দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ জামালপুরের ইসলামপুরে হযরত শাহ কামাল জেনারেল হাসপাতালে ভুল সিজারে প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
ইসলামপুর-জামালপুর বাইপাস সড়কে স্থাপিত হযরত শাহ কামাল (রঃ) জেনারেল হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনে প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় আত্মগোপনে রয়েছে ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত হাড় ভাঙ্গা, হাটু ব্যাথা, কোমড় ব্যাথ্যা, বিভিন্ন জোড়ায় ব্যাথ্যা, বাতরোগ বিশেষজ্ঞ অর্থোপেডিক ও ট্রমা সার্জারী কনসালটেন্ট ডাঃ মুমিনুল ইসলাম (মুন্না)।
জানা যায়, গত ১৯ জুলাই কুলকান্দি ইউনিয়নের মাহবুব রহমানের স্ত্রী ইসলামপুর পৌর এলাকার দক্ষিণ গাঁওকুড়া গ্রামের আব্দুলাহর মেয়ে আসমাউল হুসনা (২৩) গর্ভবতী অবস্থায় ব্যাথ্যা অনুভব করলে আসমাউল হুসনার বাবা আব্দুলাহ হাসপাতালের পরিচালক মাইনুল ইসলামের ছেলে মেহেদী হাসান কে জানালে সে বলে আমাদের হাসপাতালে নিয়ে আসেন সিজার করানোর জন্য ভালো ডাক্তার রয়েছে।
এ কথা শুনে আব্দুল্লাহ ও তার মেয়ে জামাই মাহবুব তড়িঘড়ি করে হযরত শাহ কামাল (রঃ) জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে আসমাউল হুসনাকে সিজার করার জন্য ভর্তি করান। ভর্তি করার পর সিজারের জন্য তাদের সাথে সাড়ে চৌদ্দ হাজার টাকায় সিজারের জন্য চুক্তি করে। চুক্তি হওয়ার পর কোন রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত হাড় ভাঙ্গা, হাটু ব্যাথা, কোমড় ব্যাথ্যা, বিভিন্ন জোড়ায় ব্যাথ্যা, বাতরোগ বিশেষজ্ঞ অর্থোপেডিক ও ট্রমা সার্জারী কনসালটেন্ট ডাঃ মুমিনুল ইসলাম (মুন্না) ও ম্যানেজার মাহফুজ এনেসস্থেথিয়া দিয়ে সিজার অপারেশন করান ।
সিজার শেষে স্বামী মাহবুব হাসপাতালের কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেনকে বলেন, আমার রোগীর যদি ১% সমস্যাও থাকে তাহলে বলেন, আমরা তার উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাবো। কিন্তু মনোয়ার হোসেন বলেন, কোন সমস্যা নাই রোগী ভালো আছে। পরে সকাল ১১টার দিকে আসমাউল হুসনার অবস্থা খারাপ দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাড়াতাড়ি রোগীকে রিলিজ দিয়ে বলেন, দ্রæত ময়মনসিংহ হাসপাতালে নিতে হবে। পরে রোগীকে নিয়ে ময়মনসিংহ হাসপাতালের দিকে রওনা হলে পথিমধ্যে প্রসূতি আসমাউল হুসনার মৃত্যু হয়।
হাসপাতালে বারবার ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে চিকিৎসার নামে চলছে হত্যা!
পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ডাঃ মুমিনুল ইসলাম মুন্নার ভূল চিকিৎসায় মারা যায় আসমাউল হুসনা। এ ঘটনার পর থেকে ডাঃ মুমিনুল ইসলাম মুন্না আত্মগোপনে রয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে বারবার ফোন দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
সচেতন মহলের অভিযোগ, একজন হাড় ভাঙ্গা, হাটু ব্যাথা, কোমড় ব্যাথ্যা, বিভিন্ন জোড়ায় ব্যাথ্যা, বাতরোগ বিশেষজ্ঞ অর্থোপেডিক ও ট্রমা সার্জারী কনসালটেন্ট কিভাবে সিজার করান। অভিযোগ আছে ইতিপূর্বেও এ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় উপজেলার চিনাডুলী ইউনিয়নের গিলাবাড়ী এলাকার দরিদ্র তাজুল ইসলাম দম্পত্তির নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসার নামে মৃত্যুর রাজ্যে পরিণত করেছেন বলেও অভিযোগ করেন।
তারা আরোও বলেন- দীর্ঘদিন যাবত ওই ডাক্তার ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে কর্মরত থেকে অর্নার বোর্ড ও প্রেসক্রিপশনে ২৫০শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, জামালপুর উল্লেখ করে সেবার নামে ব্যবসা করছেন।
হযরত শাহ কামাল (রঃ) জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক জানান-সিজারের পরে প্রেসার আপ-ডাউন করায় আমরা দ্রæত তাদের ময়মনসিংহ হাসপাতালে নিতে বলি।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ এ.এ.এম. আবু তাহের বলেন, একজন হাড় ভাঙ্গা, হাটু ব্যাথা, কোমড় ব্যাথ্যা, বিভিন্ন জোড়ায় ব্যাথ্যা, বাতরোগ বিশেষজ্ঞ অর্থোপেডিক ও ট্রমা সার্জারী কনসালটেন্ট ডাক্তার কখনই সিজার অপারেশন করাতে পারে না। এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ওই হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন। তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রসূতি মায়ের মৃত্যু ঘটনার পর অভিযুক্ত ডাঃ মুমিনুল ইসলাম (মুন্না)কে ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডিউটি করতে দেখা যায়নি।