দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ সদ্য ঘোষিত নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের পুর্নাঙ্গ ৫১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি। যেটা ঘোষনার সাথেই রাজনৈতিক বলি হয়েছে রাজপথের যুবদলের অনেক সক্রিয় নেতা। ব্যক্তি স্বার্থে যাদের বলি দেয়া হলো তাদের অনেকেই সাংগঠনিক দক্ষতার পাশাপাশি বিগত দিনে আন্দোলন সংগ্রামে নেতাকর্মী নিয়ে রাজপথে ছিলেন বেশ সক্রিয়। শুধু মাত্র ভাই বলয়ের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও পদ বঞ্চিত হয়েছে তারা। মহানগর যুবদরের আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করার পর থেকেই এই ধরনের নানা অভিযোগ উঠে আসছে নেতাকর্মীদের কাছ থেকে।
লক্ষ্য করে দেখা যায়, বেশ কয়েক বছর রাজনীতি থেকে দূরে থাকা মাজহারুল ইসলাম জোসেফ প্রায় ৫ বছর যাবৎ রাজপথে সক্রিয় ভাবে নেতাকর্মী নিয়ে আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহন করে নিজের শক্তিশালী অবস্থানের জানান দিয়ে যাচ্ছেন। শহর ছাত্রদলের সভাপতি থাকা কালিন সাংগঠনিক দক্ষতা ও রাজপথের লড়াকু মনভাবের কারনে বেশ প্রশংসা কুড়িয়ে ছিলেন তিনি।
কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারনে বেশ কয়েক বছর রাজপথে না থাকতে পারলেও, গত ৫ প্রায় বছর রাজপথে থেকে পুরনো চেহারায় ফিরে ছিলেন মাজহারুল ইসলাম জোসেফ। পদ পদবি না থাকলেও তার সমর্থনে নেতাকর্মীদের উপচে পড়া ভীর নিয়ে রাজপথ প্রকম্পিত করেছেন বহুবার। নিজের রাজনৈতিক দক্ষতা দিয়ে মহানগর যুবদলের সভাপতি পদে লড়াই করার পাশাপাশি নজর কেড়ে ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের। কিন্তু রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হওয়ায় রথি মহারিথি ভাইদের পোষা আদরের ছোট হওয়া ছিলো তার জন্য অসম্ভব। যেটা তার জন্য রাজনৈতিক কাল হয়ে উঠেছে। ফলে মহানগর যুবদলের গুরুত্বপুর্ন পদে রাখাতো দূুরের কথা সদস্য পদেও তাকে স্থান দেওয়া হয়নি।
এদিকে, মহানগর যুবদলের সদ্য কমিটিতে স্থান পাওয়া আলোচিত নাম স¤্রাট হোসেন সুজন। যার রাজনৈতিক হাতে খড়ি মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে দিয়ে। তৎকালিন সময় মহানগর যুবদলের সদস্য সহ থানা যুবদলের সদস্য সচিব পরে জেলা যুবদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করে এসেছেন। তবু তার ভাগ্যে জোটেনি যুগ্ম-আহবায়কের পদটি। মহানগর যুবদলের বর্তমান আহবায়ক কমিটির সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক সাগর প্রধানের পরে যুবদলের রাজনীতিতে তাকেই সিনিয়র বলা চলে। শুধু রথি মহারথি ভাইদের আর্শিবাদপুষ্ট না হওয়ায় তাকে রাখা হয় বর্তমান কমিটির সদস্য পদে। তাও কোন এক নেতার রেফারেন্সে।
অপরদিকে, শফিকুল ইসলাম শফিক যার নামের আগে ও পরে কর্মী বান্দব নেতা বললে ভুল হবে না। মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সাহেদের কমিটিতে তার পদ ছিলো সহ-সভাপতি হিসেবে। এর পরে তিনি যুবদলের রাজনীতিতে ভীড়তে শুরু করেন। মমতাজ উদ্দিন মন্তু ও মনিরুল ইসলাম সজলের আহবায়ক কমিটি থাকা কালিন শফিক তাদের সাথে যুবদলের রাজনীতি শুরু করেন। সে সময় সাহেদ যুবদলের কোন কর্মসূচিতে ঠিক মত অংশগ্রহন করতো না।
মন্তু সজলের প্রস্তাবিত কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক হিসেবে যার নাম কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের কাছে জমা পরে ছিলো। যার কাঁধে ভর করে সাহেদ যুবদলের মিটিং মিছিল করতো বর্তমান কমিটির সদস্য সচিব সাহেদ। শফিক যুবদলের রাজনীতিতে কোন পদে না থাকলেও তার কর্মী সমর্থনের কাছে কোন যুবদল নেতাই টিকতে পারেনি। আর সাহেদ সেই সুযোগেই তাকে ব্যবহার করে নিজের আখের গুছাতে সক্ষম হয়েছে বলে দাবি করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। কিন্তু শেষ বেলায় সাহেদ তাকে কমিটি থেকে মাইনাসের রাজনীতি করতে একটুও কার্পণ্যতা করেননি, রাখেননি সদস্য পদেও।
এদিকে, সাহেদের নেতৃত্বে গড়া মহানগর ছাত্র দলের আরেকজন সহ-সভাপতি দর্পন প্রধান একজন উদীয়মান রাজনীতি বিদ। যার কোন পদ পদবি না থাকলেও পারিবারিক রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড নারায়ণগঞ্জে বেশ পরিচিত। কর্মী সমর্থনের দিক দিকে বেশ শক্তিশালী। নারায়ণগঞ্জে ১০ জন তরুন নেতার নামের তালিকা হলে সেখানে দর্পন প্রধানের নাম বাদ দেয়া প্রায় অসম্ভব। যার নিজেস্ব কর্মী বাহিনীর পাশাপাশি রাজপথে ছিলো তার বেশ বিচরন।
তার রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড ও কর্মী সমর্থন নিয়ন্ত্রন করা কখনই সম্ভব নয় সজল ও সাহেদের পক্ষে। তাছাড়া সে আবুল কাউছার আশা সমর্থিত হওয়ায় কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়নি সদস্য পদেও। কারন তাকে পদ পদবিতে আনা হলে সজল সাহেদের কাছে দর্পন কখনই মাথা নত করে রাজনীতি করবে না বলেই তাকে মাইনাসের রাজনীতিতে রাখা হয়েছে বলে দাবি তার সমর্থকদের।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ রাজনৈতিক নেতারা বলেন, একপেশী রাজনৈতিক দ্বারা দিয়ে বেশি দিন রাজপথে বিচরন করা যায় না। আজকে যারা উদীয়মান রাজনৈতিক নেতাদের নিজের ক্ষমতার বলে কমিটি থেকে মাইন করছে। তারাও একদিন এই ভাবে রাজনীতি থেকে ছিটকে পড়বে আর এটাই হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু যাদেরকে মাইনাস করা হচ্ছে তারা যদি সাংগঠনিক দক্ষতা রাখে তাহলে এক সময় তাদের হাতেই নেতৃত্ব আসবে। এটা রাজনীতিতে একটা চলমান প্রক্রিয়া আর এটা হবেই।