দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: আমার সময়কালীন সময়েই আমি এই মাদ্রাসায় একটি ভবন নির্মাণ করতে পেরেছি তাই আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। আমার পূর্ব ইতিহাস এ মাদ্রাসার এককালে ছাত্র ছিলাম আমি। মাদ্রাসার ছাত্র হিসেবে আমার ইচ্ছা ছিল যদি কোনদিন সুযোগ আসে আমি দেওভোগ মাদ্রাসায় একটা ভবন নির্মাণ করে দেব। রাজনীতি করি, রাজনীতি আমার নেশা। জামি’আ আরাবিয়া দারুল উলূম নতুন ভবনের উদ্বোধনীয় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বক্তব্যে আনোয়ার হোসেন একথা বলেন। শনিবার (১৬ অক্টোবর) জামি’আ আরাবিয়া দারুল উলূম মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে জামিয়া কার্যনির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন বাচ্চু সভাপতিত্ব উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী ওয়ালী উল্ল্যাহ, মাদ্রাসা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহ নেওয়াজ, মুহতামিম অত্র জামিয়া মাওলানা আবু তাহের জিহাদী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহর আরী চৌধুরী, স্থানীয় মেম্বার শফিউদ্দিন খোকন সরদার, সাবেক দুলাল মেম্বার প্রমুখ। ১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮ তলা ফাউন্ডশনে ১ম তলা সম্পূর্ণ করা হয়। অনুষ্ঠানে আনোয়ার হোসেন বলেন, যে রাজনীতি মানুষের কল্যানে কাজ করে, মানুষকে ভালবাসতে শেখায় আমি সে রাজনীতি করি। মানুষকে ভালবাসা মানুষের কল্যানে কাজ করাটাই আমার নেশা। ছাত্রজীবনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ হয়েছিল। তিনি আমাকে বলেছিলেন রাজনীতিতে আসো, মানুষের কল্যানে কাজ করো, মানুষকে ভালবাসতে শেখ। ছাত্রজীবনে দুর্যোগের মধ্য দিয়েই রাজনীতির জীবন শুরু করেছিলাম। মানুষের দাবী দাওয়া নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। সৎ ও ন্যায় থাকার কারনে নির্যাতিত হয়েছি জেলে গিয়েছি বার বার। কিন্তু কোন সময় অসত্য, অন্যায়ের সাথে আপোষ করি নি। জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনার কাছে আমি বলেছিলাম আমি মানুষের জন্য,কিছু কাজ করতে চাই। একটা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব যদি না দেয়া হয় সেখানে কোন কিছু করা যায় না। সারা জীবন রাজনীতি করেছি জনপ্রতিনিধি হওয়ার বার বার চেষ্টা করেছি। বার বার ব্যর্থ হয়েছি। আল্লাহ নিশ্চয়ই আমার জন্য এমন একটা জায়গা নির্ধারণ করে রেখেছেন যেটা সারা নারায়ণগঞ্জের মধ্যে সবচেয়ে বড় একটা প্রতিষ্ঠান৷ এমপিদের একেকটা এলাকা নির্ধারিত রয়েছে। একটা থানা বা দুটো থানা। আমি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে সারা নারায়ণগঞ্জের পাঁচটা উপজেলার দায়িত্ব আমার রয়েছে। সে পাঁচটা উপজেলার দায়িত্ব নিয়ে আমি কাজ করে যাচ্ছি। একসময় এখানে লেখাপড়া করতাম। ধর্মীয় শিক্ষা এখান থেকে নিয়েছিলাম। ধর্মীয় শিক্ষা নেয়ার ফলেই আমি একসময় নারায়ণগঞ্জের মহাকুমায় কোরআন তেলাওয়াত অনুষ্ঠানে সর্বোচ্চ স্থান অধিকার করতাম। আমি যখন এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বের হয়ে নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুলে