দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার গোগনগরে প্যানেল চেয়ারম্যান রুবেল বাহিনীর হাতে নির্মম ভাবে দৌলত মেম্বারের হত্যার মূল আসামীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় ৩ জন দিনমজুরকে আটক করে আসামী করায় গোগনগর জুড়ে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
গোগনগর এলাকাবাসী জানান পুলিশ নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে নিরীহ তিন যুবক কে আটক করে হত্যা মামলায় চালান করে দেয়। অথচ হত্যার প্রধান আসামী রুবেল মেম্বার, বাবু,কাশেম হৃদয় সহ কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এমনকি মামলার ৭নং আসামী তাওলাদ মেম্বার যিনি দৌলত মেম্বারের অবস্থান খুনীদের জানিয়ে ছিল সেই তাওলাদ মেম্বার আশপাশে অবস্থান করলেও তাকে আটক করতে পুলিশ অভিযান চালায়নি। হত্যার ৩ দিন অতিবাহিত হলেও ২২ জনের মধ্যে ১৯ কে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
যে ৩ জনকে আটক দেখানো হয়েছে তারা কেউ হত্যার সাথে জড়িত নয় বলে জানান এলাকাবাসী। এরা ৩ জনই দিনমজুর। ২ জন কাজে যাবার পথে ও একজনকে ঘুম থেকে উঠিয়ে এনে আসামি করা হয়। এ নিয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানান প্রশ্ন জন্ম দিয়েছে। দৌলত মেম্বার পরিবার জানায় নিরীহ কাউকে যেন হয়রানি না করা হয়। যারা প্রকৃত আসামী তাদের আটক করা হোক। এজাহারে উল্লেখিত কাউকে এখনো পর্যন্ত আটক না করায় তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেন দৌলত মেম্বারের পরিবার। দৌলত মেম্বার মৃত্যুর ঘটনা এলাকায় পৌছার পরপরই এখনো পর্যন্ত থমথমে ভাব বিরাজ করে।
অপর দিকে সাইজুদ্দিন ও সালাউদ্দীন বাহিনীর হাতে গুরুতর আহত থাইল্যান্ডে চিকিৎসারত রবিন মারা গেছে বলে এলাকার মসজিদের মাইকে প্রচারনা চালানো হয়।
মঙ্গলবার (২৮ জুন) সকাল ১০ টায় রবিনের মরদেহ গোগনগরে পৌছার কথা থাকলেও এ রির্পোট বিকালে লেখা পর্যন্ত রবিনের মরদেহ এলাকায় পৌছেনি।এতে করে গোগনগরে ধুম্যজাল সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিন এলাকায় গিয়ে জানা যায়,আলী আহম্মেদের ডর্কইয়ার্ডের লোহা বিক্রি কে কেন্দ্র করে রবিন ও হাবিবের সাথে সাইজুদ্দিন ও সালাউদ্দিনদের সাথে মারামারির ঘটনা ঘটে। কাশেম সম্রাট ও রানা এ বিষয়ে কিছু জানেনা।
সেদিন সালাউদ্দীন ও সাইজুদ্দিনগংদের হামলায় রবিন গুরুতর আহত হলে রবিনকে ঢাকার আলী আজগর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়। সেখানে অবস্থার উন্নতি না হলে রবিনকে এয়ারবাসে করে থাইল্যান্ডে নিয়ে যাওয়া হয়।
এলাকাবাসী জানান,সালাউদ্দিন, সাইজুদ্দিন বাহিনীর হামলায় রবিন ও হাবিব গুরুতর জখম হলেও রবিনের ভাই রুবেল মেম্বার এর ধারনা রবিনকে মারধরের পিছনে কাশেম সম্রাট,রানা গংরা জড়িত (এ বিষয়ে পুলিশ সুষ্ঠু তদন্ত করলে প্রকৃত ঘটনা উম্মোচন হবে) রানার বাসা ও তার বাবার নামে নির্মানাধীন জলিল সুপার মার্কেটে কয়েক দফা ভাংচুর, হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ চালায় রুবেল বাহিনী।
রবিনকে জখম করার ঘটনায় সদর মডেল থানায় কাশেম সম্রাট,রানা,সোহেল দের আসামী করে মামলা দায়ের করা হলে উল্লেখিতরা পুলিশের ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।
গত ২৬ জুন রাত ১০ টায় কাশেম সম্রাটের পিতা গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ৯ নং ওয়ার্ড মেম্বার দৌলত শিকদার সিএনজি যোগে শহরে ঔষধ কিনতে আসার পথে ৩য় শীতলক্ষ্যা সেতুর কাছে আসামাত্র রুবেল গংরা দৌলত মেম্বার কে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়।
দৌলত মেম্বার কে উদ্ধার করে প্রথমে মুন্সিগঞ্জ হাসপাতালে নেয়া হয়।অবস্থা আশংকাজনক হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।ঢাকা নেওয়ার পথে দৌলত মেম্বার মারা যান।
এতে করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।সোমবার সকালে রুবেল গংরা মসজিদের মাইকে ঘোষনা করে থাইল্যান্ডে রবিন মারা গেছে। এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল বজায় রাখতে বিপুল পরিমান পুলিশ মোতায়েন করা হয়। দৌলত মেম্বার ও রানার লোকজন এবং এলাকাবাসী পুলিশের প্রতি তীব্র ক্ষোভ করে বলেন,সদর থানা পুলিশ যদি শুধু রুবেল মেম্বারের মামলা গ্রহন না করে উভয় পক্ষের মামলা গ্রহন করতো তাহলে দৌলত মেম্বার কে খুন হতে হতোনা।
রুবেল মেম্বারের মামলা নেয়ায় কাশেম সম্রাট, রানা বাহিনীর লোকজন ছিল এলাকা ছাড়া। এ সুযোগ নেয় রুবেল।তার লোকজন এলাকায় দিব্যি ঘুরে বেড়ানোর কারনে দৌলত মেম্বার কে খুন হতে হয়। এলাকাবাসী তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,দুই পক্ষের মামলা নিলে তারা মীমাংসা করার জন্য মুরুব্বিদের সাথে বিচারে বসে সমস্যার সমাধান করতো। এ হত্যাকান্ডের জন্য পুলিশ দায় এড়াতে পারবেনা।
অপর দিকে রবিন মারা গেছে বলে প্রচারণা চালানো হলেও লাশ না আশায় তার মৃত্যু নিয়ে রহস্যের দানা বেঁধেছে।দৌলত মেম্বার হত্যা মামলা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে রুবেল মেম্বার গংরা রবিনের মৃত্যুর সংবাদ প্রচার করে ।দৌলত মেম্বারের লোকজন ও এলাকাবাসী আশংকা প্রকাশ করে জানান,এখন জীবিত রবিনের চেয়ে মৃত রবিন রুবেল মেম্বারদের বেশী প্রয়োজন বলে মনে হয়। কেননা দৌলত মেম্বার হত্যা মামলা হতে তারা রক্ষা পেতে এ চাওয়া তাদের।