দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: আসন্ন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন এখন সর্ব মহলেই আলোচনার বিষয়। কে হচ্ছে আগামী দিনে নগরবাসীর কর্ণধার। সেই সাথে রাজনৈতিক মহলে একটাই প্রশ্ন নির্বাচনে ভোটের লড়াইয়ে আসবে কি বিএনপি। নাকি ফাঁকা মাঠেই জয়ের মালা গলায় পরবে আওয়ামী লীগ। সব কিছুই জনসম্মুখে পরিষ্কার হতে লাগবে আরও কিছুটা সময়।
তবে, বিএনপির হাই কমান্ড বার বার ঘোষনা দিচ্ছেন বর্তমান নির্বাচন কমিশনারের অধিনে আর কোন নির্বাচনে অংশগ্রহন করবেন না তারা। যার কারনে দলটির অনেক সিনিয়র নেতার নির্বাচনে অংশগ্রহনের ইচ্ছা থাকলেও প্রকাশ্যে এখনও কিছু বলছেন না তারা। এমনটাই ধারনা সচেতন মহলের। তবে নির্বাচনের মাঠে ভোটের লড়াইয়ের ইমেজ ধরে রাখতে হলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই দলের নেতাদের থাকাটা এখন সময়ের দাবি।
এদিকে, বর্তমান মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী ঘোষনা দিয়েছেন এবারো তিনি প্রার্থী হবেন। দল যদি তাকে সমর্থন দেন তাহলে আগামী নির্বাচনে ভোটের লড়াইয়ে মাঠে থাকছেন। আর যদি সমর্থনের তালিকায় তিনি না থাকেন তাহলে যাকে দল চাইবে তার পক্ষ হয়ে কাজ করার ঘোষনাও দিয়েছেন।
তবে উত্তর ও দক্ষিন মেরুর বিভাজনের দাগটা কিন্তু এখনও প্রকাশ্যে। উত্তর মেরুর কর্ণধান ওসমান পরিবার এখনও তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষনা করেননি। শেষ বেলায় যদি দল উত্তর মেরুর কোন নেতাকে সমর্থন দেয় মেয়র আইভী কি তার পক্ষ নিয়ে মাঠে থাকবেন নাকি ভোটের লড়াইয়ে সূচনা হবে নতুন সমিকরনের। সেটার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছু দিন।
অন্যদিকে, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে বিএনপির পক্ষ থেকে যখন সব নেতারাই নির্বাচনে অংশগ্রহনের তালিকা থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয়ার কৌশল অবলম্বনে ব্যস্ত। ঠিক তখনই একাই ভোটের লড়াইয়ে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এ্যাড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু।
ইতিমধ্যেই তিনি নারায়ণগঞ্জের আওয়ামীলীগের উত্তর ও দক্ষিন মেরুর নানা ব্যর্থতার বিষয় মিডিয়াতে জাহির করছেন। শুরুতে তার নির্বাচনে অংশগ্রহনের বিষয়টি নিয়ে সর্বমহলে নানা আলোচনা ও সমালোচনার কারন হলেও। বর্তমান তিনি একাই নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে প্রকাশ্যে মাঠে রয়েছেন।
তিনিও ঘোষনা দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহন করলে দলের সমর্থন চাইবেন। দল যদি তাকে সমর্থন দেন তো ভাল আর যদি তাকে না দিয়ে অন্য কাউকে দেন সেটাও তিনি মেনে নিবেন। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে তিনি এক পাও নড়বেন না। দল কি সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহন করবেন কিনা, সেই সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে দলের জান্ডা হাতে নিয়ে বিএনপির অবস্থান ধরে রাখতেই তিনি বদ্ধপরিকর।
তিনি আরও জানান, আমার এই লড়াই শুধু আওয়ামী লীগের সাথে নয়, দলের মধ্যে ঘাপটি মেরে বসে থাকা ক্ষমতাশীনদের দালালদের বিরুদ্ধেও। বিগত সিটি নির্বাচনের মত যেন কেউ দলের সমর্থন নিয়ে বৈঈমানী না করে। আমার এই যুদ্ধ তাদের বিরুদ্ধেও। দল আমাকে সমর্থন দেক বা না দেক কোন আতাঁত কারীকে দল থেকে সমর্থন নিতে আমি দিবো না।
কর্মীরা মাঠে থেকে জেল জুলুমের শিকার হবে আর তারা ঘরে বসে ক্ষমতাশীনদের টাকায় হালুয়া রুটি খাবে। এবারের নির্বাচনে সেই সুযোগ আর দেয়া হবে না। দল যদি নির্বাচনে আসে আর আমাকে সমর্থন না দিয়ে দালাল ছাড়া দলের যাকেই সমর্থন দিবে আমি তার হয়ে দলের প্রয়োজনে কাজ করবো।
এদিকে, নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে ৩ বারের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী উন্নয়নের ধারাকে সামনে রেখে সামনে রেখে প্রার্থী হওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন। সেই সাথে চেয়েছেন দলের সমর্থন। দল তাকে সমর্থন করলেও দলের বাইরের ভোটারদের কতটুকু মন জয় করতে পারবেন সেটাও এখন দেখার বিষয়। তবে শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহন না করলেও তাদের ভোট যাবে না আইভীর ঝুলিতে। কারন বিএনপির কার্যালয় ভেঙ্গে ঘর ছাড়া করায় নেতাকর্মীদের কিছুটা ক্ষোভ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তাই এবার নির্বাচনে বিএনপির ভোট যাচ্ছে না আইভীর ঝুলিতে বলে ধারনা করছেন দলটির স্থানীয় নেতারা।