দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়রকে অপসারণ করা হয়েছে। তাদের অপসারণের পর প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সোমবার স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। অপসারনকৃত মেয়রের তালিকায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা: সেলিনা হায়াত আইভীও রয়েছে।
৫ বছর নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান এবং ২০১১ সাল থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের দ্বায়িত্বে ছিলেন আইভী। মেয়রের দীর্ঘ সময়ে ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে তার অনেক কর্মকর্তাও টাকার কুমির বনে গেছেন। যাদের মধ্যে মো.আবুল হোসেন। যিনি ছিলেন সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা পরে তিনি মেয়রের পিএস হন। শহরের মীনা বাজার এলাকায় একটি ক্রয়কৃত ফ্লাটে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন তিনি।
একাধিক সুত্রে জানা যায়,আবুলের বাবা একসময়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে লুঙ্গি বিক্রি করতেন। মেয়র আইভী চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে তার পিএস পদে আসীন হন তিনি। দীর্ঘ ২০ বছরেরও বেশী সময়ে মেয়রের পাশে থেকে টাকার কুমিড় বনে গেছেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে বলেন,বন্দরের সাবদি এলাকায় আবুল হোসেন নামে-বেনামে প্রচুর জমি কিনেছেন। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের যে কয়টি বিল্ডিং নির্মান করে ফ্লাট হিসেবে বিক্রি করেছেন তার কয়েকটি বিল্ডিংয়ে নাকি ফ্লাট রয়েছে আবুলের নামে। তিনি বর্তমানে মীনা বাজার এলাকায় যে বিল্ডিংয়ে বসবাস করছেন সেটাও নাকি নিজের অর্থ্যায়নে ক্রয় করা। একজন মেয়রের পিএস এর দ্বায়িত্ব পেয়ে বেপরোয়াভাবে অনৈতিকভাবে অর্থ উপার্জনে উঠেপড়ে নেমেছিলেন এ আবুল হোসেন। তার এ অনৈতিক কাজে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছেন ১৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অসিত বরন বিশ^াস, ফুড এন্ড স্যানিটেশন অফিসার থেকে উচ্ছেদ অফিসার হিরন, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বাবু চন্দন শীলের বিয়াই এনসিসির পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র পাল,সিটি কর্পোরেশনের জমাদার ওয়াসিমগং।
উল্লেখিত কর্তাবাবুরা সিটি কর্পোরেশনের অধীনে থেকে নগরীর ফুটপাট থেকে চাদাঁ আদায়,২নং রেলগেইট এলাকায় অবৈধভাবে বন্ধন ও উৎসব কাউন্টার স্থাপন করে টাকা উত্তোলন,সিএনজি ষ্ট্যান্ড থেকে মাসিকহারে চাদাঁ উত্তোলন,চাষাড়া শহীদ মিনারের ফুসচা বিক্রেতাদের কাছ থেকেও নিয়মিতভাবে টাকা আদায় করতেন। সিটি কর্পোরেশনের অধীনে থাকা মেথরের কাছ থেকেও মাসিক ৫শত টাকা হারে অনৈতিকভাবে নিতেও দ্বিধাবোধ করেননি তারা। এমনকি কোন নিন্মস্তরের ষ্টাফরা যদি কাজে একটু ভুল করতো তাদের কাছ থেকেও টাকা নেয়া হতো। এছাড়াও সনাতন ধর্মের মুর্তি ভাঙ্গারও অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র অন্যকে ফাসাঁনোর জন্য।
সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন পদে চাকুরীরত অনেক ষ্টাফরা এতদিন এ আবুল ও শ্যামলগংদের কাছে জিম্মি ছিলেন বলে জানা যায়। পান থেকে চুন খসলেই ঐসকল ষ্টাফদের বিরুদ্ধে শুরু করতেন অনৈতিকভাবে টাকা হাতিয়ে নেয়ার কৌশল।
প্রায় বিশ হাজার টাকা বেতন পেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করার পাশাপাশি কিভাবে প্রচুর অর্থ সম্পদের মালিক হলেন আবুল হোসেন তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন বিভিন্ন কর্মচারীরা। দূর্নীতি করা ছাড়া কোনভাবে এত বিত্তভৈবরের মালিক হওয়া সম্ভব নয়ও বলে জানান তারা। তারা আবুল হোসেন, শ্যামল পাল,হিরনসহ সঙ্গীয়দের অবৈধভাবে পন্থায় উপার্জিত টাকার হিসাব প্রদর্শনেরও দাবী জানান।
অনতিবিলম্বে আবুল হোসেনসহ তার সঙ্গীয়দের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয়ের প্রতি অনুরোধ জানান।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কাম মেয়রের পিএস আবুল হোসেনের ব্যবহৃত মুঠোফোনে ( ০১৭৫৬৫৪৮১@@ ) ফোন করা হলে অন্য একব্যক্তি রিসিভ করে স্যার একটু ব্যস্ত আছেন পরে ফোন করা হবে বলে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।