দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: আগামী ১৬ জানুয়ারি নারায়ানগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হিসেবে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও নারায়ানগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক এড.তৈমুর আলম খন্দকার মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন।
সোমবার(১৩ ডিসেম্বর)বেলা সাড়ে ১১টায় নারায়ানগঞ্জ নির্বাচন অফিস থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী রিটার্নিং অফিসার আফরোজা খাতুনের নিকট থেকে এ মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেন তিনি।
মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ শেষে এড.তৈমূর আলম খন্দকার সাংবাদিকদের বলেন,২০০৩ সালে আমাকে আমার দল থেকে নমিনেশন দেওয়া হয়েছিলো।কিন্তু আমি দেশ ও দশের স্বার্থে আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থাকে উন্নয়ন করার জন্য তখন পৌরসভা নির্বাচন করি নাই। জেল খেটে আমি বের হবার পর ২০১১ সালে দল থেকে আমাকে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছিলো কিন্তু দলের স্বার্থে আমি আমার মনোনয়ন প্রত্যাহার করি।
পরবর্তী সময়ে আমাকে ২০১৬ সালেও মনোনয়ন দেওয়া হয় কিন্তু আমি নির্বাচন করি নাই।কিন্তু কেনো আমি এখন নির্বাচন করতে আসলাম আপনেরা জানেন গত ৫০ বছর আমার জ্ঞান হবার পর থেকে আমি জনগনের সাথে ছিলাম এখনো আছি।রিকশাওয়ালা, ঠেলাগাড়িওয়ালা,ঝি চাকুর,কুলি মজুর,ইটভাটা সহ শ্রমিকদের এমন কোন সেক্টর ছিলো না যেখানে আমার পদচারনা ছিলো না।
নারায়ণগঞ্জে ১৯টা বস্তি ছিলো বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র করেছিলাম।সহ নারায়ানগঞ্জ জেলায় আমার মায়ের নাম সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনে আমার অবদান ছিলো।যৌতুক প্রথা বাংলাদেশ থেকে রোধে পাইনিয়ার ছিলাম আমি।বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা ঘুরেছি।যৌতুকের যে আইন হয়েছে তার খসড়া আমার হাতে করা হয়েছে।
নাসিক নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন,আমি নারায়ানগঞ্জ জেলায় আমার কর্তব্য ও দায়িত্ব থেকে নির্বাচন করতে এসেছি। যারা নারায়ানগঞ্জ জেলায় নেতৃত্ব দিতো অকুতোভয় সৈনিক ছিলো একেএম সামসুজ্জোহা, জালাল উদ্দিন আহমেদ, আলী আহমেদ চুনকা, একেএম নাসিম ওসমান, হাসান জামাল, নাজিমুদ্দিন মাহমুদ, কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম যারা যারা এই শহরকে নেতৃত্ব দিতো তারা বেঁচে নাই কিন্তু আমি তৈমূর আলম খন্দকার বেঁচে আছি।
মনে করি নারায়ানগঞ্জবাসীর স্বার্থে নারায়ানগঞ্জবাসীর পাশে দাঁড়ানো দরকার মেয়র,এমপির অধিকৃত নারায়ণগঞ্জের জনগন। মেয়র এমপি মুখামুখি অবস্থানে নারায়ণগঞ্জে উন্নয়নে ও নারায়ানগঞ্জবাসীর দাবিদাওয়ায় বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে।এই অবস্থায় আমি তৈমূর আলম খন্দকার যদি চুপ থাকি সেটা আমার জন্য পাপ হবে।তাই আমার মার্কা হবে জনগণের মার্কা, ¯ে¬াগান হবে ‘নিজের খাইয়া তৈমূর।
হকারদের বিষয়ে তৈমূর আলম বলেন,আমি ছোটকাল থেকেই একটা নেতাকে শ্রদ্ধা করি সে হলো মজলুম নেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী।মানুষ ভূলে হোক,অসাবধানতায় হোক,অসতর্কতায় হোক নারায়ণগঞ্জের মানুষ আমাকে মজলুম জননেতা বলে।তাই আমি বলি আমার একটা দায়দায়িত্ব রয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতি ও নারায়ণগঞ্জের শহরের রাজনীতির প্রেক্ষাপট ভিন্ন ক্ষেত্রে দেখতে আপনাকে। দীর্ঘ দিন শ্রমিকদের নেতা ছিলাম।কিন্তু দুঃখের বিষয় নারায়ণগঞ্জের হকারদের পুলিশকে চাঁদা দিয়ে বসতে হয়। টাকা না দিলে দৌঁড়িয়ে দেয় আবার টাকা দিয়ে বসতে হয়।
আমি আমেরিকা,সুইডেন, ভুটান গেছিলাম রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করতে সেখানে হকার দেখেছি।পৃথিবীর উন্নত দেশে যদি হকার থাকে তাহলে নারায়ানগঞ্জ জেলার শহরে কেনো হকারদের বসতে দেওয়া হবে না।কেনো তাদের পূর্নবার্সন দেওয়া হবে না।আমি বলতে চাই নারায়ানগঞ্জবাসী পরিষ্কার ও সুন্দর রাস্তা দিয়ে হাটবে।সেই সাথে হকারদেরও বসতে দিতে হবে এটা তাদের আইনগত অধিকার আছে।তাদের পূর্নবার্সনের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।তা না হলে রুজিরুটি বন্ধ হয়ে গেলে তারা অপকর্ম ও অপরাধে জড়িয়ে যাবে।তাই আমি শহরের মানুষের ও উন্নয়নের স্বার্থে নির্বাচন করবো।আমার দল আমাকে বলেছে নির্বাচন করতে।আমি জানি আমার দল আমাকেই সমর্থন করবে।
ইভিএমে ভোটের বিষয়ে এড.তৈমূর আলম বলেন,ইভিএম চুরির বাক্স, ইভিএমে চুরি করবেন না।জনগন যে রায় দেয় মেনে নেব। আর জনগন যদি আমাকে রায় না দেয় তাহলেও আমি মেনে নিবো। ওবায়দুল কাদেরের সাথে জেল খেটেছি, গুলি জেলের ভয় পাইনা। যদি কারচুপি হয় তাহলে নারায়ণগঞ্জ হবে মাগুরা হুঁশিয়ারি দিলাম।
মেয়র পদে তৈমূর আলম খন্দাকারের সাথে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহে আরো উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র নারায়ানগঞ্জ জেলার বিএনপির আব্দুল মজিদ খন্দকার, জামাল উদ্দীন কালু, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি, নজরুল ইসলাম পান্না মোল্লা,জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি মন্টু মিয়া, বন্দর থানা বিএনপির সভাপতি নুরউদ্দীন আহমেদ, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার মনিরুল ইসলাম সহ বিপুল সংখ্যক বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকর্মী।
উল্লেখ্য যে,গত ৩০ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনের তফসিল মোতাবেক মনোনয়ন পত্র ক্রয় শুরু হয়েছে ৫ ডিসেম্বর থেকে এবং মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৫ ডিসেম্বর। ২০ ডিসেম্বর মনোনয়ন বাছাই এবং ২৭ ডিসেম্বর (সোমবার) মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিন নি করা হয়েছে।ভোট গ্রহণ ২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারি সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।