দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ “আত্মমর্যাদার পরিবেশ, কুষ্ঠ-কলঙ্কের হবে শেষ ” এই প্রতিপাদ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলায় নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব কুষ্ঠ দিবস ২০২৪ পালিত হয়েছে।
২৮ জানুয়ারি রবিবার সকাল ৯ টায় নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জনের আয়োজনে ও দ্যা লেপ্রসী মিশন ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় এ দিবসটি পালন করা হয়।
প্রতি বছর জানুয়ারী মাসের শেষ রবিবার বিশ্ব কুষ্ঠ দিবসটি পালিত হয়। সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও এই দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়ে আসছে। এবারের এই দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিলো “আত্মমর্যাদার পরিবেশ, কুষ্ঠ-কলঙ্কের হবে শেষ “।দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় কুষ্ঠ কর্মসূচী ও টিবিএল এন্ড এএসপি ওপি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহযোগিতায় নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে সকাল ৯ টায় বিশ্ব কুষ্ঠ দিবস উপলক্ষে একটি স্ট্যান্ড র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
পরে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভায় লেপ্রসী মিশনের সহযোগীতায় দরিদ্র ও বিকলাঙ্গ রোগীদের মাঝে শীত বস্ত্র ( কম্বল) বিতরণ করা হয়।এরপর লেপ্রসী মিশনের পক্ষ থেকে একটি অটো র্যালীর আয়োজন করা হয়, যা শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে আবার সিভিল সার্জন অফিসে এসে শেষ হয়।
দিবসটি সফল করতে নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন ডাঃ আবুল ফজল মোহম্মদ মুশিউর রহমানের নির্দেশক্রমে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এমওসিএস ডা.এ কে এম মেহেদী হাসান।এসময় তিনি দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরেন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএসএমও ডা.এফ এম নাসিরুল হক,এমওসিএস ডা.আফরোজা পলি, জুনিয়র স্বাস্থ্য অফিসার মোঃশাকির হোসেন, জেলা স্বাস্থ্য তত্বাবধায়ক স্বপন কুমার দেবনাথ, ইপি আই সুপার লুৎফর রহমান,দা লেপ্রসী মিশন ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি খোকন বাড়ৈ সহ ডিএসআই ও অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
সমাজে কুষ্টরোগ নিয়ে আজও মানুষের মাঝে একটি বিরূপ মনোভাব কাজ করে চলেছে। আর সেই বিরূপ মনোভাবকে প্রতিহত করার লক্ষ নিয়ে লেপ্রসী মিশন, নারায়নগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মাধ্যমে ৫টি উপজেলায় জনসচেতনামূলক কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। গত বছর মোট ২৮ জন নতুন কুষ্ঠ রোগী সনাক্ত হয় এবং তাদের সকলকেই চিকিৎসার আওতায় আনা হয়েছে। ১৮ জন রোগী সফল ভাবে চিকিৎসা সম্পূর্ন করে সুস্থ্য হয়েছে।
বর্তমানে চলতি বছর ২১ জন রোগী চিকিৎসাধীন আছে। সহযোগী সংগঠন দি লেপ্রসি মিশন ইন্টারন্যাশনালের পক্ষে জেলা প্রতিনিধি মিঃ খোকন বাড়ৈ বলেন যে, সরকারী ও বেসরকারি সংস্থার পাশাপাশি সকলের ঐক্য প্রচেষ্টাই পারে কুষ্ঠ রোগীদের প্রাথমিক অবস্থায় সনাক্ত করে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাঠাতে এবং বিনামূল্যে কুষ্ঠ রোগীদের নিয়মিত চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে কুষ্ঠ রোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে।
উল্লেখ্য যে, এ রোগের চিকিৎসা সকল উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বিনা মূল্যে পাওয়া যায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার ২০৩০ সালের মধ্যে তিনটি বিষয়কে জিরোতে নিয়ে আসতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে লেপ্রসী। প্রথমত কোন রোগী দেরিতে চিকিৎসার জন্য আর বিকলাঙ্গ হবেনা, দ্বিতীয়ত এই রোগ ছড়ানোর ক্ষেত্রে জিরোতে নিয়ে আসা, তৃতীয়ত সমাজে এই রোগীদের নিয়ে আর কোন বৈষম্যমূলক আচরন থাকবেনা। এই লক্ষ্যে সরকার ও লেপ্রসী মিশন নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।