দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, নারায়ণগঞ্জ জেলার প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও পাঠাগার উপ-পরিষদের উদ্যোগে নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সংগঠকদের সচেতনতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি বিষয়ক প্রশিক্ষণ মহিলা পরিষদ’র জেলা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
সোমবার ৫ মে সকাল ১১ টায় অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি রীনা আহমেদ সভাপতিত্ব করেন।
পরিচালনা করেন জেলা প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও পাঠাগার সম্পাদক লায়লা ইয়াসমিন। প্রথমে হাউজরুল ও প্রত্যাশা চয়ন পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। পরিচালনা করেন প্রোগ্রাম এক্সিকিউটিভ সুজাতা আফরোজ।
এরপরে একুশ শতকের নারী আন্দোলন ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন- সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা লক্ষ্মী চক্রবর্তী, জেন্ডার ধারণা ও নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করেন জেলার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ,
গবেষণা ও পাঠাগার সম্পাদক রীনা আহমেদ, ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্র এবং বাস্তব কাজের ধারা বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করেন জেলা সাধারণ সম্পাদক রহিমা খাতুন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মতামত ব্যক্ত করেন অর্থ সম্পাদক শীলা সরকার, সদস্য রোকেয়া খাতুন, পল্লবী প্রত্যাশা প্রমূখ।
বক্তারা বলেন- নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও গনতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র, সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৭০ সালের ৪ এপ্রিল বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ গড়ে উঠে। সকল সদস্যকে সংগঠনের ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্র পড়তে হবে ও ধারন করতে হবে। দেশের এই ক্রান্তিকালে গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত জরুরি। গণতন্ত্রের কথা বলে দলীয় সরকারগুলো সব সময় দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার নারী অধিকার বিষয়গুলোকে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে যৌক্তিক সংস্কার করবেন, দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করবেন এই দাবি জানাই।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত ৫৩ বছর ধরে সংগঠনটি বিভিন্ন ইস্যুতে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলার নারী আন্দোলনসহ সকল জাতীয় আন্দোলনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, দূর্নীতি দমন ও বাক স্বাধীনতা ও জন নিরাপত্তা প্রদান, নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে জেন্ডার সমতা, দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন, সচেতনতা বৃদ্ধি, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ, শিক্ষা-স্বাস্থ্য, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিক মুক্তি, সম্পত্তিতে সম-অধিকার প্রতিষ্ঠা, সিডও সনদের বাস্তবায়ন, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ প্রভৃতি বিষয়ে আজ পর্যন্ত আন্দোলন করে চলেছে।
হিন্দু-মুসলিম, বৌদ্ধ-খৃষ্টান সকল সম্প্রদায়ের এক ও অভিন্ন পারিবারিক আইন চালু করতে হবে। বিবাহ ও তালাক সংক্রান্ত আইন, সম্পত্তি আইন সব সম্প্রদায়ের এক হওয়া জরুরী। এভাবেই সংগঠনটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এগিয়ে চলেছে। সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল পর্যায়ের আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই কর্মী-সংগঠকদের এই প্রশিক্ষণ থেকে আত্মোপলব্ধি করতে হবে, সচেতন থাকতে হবে, নিজেদের চারপাশের মানুষকে সচেতন করতে হবে। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। সকলের প্রচেষ্টায় সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়ন করতে হবে। অনুষ্ঠানে জেলা ও শহর কমিটির ৩০ জন সদস্য অংশগ্রহণ করেন।