দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) ও ইউএনডিপি সহায়তায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য ডিজিটাল স্বাস্থ্য এবং ক্ষুদ্র স্বাস্থ্য বীমা প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। বাস্তবায়িত প্রকল্পের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের লক্ষ্যে গতকাল শহরের আলী আহাম্মদ চুনকা মিলনায়তনে এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রকল্প পরিচালনক ডা. শাহ নেওয়াজের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. এ এফ এম মুশিউর রহমান, নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল বাসার, প্রকল্পের শহর সমন্বয়কারী মো. ইকবাল হোসেন, কনসাল্টটেন্ট সামসুর নাহার, আর্থ সামাজিক ও পুষ্টি এক্সপার্ট শাহনাজ বেগম। আর ও উপস্থিত ছিলেন নাসিক ১১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর অহিদুল ইসলাম ছক্কু, ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনির, ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর অসিত বরণ বিশ^াস, ৪,৫,৬ নম্বর ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর মনোয়ার বেগম, ১৬, ১৭, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর আফসানা প্রমুখ।
ডা. শাহ নেওয়াজ বলেন, এ প্রকল্পের আওতায় তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে, ১৭ টি হাসপাতাল ও ৩ টি নগর মাতৃসদনের সহায়তায় আমরা নারায়ণগঞ্জের প্রান্তিক জনগোষ্ঠির মধ্যে মোট ১৫ হাজার ৭০০ জন দরিদ্র মানুষকে স্বাস্থ্য সেবা দিয়েছি। যার মধ্যে ৭০০ জন অতি দরিদ্র এবং ১৫৪৩২ জন মহিলা। প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবাকে সহজলভ্য করা। সাধারণ জনগণের স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানো এবং অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করা। এই পরীক্ষামূলক উদ্যোগটিতে সুবিধাভোগীরা মুঠোফোনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা নিতে পেরেছেন, এছাড়া ক্ষুদ্র বীমার সাহায্যে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা পেয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের ১৮ মাসে দেখা যায়, সুবিধাভোগীর মধ্যে ৭০ শতাংশ মুঠোফোনে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েছেন। ১৫ শতাংশ মুঠোফোনে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের বহির্বিভাগ সেবা নিয়েছেন, আর অল্পসংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে স্বাস্থ্য সেবা নিয়েছেন। এসমস্ত রোগীদের সবাই তাদের খরচের একটা অংশ বীমার মাধ্যমে ফেরত পেয়েছেন। এতে করে একদিকে যেমন এরা স্বাস্থ্য সচেতন হয়েছেন অপরদিকে ক্ষুদ্র-বীমার সাহায্যে, জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের যে বিশাল একটা অংশ স্বাস্থ্য-খাতে ব্যয় হয় তা অনেকাংশে কমাতে পেরেছেন। এছাড়া তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে এই প্রকল্পের ফলে যোগাযোগ আরো অধিক সহজ এবং বেগবান হয়েছে। ডিজিটাল যুগের এই সময়ে দৈনন্দিন জীবনের প্রায় প্রতিটা কাজে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার অবশ্যম্ভাবী। স্বাস্থ্যসেবাও এর বাইরে নয়। ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবার মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নগরবাসীর একটা অংশের হাতের মুঠোয় কিছুটা হলেও নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে।’
ডা. আবুল বাসার বলেন, এ প্রকল্পের অধীনে কার্ড ব্যবহার করে অনেক রোগী আমাদের হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করেছে। প্রকল্প শেষ তবে ভবিষ্যতেরও তারা যদি কার্ড নিয়ে যান তাহলে আমাদের হাসপাতাল আলাদা সেবা দেয়ার চেষ্টা করবে।
ডা. এ এফ এম মুশিউর রহমান বলেন, প্রান্তি জনগোষ্ঠির অনেকেই দিন আনে দিন খায়। এসব মানুষ বা পরিবারের কেই যখন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পরে তখন চিকিৎসা করতে গিয়ে তারা ঋণগ্রস্থ হয়ে পরেন। ওইসব প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জন্য ডিজিটাল স্বাস্থ্য ও ক্ষুদ্র স্বাস্থ্যবীমা প্রকল্পটি অতন্ত্য ফলপ্রসু ও কার্যকরী।