দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ ৫ আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতনের পর মন্ত্রী, এমপি, সচিব থেকে সর্বস্থরের নেতারা যখন মামলায় গ্রেফতার আতংকে গর্তে লুকানো আবার অনেকেই দেশান্তরী। ঠিক তখনই থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের আওয়ামীলীগের নেতাদের কাছ থেকে ব্যবসায়িক পার্টনার বা মোটা অংকের অর্থের বিনিময় কথিত কিছু বিএনপি নেতারা নিয়েছে ভিন্ন কৌশল।
তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি রক্ষার্থে বিএনপি নেতাদের যোগসাজশে আওয়ামী লীগাররা হচ্ছে নব্য বিএনপি। এর ফলে বিএনপির মাঠ পর্যায়ের ত্যাগী নেতারা সুবিদাবাদীদের ভীড়ে পিছনে পড়ে যাচ্ছে। আর এই ঘটনা সারা বাংলাদেশেই চলমান রয়েছে। তাদের কর্মকান্ড কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতাদের নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে সেটাকে চোখ রাঙ্গানো হচ্ছে বলে মনে করেন স্থানীয় বিএনপি।
এদিকে ঢাকার পাশ^বর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জেও অনেক বিএনপি নেতা হাটছেন একই পথ অনুশরন করে। আর এই সকল নেতাদের বিরুদ্ধে বিএনপি বা অঙ্গসংগঠনের নেতা অবস্থান নিলে তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ থেকে শুরু করে স্থানীয় মিডিয়াতে নানা অপপ্রচার চালাতেও পিছ পা হচ্ছে না সুবিধাবাদীরা।
স্থানীয় বিএনপি নেতাদের অভিযোগে লক্ষ্য করে দেখা যায়, সোনারগাঁ থানাধীন শম্ভুপুরা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের নেতা মতিন মুন্সি যিনি নিজেকে থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের ফুপাতো ভাই হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়ে থাকেন। আর সেই ভাইয়ের ক্ষমতার দাপটে আওয়ামীলীগ নেতা জুবে আলম খোকনকে বিএনপি নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার পাশাপাশি তার নামে দিয়েছে বিএনপি কার্যালয়।
এই রেশ কাটতে না কাটতেই শম্ভুপুরা ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল ও ৯নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহম্মেদ স্বপনকে প্রতিষ্ঠিত করতে চালাচ্ছে নানা অপকৌশল। এই তিন নেতার বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় হত্যা মামলা রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
স্থানীয় বিএনপির সূত্র আরও জানায়, সোহেল ও শামীম আহম্মেদ স্বপন চর কিশোরগঞ্জ এলাকায় আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালিন কৃষকদের চাষী জমি দখল করে হৈ চৈ বিনোদন নামে একটি পার্কের ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করেন। এর ফলে অনেক কৃষক তাদের ফসলি জমি হারিয়ে আজ দিশেহারা।
কথিত ঐ মতিন মুন্সি তাদের এই পার্কের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করছে। শুধু তাই নয় সোহেল ও শামীম আহম্মেদ স্বপনের কাছ থেকে লিখিত দলিল এনে সেই পার্কের পার্টনারশীপ দাবি করে। সেটা পুনরায় চালু করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। মতিন মুন্সি বিএনপির হাই কমান্ডের নির্দেশ অমান্য করে আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মাদের সাথে আতাঁত করে, তাদের পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে। আমরা মনে করি মতিন মুন্সি দলের হাই কমান্ডের নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে সেটাকে চোখ রাঙ্গাচ্ছেন।
আর তার এই অপকর্মে প্রধান বাধাঁ হয়ে দাড়িয়েছে যুবদল নেতা শাহাদাত প্রধান। তাকে রাস্তা থেকে সড়াতেই থানায় অভিযোগ সহ স্থানীয় মিডিয়াতে চাঁদাবাজ আখ্যা দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করানো হয়েছে।
এ বিষয়ে শাহাদাত প্রধানের কাছে জানতে চাইলে তিনি দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস’কে জানান, এদেশের গণতন্ত্র প্রেমি মানুষের গণতন্ত্র হরণ করে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অসহায় কৃষকদের জমি দখল করে ব্যবসায়িক ফায়দার জন্য হৈ চৈ বিনোদন নামে একটি পার্ক করা হয়েছে।
যাদের জমি ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে, তাদের ন্যায পাওনা বুঝিয়ে দেয়া প্রতিটি সচেতন নাগরিকের দ্বায়িত্ব। যারা এতদিন এই চর কিশোরগঞ্জের মানুষের উপর অন্যায় ভাবে অত্যাচার করে লুট, ডাকাতি, জমি দখল ও নদীর বালু চুরি করে বিক্রি করেছে। একটি মহল তাদেরকে আবারো চর কিশোরগঞ্জে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে।
স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতায় থাকাকালিন আমি এদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে মিথ্যা মামলা ও হামলার শিকার হয়েছি। নিজের জন্মস্থানে থাকতে পারি নাই। আর আজ সেই স্বৈরাচারদের দোসরদের আবারো চর কিশোরগঞ্জে প্রতিষ্ঠিত হতে দিবো না। আর এই দাবি আমার না এটা চর কিশোরগঞ্জের প্রতিটা মানুষের দাবি। যারা অসহায় কৃষকের জমি দখল করে পার্ক নির্মান করে এতো দিন ব্যবসা করে এসেছে। তাদের বিরুদ্ধে কৃষকের পক্ষ হয়ে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। আমরা চাই কৃষকের জমি কৃষক ফেরত পাবে।
এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান বলেন, আমি মতিন মুন্সি নামের কাউকে চিনি না। আর চর কিশোরগঞ্জের কোন লোককে আমি পছন্দ করি না। ওরা মুখে বলে এক আর কাজে করে আরেকটা। আর পার্কের যে বিষয়টা আমি জানি সেটা হলো আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকাকালিন জোড় করে জমি দখল করে পার্ক নির্মান করে ছিলো। এখন জমির মালিকরা সেই পার্ক নিজেরাই চালু করতে চাইছে। কিন্তু একটা গ্রুপ সেটার পার্টনারশীপ দাবি করছে। এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানায় একটি অভিযোগ হয়েছে। আজকে পুলিশের তদন্ত করার কথা এখন কি হয়েছে সেটা আমি জানি না।