দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে গুলিতে আবুল হোসেন মিজি নামের একজনকে নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৮০ জনের নামে মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে ২৫০ জনকে।
বুধবার (২১ আগস্ট) বিকেলে নিহত আবুল হোসেন মিজির মা সাহিদা বেগম বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় আসামির তালিকায় রয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান।
ফতুল্লা থানার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আজম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ১৯ জুলাই সাইনবোর্ড সংঘর্ষে আবুল হোসেন মিজি নামের একজন নিহতের ঘটনায় তার মা সাহিদা বেগম বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় ৮০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় ২০০-২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ১৯ জুলাই আবুল হোসেন ঢাকার উদ্দেশ্যে নারায়ণগঞ্জ থেকে রওয়ানা হয়ে অটোরিকশাযোগে সাইনবোর্ড আসেন। এসময় ছাত্র-জনতার রাস্তায় অবস্থান করায় অটো থেকে নেমে পড়েন। এসময় সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের নির্দেশে আওয়ামী লীগ, যুবলীগের সন্ত্রাসীরা সাইনবোর্ডে জড়ো হয়ে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি করতে থাকে।
শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমীরে ওসমান তার হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে গুলি করলে আবুল হোসেন মিজির পেটে গুলিবিদ্ধ হন। এসময় উপস্থিত সাংবাদিক মনির হোসেন, জুয়েল, আল আমিন ও ইসলামসহ কয়েকজন মিলে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে মারা যান।
মামলায় অন্য আসামিরা হলেন প্রয়াত এমপি নাসিম ওসমানের ছেলে আজমেরী ওসমান, শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসনাত মো. শহিদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক শাহ নিজাম, যুবলীগ নেতা জানে আলম বিপ্লব, বন্দরের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির মৃধা, সামসুজ্জামান, কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আইয়ুব আলী, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি নাজমুল আলম সজল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফায়েত আলম সানি, দেওভোগ এলাকার বাসিন্দা ছানাউল্লাহ, জেলা আওয়ামী লীগের নেতা নাসির উদ্দিন ওরফে টুন্ডা নাসির,
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও শামীম ওসমানের চাচাতো শ্যালক এহসানুল হক নিপু, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, শামীম ওসমানের শ্যালক নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহাম্মেদ টিটু, নাসিকের ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান মুন্না, বান্টি, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রাফেল, মাসদাইরের বাসিন্দা শাহ জালাল, নাসিকের ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ মতিউর রহমান মতি, ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন, গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজর আলী,
বন্দরের ছাত্রলীগ নেতা খান মাসুদ, দেওভোগ এলাকার বাসিন্দা পাবেল, তামাকপট্টি এলাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী জাতীয় পার্টির নেতা বিটু, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টি নেতা দেলোয়ার প্রধান, মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সালাম, আমলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা কোরবান, মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী রেজা উজ্জ্বল, কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফউল্লাহ বাদল,
বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী, বক্তাবলী পূর্ব গোপালনগর এলাকার বাসিন্দা মৃত আফসার আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম, আলীরটেক ইউনিয়নের বাসিন্দা শাহীন রাজু, এনায়েতনগরের বাসিন্দা আব্দুল জলিল, আলিম শেখ, আজমত আলী, আমলপাড়া এলাকার মো. রিফাত ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দুলাল প্রধানসহ ৮০ জন।