দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল একজন রাজাকার পুুত্র, ভূমিদস্যু, স্থানীয় প্রভাবশালী দুই সাংসদের চেয়েও সর্বক্ষমতার অধিকারী সহ তার নানা অপকর্মের বিষয় ধারাবাহিকতার সহিত বিভিন্ন সভা সমাবেশে বেশ জোড়েসোড়ে তুলে ধরছেন বর্তমান নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী।
যা স্থানীয় মিডিয়াতে নানা আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বইছে। তবে এসব বিষয় গুলোর নিয়ে তেমন কোন প্রতিকৃয়া দেখা যায়নি কাজলের। তার এই নিরবতার কারনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে সর্ব মহলেই।
তবে সব আলোচনা-সমালোচনা ও নানা প্রশ্নের ধু¤্রজালকে কাজল নিজের মেধা কাজে লাগিয়ে হাস্যোজ্জ্বলপন্থায় সকলের কাছে পরিষ্কার করে দেয়ার পাশাপাশি ভদ্র কায়দায় আইভীকে ধুয়ে দিলেন তিনি। সেই সাথে মেয়র আইভীর বিরুদ্ধে সরাসরি কিছু না বললেও কৌশলতা অবলম্বন করে নানা ইঙ্গিত দিয়ে নতুন মেরুর সূচনা করলেন সর্বমহলে।
রোববার ৩ অক্টোবর স্থানীয় একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে সমসাময়িক বিষয় আলোচনার সময় ভিডিও সহ উঠে এসেছে সে সব বিষয় গুলো।
পাঠকদের সুবিদার্থে হুবুহু তুলে ধরা হলো,
সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী গত শনিবার বন্দরে গিয়ে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও সাবেক জাতীয় শূট্যার খালেদ হায়দার খান কাজল সম্পর্কে কুরুচিকর বক্তব্য দেয়ার পর ফুঁেস উঠেছেন নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী সমাজ।
নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্বার্থরক্ষ্যা বিভিন্ন সুবিধা আদায়ে খালেদ হায়দার খান কাজলকে নিয়ে মেয়র আইভীর ঐ কুরুচিকর ও অশালীন মন্তব্যে সবাই ক্ষুব্ধ হলেও খোদ কাজল এ বিষয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করেছেন হাস্যোজ্জ্বলপন্থায়।
প্রত্যক্ষভাবে কোন রাজনীতির সাথে জড়িত না থাকলেও কেন মেয়র আইভী গত কয়েক বছর ধরেই তার মত একজন ব্যবসায়ী সম্পর্কে এমন উদ্ভট ও অশালীন মন্তব্য করছেন এমন প্রশ্ন শুনেই খালেদ হায়দার খান মুচচি হেসে কিছুক্ষন নীরবতা পালন করেন। এরপর তিনি বলেন, ‘ দেখুন, আমার দাদা মৃত আব্দুস সামাদ খান একজন আইনজীবি ছিলেন এবং ১৯৫৪ সালে রুপগঞ্জ থেকে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হয়ে সকলের জামানত বাজেয়াপ্ত করে একজন এমএলএ নির্বাচিত হয়েছিলেন।
আমার বাবা মরহুম গোলাম রাব্বানী খান এই শহরের মানুষের কাছে আমৃত্যু কতটা সম্মান পেয়েছিলেন তা তো বলাই বাহুল্য আর আমার মা ছিলেন একজন শিক্ষিকা। এমন একটি সুশিক্ষত পরিবারের সন্তান হিসেবে আমি ও আমরা ভাইবোনেরা সুশিক্ষাই পেয়েছি। কখনও বাবা-মায়ের অবাধ্য হইনি,তাদের বিরুদ্ধে কোনদিন কোন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ পর্যন্ত করিনি। কর্মজীবনেও কখনও কোন তিরস্কার বা প্রশ্নের সম্মুখিন হইনি।
