দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ সাংসদ শামীম ওসমান স্বপরিবারের ভারতে পাালিয়ে গেলেও এখনও পালাতে পারেনি তার বেয়াই ফয়েজউদ্দিন আহমেদ লাভলুর আলোচিত বেপরোয়া ছেলে মিনহাজউদ্দিন আহমেদ ভিকিসহ তার সঙ্গীয়রা। যদিও লাভলু বর্তমানে নাকি তার বেয়াই শামীম ওসমানের সাথেই নাকি অবস্থান করছেন এমনটাই চাউর নগরজুড়ে। লাভলুপুত্র ভিকিসহ তার সঙ্গীয়রা এখনও নাকি এলাকাতেই অবস্থান করছে বিএনপি নেতাদের কড়া পাহারায়।
সাংসদ শামীম ওসমানের একমাত্র পুত্র অয়ন ওসমানের সাথে লাভলু তার একমাত্র মেয়ে রেশমীকে বিয়ে দেয়ার পর থেকেই বেপরোয়া মনোভাবে পুরো নগরজুড়েই ছিল ভিকি তা চাচাতোভাইসহ প্রায় ৫০ জনের একটি দল। যে দলের কাজ ছিলো জোড়পুর্বক সবকিছু হাতিয়ে নেয়া,সাধারন মানুষের ইচ্ছের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ক্ষতিসাধন করা। তৎকালীন এসপি হারুন অর রশিদ নারায়ণগঞ্জে থাকাকালীন সময়ে একবার ডিবি পুলিশের হাতে অস্ত্রসহ গ্রেফতারও হয়েছিলো। তারপর ভিকির বেপারোয়া মনোভাব দমাতে পারেনি পিতা লাভলু এবং সাংসদ পুত্র অয়ন ওসমান।
ভিকির সাথে থেকে বেপরোয়াভাবে সাধারন মানুষকে ভীতি দেখিয়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে তার প্রয়াত চাচা আনিসউদ্দিন আহমেদ দুলুর দুই ছেলে তায়েফউদ্দিন আহমেদ জেকি ও আসিফউদ্দিন আহমেদ সানি এবং ছোট চাচা রইসউদ্দিন আহমেদ শাহীনের ছেলে নেছারউদ্দিন আহমেদ আলভী। এরমধ্যে তায়েফউদ্দিন আহমেদ জেকি আলোচিত শিক্ষার্থী ত্বকী হত্যা মামলার অন্যতম আসামী।
ভগ্নিপতি অয়ন ওসমানের নাম ব্যবহার করে ভিকি এতটাই বেপরোয়া ছিলেন যে ভুক্তভোগী সাধারন মানুষগুলো ভিকির নামে সাথে যুক্ত করেন ভিকি ওসমান হিসেবে। টাগাড়পাড়,কেতাবনগর চৌধুরী কমপ্লেক্স ও বিসিক এলাকার ঝুট সেক্টর দখল করে অনৈতিকভাবে ঝুট দখলে নেয়াটাকে প্রাধান্য দেয়া,চৌধুরী কমপ্লেক্স থেকে শুরু করে মাসদাইর অক্টোঅফিস পর্যন্ত রাস্তার উভয় পাশে জেলা পরিষদ থেকে লিজপ্রাপ্ত নেয়া জমিতে দোকানীদেরকে উচ্ছেদ করে জোড়পুর্বক দোকান ভাড়া আদায়সহ এমন কোন কাজ বাদ নেই যা ভিকিগংদের মাধ্যমে হয়নি।
পঞ্চবটী বনবিভাগের সামনে নজরুল নামে একব্যক্তির লিজকৃত সম্পত্তি ভাগিয়ে নিতে তারই আপন ছোটভাই অপহরন করে এনে সুমন গার্মেন্টস এর গরুর খামাকে আটক রেখে নির্যাতন করা এবং থানায় অভিযোগের পর অপহরনকারীকে উদ্ধারের জন্য পুলিশ আসলে তার উপস্থিতিতে নজরুল এবং তার ভাই কোনআনে হাফেজকে প্রকাশ্যে মারধর করাটাও ছিলো যেন ভিকি বাহিনীর কাছে পান্তাভাতের মত। অয়ন ওসমানের সমন্ধি হওয়ার সুবাদে সেই প্রভাবে এমন কোন অপকর্ম বাদ দেয়নি ভিকি ও তার চাচাতো ভাইয়েরা।
