দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: নারায়ণগঞ্জ জেলার আওতাধীন এনায়েত নগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৮ নং ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা আব্দুল গাফ্ফার। যার নামের সাথে রয়েছে আলোচনা ও সমালোচনা দুটোই। তবে বিএনপি জামাত জোট সরকার আমলে যার অবদান কখনই ভুলার নয়। রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে যার ভূমিকা ছিলো দেখার মত।
এক সাক্ষাৎকারে যুবলীগ নেতা আব্দুল গাফ্ফার বলেন, আমাদের পরিবারে ৬ বোন আর আমি। আমার বাবা মরহুম আব্দুল মোতালেব ছিলেন একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। বাবা মার একমাত্র ছেলে হওয়ায় ছোট বেলা থেকেই আমি ছিলাম একটু দুষ্টু প্রকৃতির। যেখানেই মাইকে বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠ শুনতাম চলে যেতাম।
কারন অনেকের কাছে শুনেছি এদেশের খেটে খাওয়া মানুষের আপন জন ছিলেন তিনি। অসহায় মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করতে গিয়ে বহুবার পরিবার পরিজন ছেড়ে কারাবরন করতে হয়েছে তাকে। শুনেছি সেই কালো রাতের কথা। যে রাতে স্বপরিবারে তাকে হত্যা করেছিলো ঘাতকরা। এরপর থেকেই আমি তার আর্দশে অনুপ্রানিত হয়ে পরি। আর সেই আদর্শে অনুপ্রানিত হয়ে কখন যে রাজনীতিতে পা রাখি সেটা বলতে বুঝতে পারিনি।
বাবার শাসন আর মায়ের ভালবাসায় আমার বেড়ে উঠা। সেই সুবাধে পড়াশোনা বেশি করতে পারিনি। ৮ শ্রেনী পযর্ন্ত পড়াশোনা করে বাবার ব্যবসা দেখা শোনার কাজে লেগে পরি। প্রায় ৬ বছর ব্যবসা দেখাশোনা করে বাবার অনেক প্রশংসা কুড়িয়েছি। খুশি হয়ে বাবা তার চট্রগ্রামের তার ব্যবসা দেখাশোনার দায়িত্ব দিলেন। ব্যবসা দেখা শোনার পাশাপাশি রাজনীতিত্বে সক্রিয় হয়ে পরি।
প্রায় ১২ বছর চট্রগ্রামের ব্যবসা দেখাশোনা করার পর বাবা আমাকে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে আসে। কারন বাবা লক্ষ্য করে দেখেন ব্যবসার পাশাপাশি আমি রাজনীতিতে বেশি ঝুকে পড়েছি। তাই তিনি নারায়ণগঞ্জে আমাকে আলাদা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করে দিলেন। তৎকালিন সময় আমি পঞ্চপঠ্ িশাসনগাঁও সানরাইজ রি রোলিং মেইলস এর পাটনার হয়ে ব্যবসা শুরু করি।
কিন্তু রাজনৈতিক কারনে আমি ব্যবসায় অমনোযোগী হয়ে পড়ায় ব্যবসা ছেড়ে দিতে বাধ্য হলাম। বাবা অনেক চেষ্টা করেছেন আমাকে রাজনীতি থেকে ধুরে রাখতে। কিন্তু তার কোন চেষ্টাই আমাকে ফেরাতে পারেনি। পরবর্তীতে বাবার নির্দেশে তৎকালিন পৌর শ্মশান (বর্তমান সিটিকর্পোরেশন শ্মশান) এর পাশে আমাকে ইট, বালু, সিমেন্ট, রড এর ব্যবসা দিয়ে দিলেন। যেটার বয়স প্রায় ২৫ বছর হলেও এখনও চলমান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমানের নির্দেশে আমি বিএনপি জামায়াত জোট সরকার পতন আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহন করি। এর অপরাধে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্দ করে দিয়েছিলো স্থানীয় বিএনপি নেতারা। অনেক কষ্টে আবার ব্যবসা চালু করেছিলাম।
তিনি আরও বলেন, আমি রাজনীতি করি বঙ্গবন্ধুর আর্দশে অনুপ্রানীত হয়ে সাংসদ শামীম ওসমান ও তার আস্থাভাজন মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম ভাইয়ের নেতৃত্বে। আমি কখনই অর্থের লোভে পড়ে ঝুট সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, ভূমিদস্যুতা করিনি। কারন আল্লাহর অশেষ রহমতে আমার বাবা আমার জন্য অনেক কিছু রেখে গেছেন। আমি কিছঠু পাওয়ার জন্য রাজনীতি করি না। আমি জনগনের সেবার জন্য রাজনীতি করি।
