শহর প্রতিনিধি
দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: প্রাচ্যের ডান্ডিখ্যাত নারায়ণগঞ্জ শহরের মুখোশধারী ভয়ংকর এক সন্ত্রাসীর নাম সালাউদ্দিন চৌধুরী বিটু ওরফে মাদক সম্রাট বিটু। দেশের বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, মাদক, চাঁদাবাজী, ভূমিদস্যূতা, হত্যাসহ ডজন খানেক মামলা- অভিযোগ রয়েছে।
কিন্তু রাজনৈতিক দলের একনিষ্ঠ কর্মী না হয়েও সন্ত্রাসী বিটু কিশোর গ্যাং পরিচালনা করে একজন অদৃশ্য নেতার ছত্রছায়ায় যুগের পর যুগ অপকর্মের পাহাড় রচনা করেছেন। কারন অনুসন্ধানে পাওয়াযায়, মাদক সম্রাট বিটু তার নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৮ নং ওয়ার্ড ও গোগনগর ইউনিয়নের প্রায় সকল এলাকায় মাদক ব্যবসা, ভূমিদস্যূতা, জবরদখল, চাঁদাবাজি, মারামারির মত অপকর্ম পরিচালনা করে থাকে।
একাধিক বার বিভিন্ন অপরাধে প্রশাসনের হাতে মাদক সম্রাট বিটু গ্রেফতার হলেও অদৃশ্য নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতায় সে পাড় পেয়ে যায়। বিটুর বিরুদ্ধে প্রশাসনের ভূমিকা নারায়ণগঞ্জের গণগনের কাছে বর্তমানে প্রশ্নবিদ।
সম্প্রতি গত রবিবার ১৫ই মে দিবাগত রাতে নারায়ণগঞ্জ সিটির ১৮নং ওয়ার্ডস্থ মুসলিম নগর (পাওয়ার হাউজ) এলাকায় বিসমিল্লাহ স্টিল মিলস এর মালিক মোঃ হাসিবুর রহমান হাসিবসহ ৮ শ্রমিকের উপর চাঁদার দাবীতে মাদক ব্যবসায়ীদের গড ফাদার বিটু’র নেতৃত্বে কিশোর গ্যাং অতর্কিত হামলা করে গুরুত্বর রক্তাক্ত আহত করে।
এই হামলার ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় বিসমিল্লাহ স্টিল মিলস এর মালিকের ছেলে গুরুত্বর রক্তাক্ত আহত মোঃ হাসিবুর রহমান হাসিবের ভাই মোঃ হাসান বাদী হয়ে মাদক সম্রাট বিটুকে ১নং আসামী করে সন্ত্রাসী রানা, মুরাদ, সাগর, সুমন, নজরুল ইসলাম, সজীব, চোরা রাজু, শাওনসহ অজ্ঞাতনামা ৪০-৫০ জনকে আসামী করে মামলা নং-১৯, তাং-১৬/০৫/২০২২ ধারা- ১৪৩/৪৪৮/৪২৭/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/১১৪/৫০৬ পেনাল কোড রুজু করেন।
মামলার বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার (ওসি) তদন্ত মোঃ আজিজুল হক হাওলাদার প্রতিবেদক গণমাধ্যম কর্মীকে জানান, আইন সকলের জন্য সমান। এই মামলার বিষয়ে আমার সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করা চেষ্টা করছি।
এর আগে ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে প্রত্যক্ষদর্শী বিসমিল্লাহ স্টিল মিলস এর শ্রমিক মোঃ আল আমিন সাংবাদিকদের কাছে জানান, আমাদের কারখানায় শ্রমিকরা রাতে যখন নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত ছিলো তখন হঠাৎ ১৮নং ওয়ার্ডের চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ীদের গড ফাদার সালাউদ্দিন চৌধুরী বিটু’র নেতৃত্বে কিশোর গ্যাং অতর্কিত হামলা করে।
এসময় আমাদের কারখানার মালিক মোঃ হাসিবুর রহমান হাসিব তাদের আসার কারন জানতে চাইলে প্রথমে তার উপর বিটু’র হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্রধারা অতর্কিত হামলা করে।
এ সময় আমাদের কারখানার শ্রমিকেরা মালিক মোঃ হাসিবকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসী বিটুর কিশোর গ্যাং বাহিনী শ্রমিকের উপর পূনরায় দেশীয় অস্ত্র, চাকু, চাপাতি, লাঠি নিয়ে হামলা করে প্রায় ৭-৮ জন শ্রমিক কে রক্তাক্ত আহত করে। হামলায় শ্রমিক লিমন (২৫) পিতা মোঃ শাহজাহান, আশিক (২০) পিতা আনিসুর, আরাফাত(২২) পিতা মোঃ আসলাম, সোহেল পিতা হাবিব, সেন্টু পিতা আব্দুল কাদির, মনির, পিতা জামাল হোসেন, আমজাদ পিতা মোহাম্মদ আলীসহ অনেকেই গুরুত্বর রক্তাক্ত আহত হয়।
পরে স্থানীয় বাসবাসকারীদের উপস্থিতি বেড়ে যাওয়ায় বিটুসহ সন্ত্রাসী বাহিনী সেখান থেকে চলে যায়। এরপর স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করেন।
বিসমিল্লাহ স্টিল এর স্বতাধিকারী হাজী মোঃ তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমার ছেলেসহ শ্রমিকের উপর সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে মামলা করেছি। আইনের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করি হামলাকারী সন্ত্রাসী বিটু সহ কিশোর গ্যাং কে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হউক।