দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ বিএনপির লাগাতার অগ্নি সন্ত্রাসী ও নৈরাজ্যবাদ অবরোধের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জে মাঠে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির ৪ এমপিকে কাজ করতে দেখা গেলেও নিরব ভূমিকা পালন করছে সেলিম ওসমান।
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষের পর মহাসমাবেশ থেকে ২৯ অক্টোবর সকাল -সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয় বিএনপি।তারপর লাগাতার ৩১ অক্টোবর, ১-২ নভেম্বর এবং ৫ ও ৬ নভেম্বর অবরোধ ডাকে বিএনপি।এতে দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়ক অবরোধ করে, গাড়ী ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে এবং পুলিশ বিএনপির সংঘর্ষের মধ্যে চলে এ অবরোধ। বিএনপি-জামাত সন্ত্রাসী কর্মকান্ড রুখে দিতে একই সাথে মাঠে নামে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি।
সড়ক অবরোধ, গাড়ী ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ রোধে সকাল থেকে রাত অবধি মাঠে কাজ করে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠন।সেই সাথে নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারও সরব হয়েছে বিএনপির বিরুদ্ধে । আড়াইহাজার,রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ সদর আওয়ামী লীগের নৌকার ও সোনারগাঁ জাতীয় পার্টির সাংসদ মাঠে নামলেও দেখা মেলেনি বন্দরের এমপিকে।ওসমান পরিবারের শামীম ওসমান, আজমেরী ওসমান ও অয়ন ওসমানকেও মাঠে দেখা গেলেও ছিলেন না সেলিম ওসমান ও তার সমর্থকরা। এনিয়েও উঠেছে গুঞ্জন। সেলিম ওসমান মাঠে না থাকলেও তার সমর্থিত জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের কোন লোককেই মাঠে নামতে দেখা যায়নি।
এনিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, আওয়ামী লীগের সহযোগি সংগঠন জাতীয় পার্টি। নারায়ণগঞ্জে ৫ টি আসনের মধ্যে ৩টি আওয়ামী লীগের নৌকার ও ২ টি জাতীয় পার্টির লাঙ্গলের। দলের এই মুহূর্তে এবং দেশের শোচনীয় অবস্থায় আওয়ামী লীগের ৩ এমপি মাঠে নামার পাশাপাশি জাতীয় পার্টির সোনারগাঁ এমপি লিয়াকত হোসেন খোকাও জানান দিয়ে দিয়েছেন তিনি আওয়ামী লীগের জন্য এবং বিএনপির বিরুদ্ধে মাঠে আছেন।কিন্তু আমাদের জন্য সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হলো এই মুহূর্তে যাকে আমাদের প্রয়োজন নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের এমপি সেলিম ওসমান। তিনি মাঠে মেই। সেলিম ওসমানের প্রতিটি অনুষ্ঠানে এত পরিমান শেখ হাসিনার জয় গান গায় অথচ দলের এই মুহূর্তের বিএনপির মত সেলিম ওসমানও ইঁদুরের গর্তে ডুকে আছে। বিএনপি দেশব্যাপী অবরোধ ডাকলে বড় বড় নেতারা বা বিএনপির কর্মীরা ইঁদুরের গর্তে ডুকে আছে।সেলিম ওসমান ও তার সমর্থকরাও একইভাবে গর্তে ডুকে আছে।এরা মুখে বড় বড় বুলি আওরায় অথচ এদের কাজের সময় পাওয়া যায় না।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ এক আসন রূপগঞ্জের এমপি বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী স্বংয় নিজেই বিএনপির অবরোধের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে এবং তাদের অবরোধকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।বিএনপির অবরোধের বিরুদ্ধে মাঠে নেমে সাংবাদিকদের বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাম দস্তগীর গাজী অবরোধ ঠেকাতে তিনি বলেন,রূপগঞ্জে বিএনপির কোন অগ্নি সন্ত্রাসী কর্মকান্ড আমরা প্রশয় দিবো না।তাদেরকে আমরা কঠোর হস্তে দমন করবো। কারন নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি এখন চোরাগুপ্তা হামলা করছে। এই হামলার বিচার হবে। শেখ হাসিনার অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে আমরা আবার ক্ষমতায় যাবো।
একই সাথে বিএনপির বিরুদ্ধে মাঠে নেমে নারায়ণগঞ্জ ২ আসনের সাংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুু বলেন, বিএনপির ডাকা অবরোধকে প্রত্যাখ্যান করেছে আড়াইহাজারের জনগণ। সকাল থেকেই উপজেলার বিভিন্ন সড়ক মহাসড়কে সব ধরনের পরিবহন চলাচল করছে। এছাড়া আড়াইহাজারবাসীর জানমাল রক্ষায় সকাল থেকেই আওয়ামী লীগের শত শত নেতাকর্মীরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এমনকি সন্ধ্যা পর্যন্ত আমরা সড়কে থাকবো। কোন ধরনের নাশকতার চেষ্টা করলে তাদের কঠোর হস্তে দমন করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ ৩ আসনের সাংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা বলেন,নির্বাচন হবে যথা সময়েই হবে বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস, নৈরাজ্য সৃষ্টি নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না। আমাদের মত রাজনৈতিক দল থেকে সাধারণ মানুষ আশা করে শান্তিতে বসবাস করতে। এজন্য প্রত্যোকটা নেতাকর্মীদের সর্তক থাকার আহবান জানান তিনি।
যাকে নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগের প্রান পুরুষ বলা নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান।তিনি নিজেও স্বয়ং মাঠে নেমেছেন এবং তিনি বলেন,বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-সচিব রিজভীর মতো নেতা ৭-৮ জন লোক নিয়ে নারায়ণগঞ্জে অগ্নিসংযোগ করেন। কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা যদি এমন করেন তাহলে বুঝতে হবে রাজনীতি কোথায় গেছে। তাদের এখন জনগণ মানে না। তাদের ধ্বংসাত্মক কাজ কখনো স্বাধীনতার শক্তির সঙ্গে পারবে না। তারা পশুর চেয়ে অধম হয়ে গেছে। তা না হলে মানুষকে এভাবে কিভাবে মারে। মানুষের এমন অভিশাপ নিবেন না। এভাবে রাজনীতি হয় না।
মাঠে সেলিম ওসমানের অনুপস্থিতি নিয়েও চলছে নানা কথা। তিনি কি আবার কোনভাবে আতাত করেননি তো বিএনপির সাথে।যেহেতু সামনে নির্বাচন যদি কোনভাবে আওয়ামী লীগ দল ক্ষমতায় না আসে আর বিএনপি যেভাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিয়ে একের পর এক লাগাতার অবরোধ কর্মসূচী দিয়েই যাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারকে নাস্তানাবুদ করতে। সেই ভয়েই কি মাঠে নেই সেলিম ওসমান নাকি পরবর্তী নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের সাংসদ সেলিম ওসমানকে না দেবার আগাম কোন সংবাদে গা ডাকায়।