয়- বিক্রয়,শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মান করতে হলে বাধ্যতামুলক চাঁদা দিতে হয় খান মাসুদ বাহিনীকে। না দিলে তাদের উপর চালানো হয় নির্যাতনের ষ্টীম রোলার।
ভূক্তভোগী ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান, খান মাসুদ বাহিনী ব্যবস্থা গ্রহনে স্থানীয় এমপি সেলিম ওসমান ও জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।