দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে বন্দর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেন বন্দর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আবু বকর সিদ্দিক।
এর আগে গতকাল শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু নিজেই বাদী হয়ে থানায় এই মামলা দায়ের করেন।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয় বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা ও বন্দর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুলকে।
এ ছাড়া মামলায় নাসিকের ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি আবুল কাউসার আশা, বিএনপি সমর্থক সৌরভ, রাজিব, মোস্তাক আহমেদসহ ৫৩ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
এর আগে গত শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বন্দর উপজেলার নবীগঞ্জ তিন রাস্তার মোড়ে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। টিপুকে রাস্তায় ফেলে লাঠিসোটা বাঁশ দিয়ে মারধর করা হয়। টিপুর শরীরের পাঞ্জাবী ছিঁড়ে ফেলা হয়।
তাকে রক্ষা করতে গিয়ে আহত হন মাসুদ রানা ও স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা খায়রুল কবির মুন্না। তাদের মধ্যে মুন্না রক্তাক্ত জখম হন। হামলার সময়কার একটি ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ৬ সেপ্টেম্বর বন্দরের নবীগঞ্জ এলাকায় তিন রাস্তার মোড়ে আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে হত্যার জন্য আবুল কাউছার আশা ও আতাউর রহমান মুকুলের নেতৃত্বে বিবাদীরা দেশি-বিদেশি অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে।
এ সময় আশা চাপাতি দিয়ে টিপুর ঘাড়ে কোপ দেন। এর ফলে তার ঘাড়ে রক্তাক্ত জখম হয়। পরে আশা তার পায়জামার পকেটে থাকা ৬০ হাজার টাকা নিয়ে যান। আর মুকুল তার হাতে থাকা হকিস্টিক দিয়ে মাথায় বাড়ি দিতে গেলে তা ঠেকাতে গিয়ে টিপুর বাম হাতের নিচ অংশ ভেঙে যায়। এ সময় মুকুলও তার পাঞ্জাবীর পকেটে থাকা ৮ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে যায়।
টিপু মামলায় আরো উল্লেখ করেন, বাকি আসামিরাও আমিসহ আমার নেতাকর্মীদের বাঁশ দিয়ে মারধর করে। পরে নেতাকর্মীরা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় খানপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলে তিনি নিরাপত্তাজনিত কারণে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের হেলথ রিসোর্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এর আগে টিপুর ওপর হামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিক বক্তব্যে মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ‘মুকুল, আশা, মোস্তাক, সৌরভ ও রাজীবসহ দেড় থেকে দুই শ লোক এই হামলা করেছে। দল ১৫ ধরে ক্ষমতায় ছিল না। এই ১৫ বছর ধরে তারা আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির দালালি করেছে। এখন দালালি করতে পারে না। তাই তারা আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির লোক নিয়ে হামলা চালিয়েছে। তাদের হামলায় আমাদের প্রায় ২৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আমাদের সদস্য সচিব মৃত্যুশয্যায় রয়েছে।’
এদিকে টিপুর ওপর হামলার ঘটনায় গত ৭ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ শহরে পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপির দুটি পক্ষ। সকালে কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশার নেতৃত্বে ও বিকেলে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।