নারায়ণগঞ্জ মহানগরের ১নং ওয়ার্ডে একজন সরকারি কর্মচারীর বহুতল ভবন রক্ষা করার জন্য আটকে গেছে একটি রাস্তার কাজ। ১২ ফুট প্রশস্থ রাস্তার টেন্ডার হলেও ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর ফারুকের কারসাজিতে রাস্তাটির কাজ হচ্ছেনা বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
জানা গেছে, এলাকাবাসীর আবেদনের প্রেক্ষিতে নাসিক ১ নং ওয়ার্ডের পাইনাদী নতুন মহল্লা এলাকায় চার’শ ফুট দীর্ঘ রাস্তাটি ১২ ফুট প্রশস্থ করার জন্য টেন্ডার আহবান করে সিটি কর্পোরেশন। মেসার্স কামাল ট্রেডার্স ওই রাস্তার কাজের টেন্ডার পায়।
স্থানীয়দের আবেদন গুরুত্বদিয়ে মেয়র ডা.সেলিনা হায়াৎ আইভী আন্তরিক হয়ে টেন্ডারের মাধ্যমে রাস্তাটি করার ব্যাবস্থা করেন। কিন্ত রাস্তাটি ১২ ফুট প্রশস্থ করতে হলে সরকারি কর্মচারী মো: রফিকুল ইসলামের ৩০২ নং ভবনের ২ ফুট বারান্দা ভাঙ্গা পড়ে। রফিকুল ইসলামের বাড়িটি রক্ষা করতে ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর ফারুক রাস্তার কাজে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়।
তিনি রাস্তাটি ১০ ফুট করার পক্ষে মত দেন। রাস্তাটি ১০ ফুট করলে রফিকুল ইসলামের বাড়ী ভাঙ্গতে হবেনা। তাই কাউন্সিলর ফারুক মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে মেয়রকে নয় ছয় বুঝিয়ে ১২ ফুটের পরিবর্তে রাস্তাটি ১০ ফুট করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীর পক্ষে রাস্তার আবেদনকারী হাজি চাঁনমিয়া জানায়, এই রাস্তার পাশে ২ টি স্কুল, ৩ টি মাদ্রাসা রয়েছে। রাস্তাটি দিয়ে বহু লোকজন চলাচল করে। একটি রিকশা প্রবেশ করলে আরেকটি রিকশা ওভারটেক করতে পারেনা। তাই সময়ের প্রেক্ষাপটে রাস্তাটি ড্রেনসহ ১২ ফুট করা অত্যন্ত প্রয়োজন। তাই জনবান্ধব মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী রাস্তাটি ১২ ফুট করার আবেদন মঞ্জুর করে টেন্ডার আহবান করেছিলেন।
শুধুমাত্র ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর ফারুক আর্থিক সুবিধা পেয়ে বাংলাদেশ রপ্তানী উন্নয়ন বোর্ডের পিয়ন জামায়াত পন্থি রফিকুল ইসলামের বাড়ি রক্ষার জন্য রাস্তাটি ১২ ফুট করতে ইচ্ছুক না। সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশলী সুমন দেবনাথ এর উপস্থিতি গত কয়েকদিন আগে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে একজন ও এলাকাবাসীর পক্ষে একজন সার্বিয়ার মাপ ঝোপ করে রাস্তার দুপাশে ২ ফুট করে ছাড়ার জন্য দাগ দেয়। তখন রফিকুল ইসলামসহ অন্যরাও এই সিদ্ধান্ত মেনে নেয়। তার পরও ১২ ফুট রাস্তা করতে কাউন্সিলর ফারুকের অপত্তি রহস্যজনক।
হাজি চাঁনমিয়া আরো জানায়, রফিকুল ইসলাম রাজউক এর প্লান ছাড়াই বাড়ি নির্মাণ করার সময় বাঁধা প্রদান করা হয়েছিল। বাঁধা না মানায় রাজউক চেয়ারম্যান, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সরকারি জমি দখল করায় ভবনটি নির্মাণ করার সময় পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কোন সরকারি দপ্তর তখন যথাযত প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়নি। যে কারণে এখন এই বাড়িটি এলাকাবাসীর ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ বিষয়ে রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমিও চাই রাস্তা হোক। সবাই যদি তাদের বাড়ি ভেঙ্গে রাস্তার জন্য জায়গা ছাড়ে আমি আমার ভাড়ি ভেঙ্গে ২ ফুট ছেড়ে দিব। তবে এই রাস্তাটি ১২ ফুট করার কোন প্রয়োজন নেই বলেও তিনি জানান।
কাউন্সিলর ওমর ফারুকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।