দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: “দৃষ্টিজয়ে ব্যবহার করি, প্রযুক্তি নির্ভর সাদাছড়ি” এই প্রতিপাদ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের আয়োজনে বিশ্ব সাদাছড়ি নিরাপত্তা দিবস ২০২২ এ বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী প্রগতি সংস্থা ও নারায়ণগঞ্জ বধির উন্নয়ন সংস্থার অংশগ্রহণ। শনিবার (১৫ অক্টোবর)সকাল ১০টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা সভা ও বর্নাঢ্য র‌্যালী অনুষ্ঠিত হয়।

 জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের রেজিস্টার আবু নাঈম মৃধার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোসাম্মৎ রহিমা আক্তার এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ হামিদুল্লাহ মিয়া, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)উম্মে কুলসুম রুবি, নারায়ণগঞ্জ জেলার প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা উম্মে কুলসুম, প্রকল্প সমন্বয় পরিষদের সভাপতি আরিফ মোহাম্মদ শরীফ মিহির, প্রদীপ কুমার সাহা।

 প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোসাম্মৎ রহিমা আক্তার বলেন, আমরা কিন্তু স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ায় বাদ পড়বে একজনও এই মুঠো নিয়ে কাজ করছি। আমরা উন্নয়নে কাজ করছি। আপনেরা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নয় আপনাদের যাদের দৃষ্টি নাই তাদের দৃষ্টি আমাদের থেকেও অনেক পরিষ্কার। কখনো কোন বিষয় নিয়ে পিছিয়ে থাকবেন এমনটা মনে না করে আপনেরা সব সময় এগিয়ে আসবেন। আপনাদের সেবায় ও কল্যাণে বর্তমান সরকার কাজ করছে। আপনাদের সমস্যাগুলো নিয়ে আমরা কথা বলবো। আপনাদের আমি সহানুভূতি হিসেবে সমানুভূতি হিসেবে আমি দেখি এবং আপনাদের সকল কাজে আমি এগিয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ।

 এসময় প্রতিবন্ধীদের বিভিন্ন সমস্যার কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী প্রগতি সংস্থার মহাসচিব ইউসুফ আলী হাওলাদার বলেন,শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী প্রতিবন্ধীবান্ধব সরকার। প্রধানমন্ত্রী গতবার বিদেশ থেকে সফর করে আসার পর সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন আপনেরা আমাকে দেখিয়ে দেন কোন গরীব ও প্রতিবন্ধী জায়গা পায় নাই। কিন্তু আমরা আজ ভূমিহীন।

গতবছর আমি এখানে ভূমির জন্য জেলা প্রশাসক স্যারকে বলেছিলাম এবং আমাদের অনেকের জাতীয় পত্র সংগ্রহ করে একটা তালিকাও দিয়েছিলাম। তা সদর সমাজসেবা অফিসে না এখানে পড়ে আছে আমার জানা নাই। আমরা যদি ভূমির জন্য আবেদন করতে যাই তখন তারা আমাদের বলে আপনে তো সদর বা সিদ্বিগঞ্জ অথবা নারায়ণগঞ্জের ভোটার না জাতীয় ভোটার। এতে করে আমাদের মনোবল ভেঙে যায়। তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ করবো আমাদের যেনো এভাবে না বলে তার দিকটা দেখার জন্য। মানবিক দৃষ্টিতে আজকে আপনেরা যারা উপস্থিত আছেন আমাদের ভূমি সংক্রান্ত সমস্যাটি মাননীয় জেলা প্রশাসকের কাছে তুলে ধরবেন আপনেরা। প্রাইমারি লেভেলে যেসকল শিশুরা পড়ালেখা করে প্রতিবন্ধী সুরক্ষা আইনে যে সুযোগ সুবিধা রয়েছে তার কোন ধরনের সহযোগিতা পায় না তারা।

প্রাইমারির শিক্ষা অফিসাররা আমাদের কথা শুনছেন না। এতে করে প্রতিবন্ধী শিশুরা ঝড়ে যেতে পারেন তাই জেলা প্রশাসক স্যারের কাছে অনুরোধ করবো স্যার যেনো একটা প্রজ্ঞাপন বা নোটিশ জারি করে আমাদের শিশুদের প্রতিবন্ধী সুরক্ষা আইনের সুযোগ সুবিধা যাতে দেওয়া হয়।

 তিনি আরো বলেন, আমাদের কাছে কোন প্রতিবন্ধী সুরক্ষা আইনের কাগজ না থাকায় আমরা কাউকে কোন পরামর্শ দিতে পারি না বা অনেক সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে অবগত নই। আমাদের প্রতিবন্ধী প্রগতি সংস্থার অফিস ইসদাইর অনেকেই সেখানে গিয়ে আমার কাছে পরামর্শ জানতে চায় কিন্তু আমার কাছে প্রতিবন্ধী সুরক্ষা আইনের কোন কাগজপত্র না থাকায় তাদের পরামর্শ দিতে পারি না। তাই আমাদের প্রতিবন্ধী সুরক্ষা আইনের কাগজ এবং ১০০ টি হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ জানাবো। আমাদের যে হুইল চেয়ার দেওয়া হয় তাতে উঠা খুব কষ্ট সাধ্য।

আমাদের আরো ১০০ হুই চেয়ার লাগবে। তা যদি দেওয়া হয় তাহলে আপনাদের কাছে আমাদের প্রতিবন্ধী ভাই ও বোনেরা আসতে পারবে তাদের বিভিন্ন সমস্যা ও সুযোগ সুবিধার কথা জানাতে পারবে। সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও সমাজসেবা অধিদপ্তরকে ধন্যবাদ জানাবো আমাদের মাঝে ডিজিটাল সাদাছড়ি বিতরণের জন্য।

 আলোচনা শেষে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের মাঝে ডিজিটাল সাদাছড়ি বিতরণ করা হয় এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী প্রগতি সংস্থার ব্যানারে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালী বের হয়।

এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী প্রগতি সংস্থার মহাসচিব ইউসুফ আলী হাওলাদার, যুগ্ম মহাসচিব হাফেজ মাসুদুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান, দপ্তর সম্পাদক মোখলেসুর রহমান, মহাসচিবের সহধর্মিণী রেনু বেগম, কার্যনির্বাহী সদস্য তিতুমীর, নারায়ণগঞ্জ বধির উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি মোঃ নুরুজ্জামান, সহ-সভাপতি ইয়ারুল নেছা ময়না, সাধারণ সম্পাদক নাজমা বেগম, কোষাধ্যক্ষ মোঃ শাওন সহ জেলার প্রতিবন্ধী অন্যান্য সংগঠনের সদস্যবৃন্দ।