এমনকি হিন্দু সম্প্রদায়ের কোন শ্রেনীর মানুষও ছাড় পায়নি এ ভিকি ওসমান বাহিনীর রোষানল থেকে। এছাড়া অপর চাচাতো ভাই নেছারউদ্দিন আলভী তার বাহিনী নিয়ে কয়েকবার মাসদাইর এলাকায় ওয়াইফাই ব্যবসা দখলে নিতে গিয়ে মারধর ও ভাংচুরের ঘটনার জন্ম দেন। যার একটির বিচার করেন জামাই শশুর মিলে ( লাভলু-অয়ন ওসমান ) আর অপরটির বিষয়ে শামীম ওসমানের নির্দেশে নেছারগংদের বাচাতে উল্টো মামলা দেয় নিরীহ ছেলেদের বিরুদ্ধে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাসদাইর শোভন গার্মেন্টস এর আশপাশের অনেক সাধারন মানুষ বলেন, বিকেলে কিংবা রাতে যখনই শোভন গার্মেন্টস ছুটি হতো তখন সেখানে কর্মরত সুন্দরী নারী কর্মীদেরকে নিয়ে ভিকি ও তার বাহিনীর সদস্যরা তাদের নির্দিষ্টস্থানে নিয়ে শারীরিক মেলামেশা করতে বাধ্য করাতো। ভিকিরা প্রভাবশালী হওয়ায় কোন নারী কর্মী মুখ খুলে কিছু বলার সাহস পেতনা। তারা আরও জানান,ভিকি ও তার চাচাতো ভাইয়েরাসহ তার সঙ্গীয়রা এখনও এলাকাতেই রয়েছেন। পাকাপুল এলাকায় একটি হাইরাইজড বিল্ডিংয়ে নাকি ভিকি ওসমান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং সাংসদ শামীম ওসমানের যাবতীয় উন্নয়ন কাজের অন্যতম হোতা এহসানুল হক নিপু একসাথেই রয়েছেন সেখানে।
আর তার চাচাতো ভাই তায়েফউদ্দিন আহমেদ জেকি ও আসিফউদ্দিন আহমেদ সানি এবং নেছারউদ্দিন আহমেদ আলভী নিজ বাড়ি গুলশান ভবনেই অবস্থান করছে। সেখান থেকে সানি নাকি রাত ১১টার পর হাটাচারি করতে বাসা থেকে বের হয়। এবং ভিকির বাবা ফয়েজউদ্দিন আহমেদ লাভলুকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছেন এক যুবদল নেতা পিতা-ভাইসহ বিএনপির অনেক নেতৃবৃন্দ।
স্থানীয়দের দাবী, এমপি পুত্রের কাছে মেয়ে বিয়ে দিয়ে লাভলু তার পরিবারের সদস্যরা এতটাই বেপরোয়া ছিলো যে যে কোন অপরাধ করতে দ্বিধাবোধ করেনি। অনেক নিরীহ মানুষকে এনে তাদের বাড়ির পেছনে এবং আশপাশের বেশ কয়েকটি গোডাউনে নির্যাতন করেছেন যে দেখে শরীর শিহরে উঠতো। ৫ আগষ্টের পর শেখ হাসিনাসহ তার দোসররা একেএকে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। সাংসদ শামীম ওসমানও স্বপরিবারে চোরের মত পালিয়েছেন সাথে তার বেয়াই লাভলু। অথচ সেই অত্যাচারী মানুষগুলো ভিকি-জেকি-সানি-নেছাররা কিভাবে এখনও পর্যন্ত এলাকায় অবস্থান করে ? ভিকি ও তার বাহিনীর দ্বারা অত্যাচারিত হয়েছে স্থাণীয়সহ আশপাশের অনেকে।
তারা আরও বলেন,সাংসদ শামীম ওসমান তার ছেলে অয়ন ওসমানের সাথে বেয়াই লাভলু এবং তার ছেলে ভিকিও কিন্তু প্রকাশ্যে অস্ত্র উচিয়ে বৃষ্টির মত গুলি করেছিলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময়। সেই ঘটনায় অনেক হতাহতের ঘটনাও ঘটেছিলো। সেই ভিকির মত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী কিভাবে এখনও পর্যন্ত এলাকাতে অবস্থান করেন এবং কেনইবা বিএনপির নেতারা এমন দূর্ধর্ষ অপরাধী ভিকিসহ তার পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে রেখেছেন তাও আমাদের কারোর বোধগম্য হচ্ছেনা।
তাদের দাবী,ভয়ংকর সন্ত্রাসী মিনহাজউদ্দিন আহমেদ ভিকির মত সন্ত্রাসীকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে অয়ন ওসমানসহ তাদের অস্ত্রভান্ডারে রক্ষিত অতস্ত্রগুলো উদ্ধার করার জন্য জেলা পুলিশ-র্যাব ও সেনাবাহিনীর সার্বিক হস্তক্ষেপ করেন তারা।