যাই সেখানে পাঁচ বছর লেখাপড়া করার সময় আমি প্রতি বছর কোরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগীতায় আমি প্রথম স্থান অধিকার করতাম। মাদ্রাসা আমাকে সে শিক্ষা দিয়েছে। রাজনীতি করতে গিয়ে দীর্ঘদিন কারারুদ্ধ ছিলাম। সেখানে আমরা যখন নামাজ পড়তাম সে নামাজে একসময় আমি যখন আজান দিলাম মুসল্লীরা আমাকে ধরে বসল আমার আজানে সন্তুষ্ট হয়ে আমার ওপর ইমামতি করার দায়িত্ব দিলেন। আমি দীর্ঘ ছয়মাস রাজশাহী জেলে ছিলাম সেখানে আমি ইমামতি করতাম এবং নামাজ পড়াতাম। এগুলো আমার রাজনৈতিক জীবনের শিক্ষা। আমি মানুষকে ভালবাসতে চাই মানুষের কল্যানে কাজ করতে চাই। আমি বিশ্বাস করি মানুষের মধ্যে আল্লাহ বিরাজমান। মানুষকে যদি খুশি করা যয় তাহলে আল্লাহকে খুশি করা যায়। এই জীবন পরে আমার আরেকটি জীবন আছে, সেখানে আমাকে চিরকাল বসবাস করতে হবে। আমি সে শিক্ষা নিয়ে মনে করি আগামী জীবনে শান্তিময় জীবন যাপন করার জন্যই আমি কাজ করে যাচ্ছি। মানুষকে ভালবাসার চেষ্টা করছি৷ মানুষ যেন মৃত্যুর পর বলে আনোয়ার হোসেন ভাল লোক ছিল। পারিবারিক জীবনে যে আমি খুব স্বচ্ছল তা না। একটা মধ্যবিত্ত পরিবারে আমার জন্ম। আমার পরিবার ছোটবেলা থেকে আমাদের লেখাপড়ার দিকে মনোনিবেশ করিয়েছে। এ মাদ্রাসার সভাপতি আমার বড় ভাই করিম সাহেব, তিনি অসুস্থ। আমি আপনাদের কাছে তার সুস্থতা কামনা করে দোয়া করছি। এ মাদ্রাসার ইতিহাস অনেক বড় ইতিহাস। এ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠার সময় আমরা এখানকার ছাত্র ছিলাম। এখানে মাটি এনে আমরা ঘর নির্মাণ করেছিলাম। আজকে চতুর্দিকে বিল্ডিং হয়েছে আমিও একটি ভবন করে দিলাম। আল্লাহ যদি আমাকে তৌফিক দেয়, বাঁচিয়ে রাখে, আবার যদি এ জেলা পরিষদে আসার সুযোগ দেয় তাহলে নিশ্চয়ই আমি আরেকটি দোতলা ভবন নির্মাণ করে দেব। কারন আমি এ মাদ্রাসার ছাত্র আমার এ মাদ্রাসার প্রতি দরদ বেশি। আমি মাদ্রাসার জন্য কিছু করে গেলে ইহকাল ও পরকালে ভাল থাকব। শুধু মাদ্রাসার কাজে সীমাবদ্ধ নয়, আমি নারায়ণগঞ্জে বেশ কয়েকটি মসজিদ নির্মাণ করেছি। মসজিদের সৌন্দর্য বর্ধনের কাজও করেছে অনেক। হসপিটাল ভবন ও স্কুল ভবন নির্মাণ করে দিয়েছি। ডায়বেটিস হসপিটালের ডায়ালিসিস মেশিন কেনার জন্য চল্লিশ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছি। কিছু দিনের মধ্যে হয়ত সেটা উদ্বোধন করা হবে। এভাবে শুধু নারায়ণগঞ্জে নয় আড়াইহাজার রুপগঞ্জ সোনারগাঁও সহ বিভিন্ন জায়গায় আমি কাজ করে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে আমার সোনারগাঁওয়ে চারটা মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা আনার রয়েছে, বরাদ্দ হয়েছে। আমি মনে করি আমাদের মা বাবা বুড়ো হয়ে গেলে অনেক সন্তান তাদের লালন পালন করে না তাদের বৃদ্ধা আশ্রমে আশ্রয় নিতে হয়। সে বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠার জন্য আমি দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছি। আড়াইহাজারে বৃদ্ধাশ্রমের কাজ চলমান আছে। আড়াইহাজারে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি নির্মান করে দিয়েছি ঈদগাহ ও নির্মান করে দিয়েছি। রুপগঞ্জে উন্নত মানের ডাক বাংলা নির্মাণ করে দিয়েছি। |