দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারী সংকট চলছে। ৩১ শয্যার জনবল দিয়েই চলছে ৫০ শয্যার হাসপাতাল। প্রতিদিন হাসপাতালে আসা রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন অল্প সংখ্যক চিকিৎসক। সে কারণে হাসপাতালটিতে মিলছে না প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগীদের ছুটতে হচ্ছে জেলা ও বিভাগীয় শহরের হাসপাতালে।
জানা গেছে, ২০১০ সালের ২৫ এপ্রিল এ হাসপাতালটিকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। অথচ এখনো এ হাসপাতালে ৩১ শয্যারও জনবল নেই। অনেক চিকিৎসক, স্টাফের পদ ফাঁকা। প্রতিদিন হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন তিন শতাধিক রোগী। প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক না থাকায় প্রতিদিন রোগীর ভিড় জমে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় সেবা ছাড়াই ফিরতে হচ্ছে অনেক রোগীকে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যার হাসপাতাল হিসেবে ২১ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, ১১ জন জুনিয়র কনসালট্যান্ট থাকার কথা। তার মধ্যে ইউএইচ অ্যান্ড এফপিও, একজন আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ চিকিৎসক রয়েছেন ১৩ জন। বিশেষজ্ঞ বা জুনিয়র কনসালট্যান্ট থাকার কথা ১০ জন এবং জুনিয়র কনসালট্যান্ট রয়েছে ছয়জন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মধ্যে গাইনি, চর্ম ও যৌন, সার্জারি, অ্যানাসথেসিয়া, নাক-কান-গলা, অর্থসার্জারি চিকিৎসক রয়েছেন। মেডিসিন, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, হৃদরোগ ও চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ ফাঁকা রয়েছে।
ইসলামপুর পৌরসভার ২ নাম্বার ওয়ার্ডের বাসিন্দা সোহাগ খান লোহানি জানান, হৃদরোগ নিয়ে ইসলামপুর হাসপাতালে গেলে জানা যায়, হৃদরোগের কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নেই। রোগ নির্ণয়ের যন্ত্রপাতি থাকলেও ওই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারিনি। বাধ্য হয়ে যেতে হয়েছে জেলা সদরের সরকারি হাসপাতালে। এতে অর্থ, সময় ও ভোগান্তি বেশি পোহাতে হয়েছে।
দীর্ঘদিন থেকে হাসপাতালটিতে পদ ফাঁকা রয়েছে অফিস সহকারী তিনজন, অফিস সহায়ক চারজন, ওয়ার্ডবয় তিনজন, আয়া দুজন, দারোয়ান একজন, বাবুর্চি দুজন, ল্যাব অ্যাসিসট্যান্ট একজন, ইমার্জেন্সি বয় একজন, টিকিট ক্লার্ক একজন, হিসাব রক্ষক একজন, ফার্মাসিস্ট দুজন, ল্যাব টেকনিশিয়ান একজন, এসএ সিএমও দুজন, স্বাস্থ্য সহকারী আটজন, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক পাঁচজন, স্বাস্থ্য পরিদর্শক একজন, ওটিবয় আটজন, পরিসংখ্যান কর্মকর্তা একজন।
কথা হয় ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউ এইচ অ্যান্ড এফপিও ডা. এ এ এম আবু তাহেরের সঙ্গে। তিনি বলেন, ইসলামপুর উপজেলাটি বৃহৎ। পৌরসভাসহ ১৩টি ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত এ উপজেলার ইউনিয়নগুলো বিক্ষিপ্তভাবে ছড়ানো। উপজেলা সদর থেকে বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের দূরত্ব বেশি হওয়ায় তাদের পক্ষে প্রতিদিন হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নেওয়া কষ্টসাধ্য।
অন্যদিকে হাসপাতালে রয়েছে চিকিৎসক ও স্টাফ সংকট। তার পরও আমরা রোগীদের মানসম্পন্ন প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা প্রদানে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। অন্যদিকে চিকিৎসা সেবা সহজীকরণের জন্য বেনুয়ারচরে ১০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল প্রস্তাবিত রয়েছে এবং বেলগাছা ইউনিয়নে ২০ শয্যাবিশিষ্ট চক্ষু হাসপাতালের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।