মফস্বলের একজন দলপ্রেমি নিবেদিত মাঠকর্মী আমি।মনেপ্রাণে ভালোবাসি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিকে।দলের সাম্প্রতিক সময়ের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খায় আমার মাথায়।
এসব দেখে আমি অনেকটা নিশ্চুপ-নীরব।বলতে চেয়েও বলতে পারি না।
বললে নানা প্রশ্নবাণে জর্জড়িত হতে হবে।আর হওয়াটা স্বাভাবিক।এসব নিয়ে ঘাটাঘাটি করে কিছু বললে অনেকেই বলবে,তুমি যদি এত বোঝ-এত বিশ্লেষণ করো তাহলে কেন্দ্রের নেতারা দায়িত্বে না থেকে সে দায়িত্বে তোমাকে নেয়া হতো।
আর তারা থাকতেন তোমার অবস্থানে।সুতরাং তারা তোমার থেকে ভালো বোঝেন।যা করেন দলের ভালোর জন্য করেন।
এসব প্রশ্নবাণে জর্জড়িত হওয়ার আশঙ্কা নিয়েও কিছু না লিখে থাকতে পারলাম না বলে এই আমার আজকের ক্ষুদ্র প্রয়াস।
যে সংসদ অবৈধ সে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার প্রয়োজনটা কি।অবৈধ সংসদের সংসদ সদস্য হিসেবে ন্যামভবনের এম.পি হোস্টেলে থাকা,সরকারি গাড়ি ব্যবহার করাসহ সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করা কতটা যুক্তিগত?মধ্যরাতের সংসদ-অবৈধ সংসদ অথচ সেই সংসদীয় সরকারের অধীনে বগুড়া উপ-নির্বাচনে অংশ নেয়াটার দরকার কি ছিলো। যদি বগুড়া উপ-নির্বাচনে দল অংশ নিবে তাহলে দলীয় প্রতীকে বিএনপি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিলো না কেন।
বর্জন করলে সকল প্রকার নির্বাচন বর্জন করা উচিত নয় কি?মাঝপথে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রার্থীরা দল থেকে বহিষ্কার হন।পরবর্তীতে তাদেরকে দলে ফিরিয়েও নেয়া হয়েছে। সংসদ অবৈধ তারপরেও সংরক্ষিত আসনে মাত্র একজন নারী প্রতিনিধিকেও পাঠাতে হয়েছে বিএনপির।
একটু পিছনের দিকে গেলে দেখা যাবে ২০০১ সালে বিরোধী দল আওয়ামী লীগ পেয়েছিলো ৯টি সংরক্ষিত আসন। তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন,আমার দলে ৫০-১০০ জন যোগ্য নারী নেত্রী আছে।সেখান থেকে আমি কাকে রেখে কাকে বাছাই করব ওই ৯ জনের তালিকায়।সুতরাং আওয়ামী লীগ কাউকেই সংরক্ষিত আসনের প্রতিনিধি হিসেবে সংসদে পাঠাবে না।
আমাদের যদি এতই সংরক্ষিত আসনের প্রতিনিধি পাঠানো জরুরি ছিলো সেক্ষেত্রে নিখোঁজ বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম.ইলিয়াস আলীর সহধর্মিণী বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা কিংবা বিএনপির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মরহুম নাসিরউদ্দিন পিন্টুর সহধর্মিণী নাসিমা আক্তার কল্পনাকে পাঠানো হলে মনকে অন্ততপক্ষে সান্ত্বনা দেয়া যেতো নিষ্ঠুর রাজনীতির করুণ পরিণতির শিকার ইলিয়াস আলী আর দলের জন্য জীবন উৎসর্গকারী পিন্টু ভাইয়ের সহধর্মিণীকে সংসদে পাঠিয়েছে বিএনপি। যাদেরকে দেখে শাসকলীগের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-এমপিদের মনে পড়বে তাদের আতঙ্ক,জাতীয় বীর ইলিয়াস-পিন্টুর কথা।
তিক্ত হলেও সত্য বিএনপিতে ত্যাগী-ভালো নেতা-নেত্রীরা উপেক্ষিত হয় সবসময় দলীয় ফোরামে নয় নির্বাচনে মনোনয়ন লাভে।
সন্ধ্যায় বিএনপিতে যোগ দিয়ে রাতে ধানের শীষের টিকিট লাভ করেন গোলাম মাওলা রনি।আর সেই করুণ দৃশ্য নীরব-নির্বিকার হয়ে দেখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাসান মামুন।
দলের কর্মসূচি বাস্তবায়নে জীবনের ঝুঁকি নেয়া নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামালের ভাগ্যে জুটেনি দলের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে দেয়া মনোনয়ন সংক্রান্ত চিঠিও। অথচ সারা দেশে প্রত্যেকটি আসনে একাধিক ব্যক্তিকে দেয়া হয়েছিলো চিঠি।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্ত করতে না পারা আমাদের দুর্ভাগ্য।দলের শীর্ষস্থানীয় নেতার মুখের এমন অমৃতবচনে দুর্বল হয়ে পরেছে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মনোবল॥ মাহবুব আহম্মেদ রুমন, সিলেট থেকে।