দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ বিগত আওয়ামী দুঃশাসনের সময় স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদী হাসিনা রহমান শিমু নিজের সৌন্দর্যকে পুঁজি করে এমন কোন নেতা ও এমপি-মন্ত্রী নেই, যেখানে তার বিরচণ ছিল না। আওয়ামী পরিচয়ে হয়েছেন অঢেল সম্পদের মালিক। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি সেলিম ওসমানের সাথে গভীর সম্পর্ক থাকায় তারই আশীর্বাদে বন্দরে দাপটের সাথে চলাফেরা করেছেন এই শিমু।
এই শিমুর বিরুদ্ধে রয়েছে নগর ও বন্দরে নানা অভিযোগ। বিশেষ পেশার কয়েকজন মুখোষধারী সেই লিজার মতো শিমুকে নিয়ে নানা সমালোচনার আবর্তে ঘুরপাকও খেয়েছেন। নগরীতে সমাজ সেবার আড়ালে এই শিমু বা লিজার মতো বিতর্কিতদের নিয়ে কেউ কথা বললেই তাদের নানাভাবে মামলা ও হামলার ভয় দেখনো হতো । আবার দেখানো হতো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খড়গ। ফলে কেউ এই শিমু বাব লিজাদের হাজারো অপরাধ থাকলেও মুখ খোলার সাহস করতো না। এবার সেই শিমু সদ্য কারামুক্ত জাকির খানসহ বিএনপির ক্ষমতার নেতাদের পিছু নিয়েছে যাতে বিগত আওয়ামীলীগের শাসনামলের মতোই বীরের বেশে বিতর্কিত কর্মকান্ড চালাতে পারেন এই প্রত্যাশায়।
নগরীতে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে, হাসিনা রহমান শিমু শুধু সেলিম ওসমানই নন অনেক গুরুত্বপূর্ণ টাকাওয়ালা ব্যক্তিদের নিজের কব্জায় রাখতে যেখানে সেখানে যখন তখন সময় কাটিয়ে বাগিয়ে নিয়েছেন প্রচুর টাকা। আনন্দধাম ও একটি প্রতিবন্ধী আশ্রয় কেন্দ্রের নাম দিয়ে সরকারি অনুদানসহ রাজনৈতিক দলীয় অনুদান নিয়ে তা তছরুপ করেছেন যার হিসাব তিনি কখনো দিতে পারেননি। সামাজিক সংগঠনের নামেও তিনি বিভিন্ন মানুষের সাথে প্রতারনাও করেছেন।
আওয়ামী সরকারের পতনের সাথে সাথে জেলা মহিলা শ্রমিক লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পদিকা হাসিনা রহমান শিমুও পল্টি মেরে এখন বিএনপির উলে¬খযোগ্য নেতাদের দ্বারস্থ হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানের প্রভাবশালী নেতা ছাত্রদলের সাবেক জেলা সভাপতি জাকির খানের সাথে সাক্ষ্যাতের বিষয়টি মানুষ ভালো চোখে দেখেনি। শিমু এতোই ধুরন্ধর যে নিজের রূপ যৌবনকে ভাসিয়ে ক্ষমতা দখলে নিতে ব্যস্ত থাকে সবসময়। শিমুর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবার বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ পেলে নিজেকে সাংবাদিক বানানোরও চেষ্টা চালায় এবং টাকার বিনিময়ে পত্রিকার কার্ড পেয়ে যায়। কিন্তু বেশিদিন এই পরিচয়ে টিকতে পারেনি। বর্তমানে তার আচরণ ও গতিবিধি খুবই রহস্যজনক।
বিশেষ করে জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ ও সেক্রেটারী কাজীমুদ্দিনের সাথেও তার দহরম মহরম ছিল এবং শ্রমিক লীগে উৎপ্রতোভাবে জড়িত ছিল। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জের সাবেক এসপি ডিবি হারুনের সাথেও তার সখ্যতা ছিল। ডিবি হারুনের পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মানুষকে হয়রানী করেছিল। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক, ডাঃ দীপু মণি, ওবায়দুল কাদেরের সাথেও কম সখ্যতা ছিলনা। কেউ কেউ তাকে রাতের রানীও বলতো। কিন্তু ওবায়দুল কাদেরের রাতের রানী এখন জাকির খানের ঘরে কিভাবে এলো তা জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি আবু জাহের চেয়ারম্যান ও বর্তমান থানার আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ রশিদের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন শিমু। হাসিনা অটিজম চাইল্ড কেয়ার প্রতিষ্ঠা করে সেলিম ওসমানের কাছ থেকে ২৭ লক্ষ টাকার চেক গ্রহণ করেন। কিন্তু সেই টাকা প্রতিবন্ধীরা পায়নি।
নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ এর সাবেক সভাপতি খালেক হায়দার কাজলের সাথেও তার ঘনিষ্ঠতা ছিল।
কাজল সাহেব খুশি হয়ে শিমুকে উপহার স্বরূপ সায়াম প¬াজার তৃতীয় তলায় অবস্থিত একটি দোকান ঘর প্রদান করেন। যার নাম ইডেন থাই এন্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্ট। খালেদ হায়দার কাজলের ছোট ভাই আমেরিকা প্রবাসী তানভীর হায়দার এর প্রতিষ্ঠিত আনন্দধাম এর নির্বাহী চেয়ারম্যান পদটিও শিমু আদায় করে নেয়। তাছাড়া মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদটিও পেতে তাকে বেগ পোহাতে হয়নি।
বন্দর উপজেলা, সমাজসেবা কার্যালয়সহ জেলা পরিষদের অনুদানের টাকা ও সরকারি সুযোগ সুবিধা যথেষ্ট ভোগ করেছে।
ওবায়দুল কাদের শিমুকে ৭৫ লক্ষ টাকা মূল্যের একটি ফ্ল্যাটও নাকি তাকে উপহার দিয়েছেন। বিভিন্ন পদের নেতাদের বাগিয়ে আনতে তার রূপ যৌবনের সৌন্দর্যে ফাসিয়ে অনেক ব্যক্তিকে ব¬্যাকমেইলিং করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
দুর্ভাগ্যক্রমে গত ৫ই আগষ্ট আওয়ামী দুঃশাসনের বিদায় ঘটলে রাতারাতি নিজের অবস্থান পাল্টিয়ে চুপসে যায়। কিন্তু আবারও তার পদচারণা বিস্তর করার জন্য প্রভাব বিস্তারের লক্ষে বন্দর থেকে শুরু করে নারায়ণগঞ্জের জেলা ও মহানগরের বেশ কয়েকজন উলে¬খযোগ্য নেতাদের সাথে তার সখ্যতার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই নারীকে কে রুখবে ? এই প্রশ্ন যখন সর্বত্র তখনই মিলল নারায়ণগঞ্জের সাবেক ছাত্রদল নেতা জাকির খানের ঘরে।
ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়েছে শিমু। তবে যে কাউকে আর সহজেই ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো কঠিনতরও হয়ে উঠবে বলে সচেতন মহল মনে করেন।
অন্যদিকে এই আওয়ামী দোসর এবং গণহত্যাকারীদের যারা আগলে রাখছে তাদের ফলাফলও ভয়াবহ হবে বলে বিএনপির কয়েকজন নেতা জানান। আওয়ামী নেত্রী ধোকাবাজ হাসিনা রহমান শিমুকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন বন্দরবাসী।