দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমানের মুকুলের উদ্যোগে বিএনপির নতুন সদস্য ও পুরাতন সদস্য নবায়ন কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দরা। সে সময় তারা বলে ছিলেন আতাউর রহমান মুকুল বিএনপির কেউনা তাই তিনি যে সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি করছেন সেটি করার কোন এখতিয়ার তার নেই। কিন্তু আওয়ামী লীগে যোগাদান করা মদনপুর ফুলহর এলাকার সুবিধাবাদী নেতা মোমেনের বেলায় যেন মহানগর বিএনপি এবং উপজেলা বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মুখে কুলুপ এটেছে।
জানা যায়, যেদিকে বৃষ্টি পড়ে সেদিকেই ছাতা ধরা কিছু মানুষ আছে আমাদের সমাজে। যাদেরকে আমরা এক কথায় সুবিধাবাদী লোক হিসেবে চিহ্নিত করে থাকি। তেমনি নারায়ণগঞ্জের বন্দরেও এমন সুবিধাবাদী এক নেতা হলেন এম.এস মোমেন। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতার ১৫ বছরে তিনি যুবদলের রাজনীতি ছেড়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।
ক্ষমতাকালীন সময় তিনি যুবলীগ নেতা অহিদুজ্জামানের সাথে ব্যবসার অংশীদার হয়ে রাজনৈতিক ফায়দা নিয়ে কোটি টাকার মালিক বনে যান। যুবলীগ নেতা অহিদের ইট ভাটা থেকে শুরু করে সকল ধরনের ব্যবসার দেখভালের দায়িত্ব ছিলো এই মোমেন মিয়ার উপর।
পাশাপাশি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম.এ রশিদের হাতে ফুল দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের পর পরই ক্ষমতাবান হয়ে উঠেছিলেন মোমেন মিয়া। তার আওয়ামী লীগে যোগদানের সংবাদ স্থাানীয় গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচারিত হয়ে ছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময় অন্যের জমি দখল, ভুয়া ওয়ারিশে জমি ক্রয়, ড্রেজার ব্যবসা, বালুর টেন্ডার, রাস্তার কন্টাকটারি অহিদের সহযোগিতায় সকল ধরনের ব্যবসা বাণিজ্যিই চালিয়ে গিয়েছে সে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম.এ রশিদের ক্ষমতাকে ব্যবহার করে তৎকালীন সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের প্রভাবে বেশ কিছু সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বালু ভরাটের কাজ বিনা টেন্ডারে করেছে এই মোমেন।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের দিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাথেই সম্পৃক্ত ছিলেন মোমেন। এমনকি ৪ আগস্ট মদনপুরে ছাত্র জনতার আন্দোলন প্রতিহত করে যুবলীগ নেতা অহিদুজ্জামান অহিদের নেতৃত্বে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অবস্থাান নিয়ে ছিলেন মোমেন।
সেই মোমেন ৫ আগস্টের পর থেকে ফের বিএনপি নেতা বনে গেছেন। নিজেকে যুবদলের ত্যাগী কর্মী হিসেবে উপস্থাাপন করতে একটি গুজামিলের সংবাদ সম্মেলনও করেছিলেন। ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি স্বীকার করেছিলেন যে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেছিলেন।
দলের দু:সময়ে বিএনপি ত্যাগ আওয়ামী লীগে যোগদান করে অর্থবিত্তের মালিক বনে যাওয়া মোমেন পুনরায় বিএনপির সুসময়ে দলে ফিরে আসে স্থাানীয় কিছু বিএনপি নেতাকে ম্যানেজ করে।
মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ সহ মহানগর যুবদলের নেতৃবৃন্দের স্পষ্ট বার্তা নতুন যোগদানে ভাল মানুষ অবশ্যই বিএনপিতে যোগ দিতে পারবে কিন্তু আওয়ামী লীগ ও জাতীয় ঘেষা তাদের দোসররা কোন অবস্থাায় বিএনপিতে যোগদান করতে পারবেনা। তাদের কোন সুযোগ দেওয়া হবেনা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নেতাদের এমন বক্তব্যের সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই। তারা মুখে একরকম বললেও কাজে কর্মে ভিন্নতা দেখাচ্ছে। যারা দলের দু:সময়ে দল ছেড়ে ক্ষমতাসীন দলে যোগ দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর জুলুম নির্যাতন চালিয়ে অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন সেই সকল সুবিধাবাদীদের আবারো দলে বেড়ালে এতে দলের ক্ষতি ছাড়া ভাল কিছু হবেনা। এরা সুযোগ সন্ধ্যানী এরা দলে ভিড়ে শুধু মধু খাওয়ার জন্য। এখনই সময় এদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ভাবে ব্যবস্থাা নিয়ে দলের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা।
এ ব্যাপারে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, যারা অতীতে আওয়ামী লীগের সাথে সম্পৃক্ত ছিল তাদের বিএনপিতে ফেরার সুযোগ নাই। আর এখন যদি তারা সদস্য ফরম বিতরণ করেন তাহলে সেটা গ্রহণযোগ্য হবেনা। বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সেটা গ্রহণ করবেনা।