দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর সারা দেশেই বিরোধী বিহীন মাঠের রাজনীতিতে অবস্থ্য হয়ে পড়েছে বিএনপি। দুটি বড় দল আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক অবস্থান শুন্যের কোঠায় যাওয়ার পর। সারা দেশে অঘোষিত ভাবে একটি দলই দখলবাজির রাজনীতি কায়েম করে যাচ্ছে। যদিও দলের হাই কমান্ড বার বার নির্দেশ প্রদান করছে দখলবাজী থেকে দলের নেতাকর্মীদের দূরে থাকতে।
তবুও সকল নির্দেশনাকে অমান্য করে নিজেদের আখের গোছাতে প্রতিটি সেক্টরে চলছে গুটি কয়েক নেতাদের দখলবাজি। এরই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের গুটি কয়েক নেতারা তাদের আখে গোছাতে ব্যস্ত সময় পাড় করছে।
তবে গত ১৬ বছর আওয়ামী শাসন আমলে বিএনপির পাশাপাশি জামায়াত ইসলাম নানা হয়রানীর শিকার হলেও দখলবাজির তালিকায় নেই তাদের নাম। অনেকটাই সুকৌশলে নিজেদেরকে সাংগঠনিক ভাবে সাজাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জামায়তে ইসলামের হাই কমান্ড থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ের সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দ।
এদিকে, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের গুটি কয়েকজন নেতা তাদের পকেট ভারি করার জন্য ঝুট, পরিবহন সেক্টর সহ মাঠ-ঘাট, বাজার ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলের মহোৎসবে মেতে উঠেছে। এছাড়াও বিচার সালিশি থেকে শুরু করে সামাজিক বিচার আচারেও চলছে অনেকের পকেট ভরার নানা কৌশল। শুধু তাই নয় নারায়ণগঞ্জের আলোচিত আদমজী ইপিজেড থেকে শুরু করে বিসিক শিল্প নগরী, বাস ষ্ট্যান্ড একক নিয়ন্ত্রনের জন্য দফায় দফায় সংর্ঘষ দেখা যাচ্ছে এবং ভবিষ্যত্বেও হওয়ার আশংকাকে উড়িয়ে দেয়া যায় না। এতে করে অল্প সময়ে অনেক নেতাই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছে পরিণত হতে শুরু করেছে।
যদিও এই জেলার দ্বাায়িত্বরত নেতৃবৃন্দ অনেকেই চুপ করে ঘাপটি মেরে বসে আছে আবার কেউ কেউ বিভিন্ন সভা সমাবেশে এই দখলবাজির বিরুদ্ধে বক্তব্যের মাধ্যমে কঠোর হুশিয়ারী দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের সাথে সুর মিলাচ্ছে। তবে সেটা হুঙ্কার পর্যন্তই সীমাবদ্ধ রয়েছে। কারন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এই বিষয়ে কোন কঠোর ব্যবস্থা না নিলে স্থানীয় নেতৃবৃন্দদের তেমন কিছু করার থাকে না বলে অনেকেই দাবি করেন।
এ বিষয়ে সচেতন মহল বলেন, গত ১৬ বছর স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ সরকার তাদের অপকর্মের কারনে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে দিনের ভোট রাতে দিয়ে ক্ষমতায় টিকে ছিলো। তারা দেশের প্রতিটি সরকারী দপ্তর থেকে শুরু করে সর্বক্ষেত্রে দলীয় করণ করে বাংলাদেশকে দেউলিয়ায় রুপান্তরিত করে ফেলেছিলো। কিন্তু শেষ বেলায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনের তোপের মুখে স্বৈরাচারী সরকার ও তাদের দোসররা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।
দেশের আমজনতা স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর পুণরায় স্বাধীনতার স্বাদ পেয়ে আনন্দ উচ্ছাস করেন। কিন্তু ৫ আগষ্ট যেতে না যেতেই বিএনপির হাতে গোনা কিছু নেতাদের লোভের মুখে পড়ে দেশে আবারও দখলবাজির অত্যাচারে পতিত হয়। মাত্র ৫ মাসের মাথায় দেশের সাধারণ জনগণ আবারো দখলবাজির রাজনীতির কবলে পড়ে।
যার ফলে জননন্দিত দল বিএনপি অনেকটাই জনবিচ্ছিন্ন হতে শুরু করেছে। আর এই সুযোগে জামায়াত ইসলাম তাদের সাংগঠনিক দক্ষতার ফলে জনগণের কাছে অনেকটাই জনপ্রিয় দল হিসেবে বিবেচিত হতে শুরু করেছে। তাই বর্তমান দেশের সবচেয়ে বড় দল বিএনপির স্থানীয় নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতাদের উচিত দখলবাজ নেতাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা। নতুবা ভবিষ্যতে ভোটের মাঠে বিএনপির জনবিচ্ছিন্ন হওয়ার সম্ভবনাকে উড়িয়ে দেয়া যায় না।