দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ব্যবসায়ী সাব্বীর আলম খন্দকার হত্যা মামলায় জাকির খানের বিরুদ্ধে আদালতে দুই জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন।
রবিববার(৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহন করেন বিচারক।
জাকির খান অসুস্থ্য ও বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তার অনুপস্থিতিতেই সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহন করে আদালত।এসময় নাসির উদ্দিন মোল্লা ও আলী আহমদ রতন নামে দুই জন সাক্ষী প্রদান করেন।
সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহন শেষে জাকির খানের পক্ষের আইনজীবি রাজিব মন্ডল বলেন, আজকে দুইজন সাক্ষী দিয়েছে।পিডব্লিউও ১১ এর নাসির উদ্দিন মোল্লা। উনি সাক্ষী দেবার পর উনাকে হোস্টাইল ঘোষনা করে তৈমূর আলম জেরা করছিলো।ওই সময় তৈমূর আলম সাক্ষী বলছিলো আপনে আসামী পক্ষের ভয়ে এখানে মিথ্যা সাক্ষী দিচ্ছেন।এর জবাবে সাক্ষী তখন বলছিলো মৃত্যু সবাইকে বরণ করতে হবে।আমি এখানে ভয় পেয়ে আসিনি।যেটা সত্য দেখেছি সেটা বলতেই এখানে এসেছি।
আমি এই ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানি না।আর পুলিশকেও আমি কোন বয়ান দেই নাই।ভয়ে আমি মিথ্যা সাক্ষী দিতে আসিনি যা জানি তাই বলতে এখানে এসেছি। অপর সাক্ষী আলী আহমদ রতন বলেছে যখন তৈমূর খন্দকার দাবী করেছিলো সাব্বির আলম বিকেএমই এর ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলো কিন্তু তখন উনি ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলো না।সাব্বির আলম তৈমূর সাহেবের ক্ষমতা ব্যবহার করে স্বঘোষিতভাবে ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি এড.সরকার হুমায়ন কবির বলেন,এই জাকির খান ছাত্রদলের সভাপতি ছিলো তৎকালীন আর যিনি বাদী তিনি ছিলেন বিআরটিসির সভাপতি।যদি মামলা।সত্যিই হতো তাহলে তখন উনার অনেক ক্ষমতা ছিলো তখনই মামলার সাজা করাতে পারতেন।মিথ্যা মামলা দেওয়াতে পারতো কিন্তু উনি তখন এই মামলায় জাকির খানের সাথে আপোষ করে নিয়েছিলো।
কার কথায় কার ইঙ্গিতে ১৮ বছর আইসা উনি এই মামলায় সাক্ষী করাছেন।উনি বিএনপির সাথে বেইমানী করে বের হয়ে গেছেন এখন উনি চাচ্ছেন বিএনপির কেউ যেন জেল থেকে বের হতে না পারে।তিনি বিএনপির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাথে আতাত করে জাকির খানকে ফাঁসাতে চাচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন,আমরা জাকির খানের জামিন চেয়েছি।তিনি অসুস্থ্য।কিন্তু বিচারক কেন জামিন দেয়নি জানা নেই।মামলায় শেষ পর্যায় আমরা এসেছি।এই মামলায় জাকির খানের কিছু হবে না আমরা জানি।জামিনও হবে এবং বেকুসর খালাসও হবে জাকির খান।
প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারী আততায়ীদের গুলিতে নিহত হন ব্যবসায়ী নেতা সাব্বির আলম খন্দকার। এ হত্যাকান্ডের পর তার বড় ভাই এড. তৈমূর আলম খন্দকার বাদি হয়ে ১৭ জনকে আসামী করে ফতল্লা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর মোট ৯ জন তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়।
পরবর্তীতে মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তর করা হয়।সিআইডির এএসপি মসিহউদ্দিন দশম তদন্তকারী কর্মকর্তা দীর্ঘ প্রায় ৩৪ মাস তদন্ত শেষে তিনি ২০০৬ সালের ৮ জানুয়ারী আদালতে ৮ জনকে আসামী করে চার্জশীট দাখিল করেন।
এতে মামলা থেকে গিয়াসউদ্দিন, তার শ্যালক জুয়েল, শাহীনকে অব্যাহতি দিয়ে সাবেক ছাত্রদল সভাপতি জাকির খান, তার দুই ভাই জিকু খান, মামুন খানসহ মোট ৮ জনকে আসামী উল্লেখ করা হয়। মামলার প্রধান আসামী গিয়াস উদ্দিনকে মামলা থেকে বাদ দেয়ায় মামলার বাদি তৈমূর আলম খন্দকার সিআইডির দেয়া চার্জশীটের বিরুদ্ধে ২০০৬ সালের ২৪ জানুয়ারী আদালতে নারাজি পিটিশন দাখিল করেন।