বৃহত্তর মাসদাইর এলাকায় আমার বিষয় কোন অপকর্মের তথ্য আপনারা পাবেন না। দলীয় কর্মসূচি গুলোতে আল্লাহর রহমতে কারো সহযোগীতা ছাড়াই করে যাচ্ছি। এই কর্মসূচি গুলো কতটা সফল হয়েছি তা আমি নিজে বলবো না। সেটা আমার চেয়ে ভাল বলতে পারবে আমার সিনিয়র নেতৃবৃন্দরা।
তবে তাদের ভাষ্যমতে বৃহত্তর মাসদাইর এলাকায় আমার মত এতো বড়কর্মসূচি আর কেউ করতে পারেনি। যারফল শ্রুতিতে আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা আমাকে নিয়ে বিভিন্ন সময় স্থানীয় মিডিয়ার মাধ্যমে নানা সমালোচনা করে থাকেন।
তিনি আরও বলেন, আমার রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ও আমার বন্দু সৈনিক লীগের সভাপতি মোকলেছকে হত্যা করে সেই মামলায় আমাকে ফাসানো হয়েছে। সেই সাথে আমার বন্দু মিজানকেও এই মামলায় আসামী করা হয়েছে। মিথ্যা মামলায় আমরা কারাগারে ছিলাম।
অথচ দুঃখজনক হলেও সত্যি মোকলেছকে হত্যা করার পর আমি আর মিজান সর্বপ্রথম নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছিলাম। এই হত্যার বিচারের দাবিতে। আমি যখন জানতে পারলাম এই মামলায় আমাকে আসামী করা হচ্ছে তখনও আমি পালিয়ে যাইনি। কারন আমি জানি আমি নির্দোষ। সত্য ঘটনা একদিন উদঘাটন হবে। তখন প্রকৃত খুনিরা আইনের আওতায় আসবে।
আমাকে যখন এই মামলায় গ্রেফতার করা হয় তখন আমার বাবা অসুস্থ হয়ে বিছানায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। আমি দুই মাস ১০ দিন পর যখন জেল থেকে মুক্তি পেলাম এর ঠিক ২৫ দিন পর আমার বাবা দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে পরপারে চলে গেছে। আজ আমি এতিম মা-বাবা কেউ নেই। রাজনীতিতে এসে শুধু হারিয়েছি পাইনি কিছুই। তবুও চেষ্টা করে যাচ্ছি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে লালন করে মানুষের সেবা করার। জীবনের শেষ মুহুর্ত পযর্ন্ত করে যাবো।
মোকলেছ হত্যার বিয়ষ তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের প্রশাসন খুবই চৌকষ তাদের হাত থেকে কোন অপরাধী পার পায়নি। আমার বিশ্বাস মোখলেছ হত্যার সাথে যারা জড়িত তারা একদিন আইনের আওতায় আসবেই। সেই দিন বেশি ধুরে নয়। কারন কেউ যদি কোন অপরাধ করে আল্লাহ দুনিয়াতে সেই অপরাধের শাস্তি দিয়ে দেন।
রাজনীতির বিষয় তিনি বলেন, রাজনীতিত্বে বেশির ভাগ সময় দলের প্রকৃত ও দুঃসময়ের নেতারা প্রতিহিংসার শিকার হয়ে থাকে। আমি কখনই বলবো না আমি দলের প্রকৃত ও দুঃসময়ের নেতা। সেটা বিচার করবে আমার সিনিয়র নেতৃবৃন্দরা। আমি ধন্যবাদ জানাই ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফুল্লাহ বাদল ও সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী কাকাকে।
আমরা যখনই কোন সমস্যায় পড়ি তখনই তারা আমাদের বট গাছের মত ছায়া দেন। গত কয়েক দিন আগে আমার বড় ভাই রঞ্জিত মন্ডলের সাথে একটি অপশক্তি আমাকে নিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করেছিলো। যা স্থানীয় মিডিয়াতে প্রকাশিত হয়েছে।
রঞ্জিত মন্ডল ও মতিপ্রধান তারা দুইজন আমার সিনিয়র নেতা তারা যেই ভাবে দিক নির্দেশনা দেন আমরা সেই ভাবে কাজ করার চেষ্টা করি। তারা কখনই আমাদের খারাফ চাননি। তারা আমাদের এলাকার মুরুব্বী এবং রাজনৈতিক দিকনির্দেশক। তাদের নেতৃত্বে বৃহত্তর মাসদাইর এলাকায় রাজনীতি করছি এবং ভবিষ্যত্বেও করবো।