দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জে সোনারগাঁ থানায় হত্যাকান্ড সহ বিভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢালাওভাবে হচ্ছে মামলা। মামলায় আসামী সাবেক প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এমনকি বাদ যাচ্ছে না সাধারণ জনগনও। তবে মামলার বাদী নিজেই জানে না সে যে মামলার বাদী। এমনকি মামলার এজাহারেও কার কার নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাও তারা জানেন না।
সরকারি সহায়তার নাম করে বিভিন্ন স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র এনে করছে মামলা। এমনটাই জানা গেছে অধিকাংশ বিএনপির নেতাকর্মীরা সরকারি সহায়তা করার কথা বলেই মামলা করার কথা গোপন করে নিজেদের ইচ্ছে মত আসামীদের নাম ব্যবহার করে দেওয়া হচ্ছে মামলা। অনেকে বাদী এবিষয়ে মুখ খুলতেও নারাজ ভয়ে।
সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে সোনারগাঁ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে বেশ কিছু মামলা হয়েছে। এই সব মামলা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। সরকারি সহায়তার নামে আন্দোলনে নিহত ও আহত পরিবারের সদস্যদের দিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। এসব মামলায় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হুকুমের অভিযোগ আনা হয়েছে।
তবে কার গুলিতে নিহত হয়েছে, তা সুনির্দিষ্ট করা হয়নি।কোনো কোনো মামলায় জোর করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মী জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এবার সোনারগাঁ থানায় এজাহার করা একটি মামলার বাদী এ বিষয়ে মুখ খুলেছে। তার অভিযোগ সরকারি সহায়তার নামে থানায় ডেকে নিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে মামলা করা হয়েছে।
গত ৪ আগষ্ট ছাত্র আন্দোলনে বিকেল সাড়ে ৫টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিনহা মিলের অপর পাশে কলাপট্টি কাঁচপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয় আশিক নামে এক যুবক। এই ঘটনার অনেকদিন পর গত ২২ আগষ্ট নিহত আশিকের মা বাদী হয়ে একটি মামলা করা হয় যার মামলা নম্বর ১৪। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ ১৬৫ জনের নাম উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের ২০০/৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়। তবে মামলার বিষয়ে অবগত নয় স্বয়ং মামলার বাদী কুলসুম বেগম।
তিনি নিজেই জানে না যে সে মামলার বাদী। কুলসুম বেগম বলেন,আমি নাম জানি না মামলা হইছে কিন্তু দুইজন মোল্লা আইছিলো আর দুই জন ছাত্র ছিলো। তারা আমাকে বলছে থানায় যান। থানায় গেলে তারা আমার ছেলের জন্য যেকোন সহযোগিতা করবে। আমাদের যারা নিয়ে গেছে তারা আবার থানার ভিতরে যায় নাই।আমরা থানায় যাবার পর আমার কাছ থেকে সাইন রাখছে।
মান্নান ২৫ হাজার টাকা দিয়েছে থানায় গিয়ে কুলসুম বেগমকে উল্লেখ করে তিনি জানান,আমরা থানায় যাবার পর মান্নান সাহেব খবর পাইয়া থানায় আসে। আইসা প্রথমে ১৫ হাজার পরে ১০ হাজার করে ২৫ হাজার টাকা দিসে। মান্নান সাহেবের পিএস ছিলো। আমি আমার পোলার হত্যার বিচার চাই। আমাকে ফোন কইরা হেরা নিছিলো সাথে ছাত্ররাও আছিলো
একটি সূত্র থেকে জানা যায়, সোনারগাঁয়ের সমালোচিত থানা বিএনপির সভাপতি আজহারল ইসলাম মান্নান ও তার লোকজন মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করে পুত্রহারা আশিকের মাকে ভুল বুঝিয়ে এবং সরকারি সহায়তার কথা বলে থানায় নিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে মামলা করায়। অথচ মামলার বাদী নিজেই স্বীকার করেছে সে কোন মামলা করে নাই। তার মামলায় আওয়ামী লীগ সহ সাধারণ মানুষদেরও করা হয়েছে আসামী যার কারনে বর্তমানে এমন গায়েবি মামলার কারণে এলাকার লোকজনের ভয়ে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছে কুলসুম বেগম ও তার পরিবার।
এবিষয়ে সোনারগাঁয় থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের ব্যবহৃত মুঠোফোনে (০১৭১৫৮৮৬০@@) একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি তা রিসিভ করেননি।