আসলে মেয়র আইভীর উচিত আমাকে নিয়ে এতটা ‘এনালাইসিস’ না করে উনার নিজের সংসার নিয়ে এনালাইসিস করা উচিত, যাতে উনার নিজের সংসারটা ঠিক থাকে। ব্যক্তি জীবনেও সকলের দোয়ায় ২৬/২৭ বছর হলো সংসার জীবন পালন করছি একজন শিক্ষিতা ও ভালো পরিবারের মেয়েকে বিয়ে করে। ছেলে মেয়েরা বড় হয়ে গেছে, সুশিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে’।
এসব বলে আবার সেই রহস্যের মুচকি হেসে কিছুক্ষন চুপ রইলেন কাজল। এরপর বলেন, শুনেছি উনার স্বামী বিদেশে থাকেন, সেখানে উনার এক বোনও থাকেন, সন্তানরাও শুনেছি বিদেশে থাকেন।
উনার সন্তানরা বড় হচ্ছে। এখন এই ৬০বছর বয়সে এসে পুরানো দিনের কথা ঘাটাঘাটি না করাই ভালো। রাজনৈতিক বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। দোয়া করি যেন, আল্লাহ সবাইকে হেদায়েত দিক। সবাই অতীত ভুলে স্বামী সংসার নিয়ে সাংসারিক জীবনে সুখী থাকুক। আর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি উনার এত প্রেম যদি থাকে, তবে উনি মুক্তিযোদ্ধাদের কবর শ্মশানের মাটি দিয়ে ঢেকে দেয়ার অপচেষ্টা করতেন না।
এদিকে সেলিম ওসমানকে নিয়ে মেয়র আইভীর বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে খালেদ হায়দার খান কাজল বলেন, দলছুট বলতে উনি কি বোঝাতে চেয়েছেন সেটার ব্যাখ্যা উনিই দিতে পারবেন। সেলিম ওসমান আমার পিতৃতুল্য। তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে বিন্দু থেকে সাগর পরিণত করেছেন। উনি বিশাল শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়েছেন। নারায়ণগঞ্জের মানুষের জন্য কাজ করছেন, বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। কাজ করেন কি করেন না সেটা মূখ্য। কে কোথায় রাত্রি যাপন করলেন, সেটা দেখার বিষয়টি আসলে মূখ্যনা। রাত্রি কে কোথায় যাপন করলো সেটা না দেখে নিজেরটা দেখা উচিত।
নারায়ণগঞ্জের অপর এমপি, মন্ত্রী মহোদয়রাও ঢাকায় থাকেন। দেখার বিষয় তারা তাদের কার্য সম্পাদন করছেন কিনা। সেলিম ওসমান নিজের তহবিল থেকে সোয়াশ কোটি টাকা দিয়ে ৭টি স্কুল করেছেন, রাস্তা করে দিচ্ছেন, টোল ফ্রি ঘাট করে দিচ্ছেন আর কেউ তো মানুষের জায়গা দখল করে বাড়ী বানাচ্ছে, হিন্দু সম্পত্তি গ্রাস করছে। বিদেশে তো আমাদের স্বজন বন্ধুরা থাকেন, আমারাও যাই।
আর সেলিম ওসমান তো বিদেশে রপ্তানী করে অর্থ উপার্জন করছেন, আর কেউ কেউ তো এখান থেকে অর্থ রপ্তানী করে বিদেশে প্রাসাদসম বাড়ী অফিস তৈরী করছেন। বিদেশে প্রসাদ তৈরী করা, সন্তানরা থাকলে সেখানে এক্সপেন্সটা কিরকম সেটা তো জানি। আয় না থাকলে ব্যয়টা কিভাবে আসবে, সেটাও জনগন প্রশ্ন তুলতে পারে। টাকাটা আসে কোথা থেকে, যার কোথা থেকে, এমন প্রশ্ন উঠতেই পারে।