দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচারী হাসিনার পতনের পর নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে একাই দাবড়িয়ে বেড়াছে বিএনপি ও দলটির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের দায়িত্বে থাকা নেতার। এ নিয়ে স্থানীয় মিডিয়া থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ে নানা সংবাদ প্রচার ও সমালোচনা হয়েছে বেশ কয়েকবার। তবুও তাদের দমাতে পারেনি দলটির হাইকমান্ড থেকে শুরু করে দায়িত্বে থাকা স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতনের ৬ মাস চলমানে দখলবাজী, চাঁদাবাজী, ঝুট সেক্টর, মাঠ-ঘাট, ফুটপাত ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রন করে অনেকেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছে পরিণত হয়েছে। কেউবা অর্থের ওজন ধরে রাখতে না পেরে চোঁখে পড়ার মত নানা সম্পদ ক্রয় করেছেন। এসব বিষয় নিয়ে সব মহলেই সমালোচনার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
আর অর্থের দাপটে এই সকল দখলবাজরা নিজেদের পদ পদবি আকড়ে রেখেছেন বেশ শক্ত করে। পাশাপাশি তাদের সাথে টক্কর দেয়ার মত নেতাদের ছিটকে ফেলে দিচ্ছে পদের দাপটে কমিটি থেকে। এর ফলে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করে তৃণমূল থেকে উঠে আসা নেতাগুলো যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বঞ্চিত হচ্ছে কমিটির পদ থেকে। আর সেখানে স্থান পেয়ে যাচ্ছে রথি মহারথি ভাইদের আদরের পোষা ভাইটি। যাদের হাতে কখনোই কোন কমিটি আহবায়ক থেকে পুর্নাঙ্গ কমিটিতে রুপ পায়নি সাংগঠনিক অজ্ঞতার কারনে।
এদিকে, পদ পদবি থেকে বঞ্চিত হয়েও পারিবারিক ক্ষমতা ও সাংগঠনিক দক্ষতা এবং কর্মীবাহিনী থাকার পরেও অনেক নেতাই দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের আর্দশকে বুকে লালন করে রাজপথে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে নেই কোন দখলবাজী, চাঁদাবাজী, ঝুটসেক্টর, মাঠ-ঘাট, ফুটপাত ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রনের অভিযোগ। অথচ তারা চাইলে কর্মী সমর্থকদের দাপটে নানা সেক্টরে বিচরন করতে পারে। কিন্তু দখলবাজী, চাঁদাবাজী, ঝুটসেক্টর, মাঠ- ঘাট, ফুটপাত ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রনে তাদের রয়েছে আদর্শিক এলার্জি।
এ বিষয়ে কয়েকজন নেতা বলেন, আমরা রাজনীতি করি দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য, দখলবাজীর রাজনীতি করার জন্য নয়। আমাদের মধ্যে অনেকেই যখন রাজনীতি শুরু করেছিলো তখন থেকে এ যাবৎকাল পর্যন্ত বিএনপি ক্ষমতার বাইরে। তাই ক্ষমতার স্বাদ কি সেটা আমরা এখনও বুঝতে পারিনি। আমরা স্বাদ পেয়েছি স্বৈরাচারী হাসিনার জুলুম ও নির্যাতনের। আলহামদুলিল্লাহ স্বৈরাচারী হাসিনার পতনের পর সেই কষ্টের স্বাদ থেকে মুক্তি পেয়েছি এটাই বড় পাওয়া। আর রাজনীতির পাশাপাশি আমাদের নিজেদের ব্যবসা বানিজ্য রয়েছে, রাস্তার ভিক্ষুকের মত হাত পাতার বদলে অস্ত্র ঠেকিয়ে ভিক্ষা করা আমাদের স্বভাবে নেই।
তাছাড়া বিগত ১৬ বছর আন্দোলন সংগ্রাম করে মামলা হামলার শিকার হয়ে জেল খেটেছি মানুষের মৌলিক অধিকার আদায়ের জন্য, নিজের ব্যক্তি স্বার্থের জন্য নয়। তাছাড়া আজকে যারা দখলবাজী, চাঁদাবাজী, ঝুটসেক্টর, মাঠ-ঘাট, ফুটপাত ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রন করছে তাদেরকে সাধারণ মানুষ কখনোই ভালো দৃষ্টিতে দেখেনা। আগামী নির্বাচনে এই সকল চাঁদাবাজরা কিভাবে সাধারণ মানুষের কাছে ভোটের জন্য দাঁড়াবে সেটা একবার ভেবে দেখা উচিত।
হয়তো আজকে অনেক রথি মহারথি ভাইদের আদরের পোষা ভাইটি কমিটিতে স্থান পেয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে। কিন্তু একটা সময় আসবে সেই পোষা ভাইটি বড় ভাইয়ের দিকে আঙ্গুল তুলতে পারে। কারন বেয়াদবি না করে কখনোই দখলবাজী, চাঁদাবাজী, ঝুটসেক্টর, মাঠ-ঘাট, ফুটপাত ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রন করা যায় না। আর এই স্বভাবটাই এক সময় বড় হতে হতে বড় ভাইয়ের দিকে চলে যাবে।
আর আমরা যারা পদ বঞ্চিত হয়েছি কিন্তু পথভ্রষ্ট হয়নি তারা সবাই ভবিষ্যতে জনসমর্থন নিয়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আর্দশকে বুকে লালন করে সামনের দিকে এগিয়ে পাবো।