দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ নাটোরে এক তরুণীর বিরুদ্ধে সহজ-সরল মেয়েদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে সমকামিতায় যুক্ত করাসহ এক স্কুলছাত্রীকে গ্যাস ট্যাবলেট খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই স্কুলছাত্রীর বাবা হত্যা মামলা দিতে গেলে নেয়নি নাটোর থানা পুলিশ।
শনিবার দুপুরে নাটোর ইউনাইটেড প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ অভিযোগ করেন নাটোর শহরের চৌধুরী বড়গাছা মহল্লার মৃত ওই স্কুলছাত্রীর বাবা। পরে প্রেসক্লাবের সামনে ওই স্কুলছাত্রী হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নাটোর শহরের এক তরুণী তার বন্ধুদের নিয়ে টিকটক ভিডিও তৈরি করে নিজেকে রুপস ভাই বলে পরিচয় দেন। নিজেকে নাটোরের টিকটক অপু ভাই বলে জাহির করা ব্যক্তিটি আসলে একজন নারী। তার কাজ হলো নিজেকে সুদর্শন পুরুষ দাবি করে স্কুল-কলেজগামী ছাত্রীদের প্রেমের প্রস্তাব দেয়া।
নিজেকে ধনীর সন্তান হিসেবে পরিচয় দিয়ে দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের বিলাসী জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে প্রেমের প্রস্তাব দেন তিনি। এছাড়া কখনও বাংলাদেশ জুটমিল করপোরেশন বিজেএমসি’র অফিসার হিসেবেও পরিচয় দেন তিনি। তাতেও কোনো মেয়ে রাজি না হলে ওই তরুণী নিজের দুই হাত কেটে এবং বিষ খেয়ে প্রমাণ দিতেন যে তিনি খাঁটি প্রেমিক।
আপাদমস্তক নারী হলেও চলনে, বলনে, পোশাকে সুদর্শন পুরুষ মনে হতো তাকে। অনেক মেয়েই তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছে। একপর্যায়ে নারীত্বের বিষয়টা জানতে পেরে তাকে ছেড়েও গেছে। কিন্তু এরই মধ্যে ক্ষতি যা হওয়ার হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ওই ব্যক্তি আরও বলেন, পাঁচ মাস আগে তার ছেলের সঙ্গে ওই মেয়েটির বোনের বিয়ে হয়। সম্পর্কে বিয়াইন হওয়ার সুযোগে মেয়েটি তার মেয়েকে সমকামিতায় যুক্ত করেন। এরপর গত ১৬ আগস্ট রাতে সবার অগোচরে আমার মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায় ওই মেয়েটি।
পরদিন সোমবার (১৭ আগস্ট) ওই মেয়েটির বাবা আমার স্ত্রীকে ফোন করে জানান, আপনার মেয়েকে পাওয়া গেছে। আমার বাসায় এসে নিয়ে যান। তৎক্ষণাৎ আমার স্ত্রীসহ তিনজন আত্মীয় তাদের বাসায় যায়। সেখানে গিয়ে তারা দেখতে পায় আমার মেয়েকে মারধর করছে। তারা মেয়েকে রক্ষা করতে গেলে বাসায় ঢুকতে দেয়া হয়নি।
এ সময় ওই মেয়েটির বাবা বলেন, থানা থেকে অভিযোগ প্রত্যাহার করে এসে মেয়েকে নিয়ে যান। একপর্যায়ে ওই মেয়েটি এসে জোর করে আমার মেয়ের মুখে গ্যাস ট্যাবলেট ঢুকিয়ে দেয় এবং নিজেও খায়। এরপর অবস্থার অবনতি হলে আমার মেয়েকে প্রথমে নাটোর আধুনিক হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে তাকে রামেক হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন বিকেলেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রাজপাড়া থানায় পুলিশ ইউডি মামলা করেছে।
মেয়েটির বাবা অভিযোগ করে বলেন, এ ঘটনায় নাটোর থানায় হত্যা মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। তারা বলেছে, পোস্টমর্টেম রিপোর্টের পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে নাটোর থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) আব্দুল মতিন বলেন, এ ধরনের অভিযোগ নিয়ে নাটোর থানায় কেউ আসেনি। তবে রাজাপাড়া থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে। মামলা না নেয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।