দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও লোক ও কারুশিল্প মেলায় ছুটির দিনে দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে । প্রাচীন বাংলার রাজধানী নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের বিশাল চত্বর জুড়ে বসেছে এ মেলা।
শুক্রবার মেলা প্রাঙ্গণে আগত দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা যায়। যেন উৎসবের আমেজে মেতে উঠেছে লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন ও এর আশপাশের এলাকা। বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন আয়োজিত এবারের মেলায় গ্রামের প্রতি চিরন্তন নাড়ির টান আর ভালবাসার আকর্ষণে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দলবদ্ধভাবে ভিড় করছেন এ মেলায়।
এ এক অন্য রকম সুবাসিত অনুভূতির পরশ মাখা আনন্দময় পরিবেশে যেন মেলা প্রাঙ্গণ। শিক্ষা সফর, বনভোজন, আনন্দ ভ্রমণ, ঘুরে আসি, পিকনিক ইত্যাদি বিভিন্ন ব্যানারে দল বেঁধে হাজার হাজার মানুষ আসছে এখানে। এক কথায় সোনারগাঁয়ে লোক কারুশিল্প মেলা প্রাঙ্গন এখন পুরোপুরি মুখরিত।
আবহমান বাংলার হাজার বছরের প্রাচীন লোকজ ঐতিহ্যকে লালন, পরিস্ফুটন এবং চলমান জীবনধারার সঙ্গে সম্পৃক্ত করার প্রত্যয় নিয়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা শুরু হয়েছে। মেলা চলবে ২৩ মার্চ পর্যন্ত। মেলা উপলক্ষে পুরো ফাউন্ডেশন চত্বর এক ভিন্ন সাজে সাজানো হয়েছে। লাল নীল বাতি দিয়ে মালার মতো করে জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে জাদুঘরের ভবনগুলোর ইটের তৈরি দেহে। ফাউন্ডেশনের মূল আঙ্গিনায় থেকে মেলার দিকে ধাবিত রঙিন পতাকায় শোভিত রাস্তার ধারে বিভিন্ন গ্রামীণ শ্লোক, নীতিকথা সংবলিত প্লেকার্ড, ফেস্টুন, লোকজীবনের চিত্রকলার মুর্যাল সাজানো হয়েছে। সোনারগাঁওয়ে ভ্রমণে বা পিকনিকে এসে মেলাকে বাড়তি পাওনা হিসেবে কথা বলছেন অনেকেই।
মানিকগঞ্জ থেকে শিক্ষা সফরে আসা একটি বেসরকারী কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেন, এখানে শিক্ষা সফরে এসে সোনারগাঁওয়ের প্রাচীন রাজধানীর ইতিহাস ঐতিহ্য দেখার সঙ্গে বাড়তি পাওয়া হিসেবে মেলাটি উপভোগ করলাম। মেলায় একটি স্টলের মালিক কবির হোসেন জানান, মেলায় তার বেচাকেনা ভালই চলছে। তবে শুক্রবার ও শনিবার একটু বেশি বেচাকেনা হয়। তার দোকানে রয়েছে বাহারি জামদানি শাড়ি। এই মেলায় এবার রয়েছে- কিশোরগঞ্জের টেরাকোটা, সোনারগাঁয়ের পাটের কারুশিল্প, নাটোরের শোলার মুখোশ, মুন্সীগঞ্জের পটচিত্র, ঝিনাইদহ ও মাগুরার শোলা শিল্প, রাজশাহীর শখের হাঁড়ি, চট্টগ্রামের নকশি পাখা, রংপুরের শতরঞ্জি, সোনারগাঁয়ের হাতি-ঘোড়া, পুতুল ও কাঠের কারুশিল্প, নকিশকাঁথা, মুন্সীগঞ্জের শীতলপাটি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান জেলার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কারুপণ্য এবং সিলেটের মণিপুরি তাঁতপণ্য দর্শনার্থীদের নজর কাড়ে। এর পাশাপাশি গ্রামীণ খেলাধুলা, লোক জীবন প্রদর্শনী ও মনোজ্ঞ লোক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন দর্শনার্থীরা।