দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: বহুল কাঙ্খিত বক্তাবলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কাউন্সিল পন্ডের নেপথ্যে কারিগর কারা? এমন প্রশ্ন ঘুরে বেড়াচ্ছে ইউনিয়ন-থানা তথা পুরো নারায়ণগঞ্জ জেলা জুড়ে। দীর্ঘ ১৯ বছর পর এই সম্মেলনকে ঘিরে নানা উৎকন্ঠা বিরাজ করছিলো বক্তাবলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে।
ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বারংবার স্বর্ণপদক প্রাপ্ত চেয়ারম্যান এম শওকত আলীর নিজ ঘাঁটি বক্তাবলী ইউনিয়ন। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আলোচিত সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের অন্যতম সৈনিক হিসেবেও খ্যাতি রয়েছে এম শওকত আলীর।
এদিকে গত শনিবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার বক্তাবলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রি বার্ষিকী সম্মেলনে দু-পক্ষের মারামারির কারণে স্থগিত ঘোষনা করেন কাউন্সিলে দায়িত্বরত নেতৃবৃন্দ। বক্তাবলী রাজাপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের প্রধান বিরোধী দলগুলো রাজপথে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। পক্ষান্তরে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের রাজপথে থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। জেলা ও থানা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ একটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কাউন্সিল দিতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের ‘খেলা হবে’ বক্তব্য দেশব্যাপী আলোড়ন তুললেও সে ‘খেলা’ নিজ বলয়ের মধ্যেই শুরু হয়েছে, যার দর্শক তিনিই। সেখানে কিভাবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রাজপথে থেকে বিরোধী দলের আন্দোলন সংগ্রাম প্রতিহত করবে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক বোদ্ধা মহলে।
সম্মেলনে উপস্থিত কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দীর্ঘ ১৯ বছর পর এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিকী সম্মেলনে বিভিন্ন পদে একাধিক প্রার্থী রয়েছে। ভোট গ্রহনের সময় সন্ধ্যায় সভাপতি প্রার্থীদের মধ্যে হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। ভোট গ্রহন চলাকালীন সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী শফিক মাহমুদ ও তার লোকজন হৈ চৈ শুরু করেন। এক পর্যায়ে জেলা ও থানা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সামনেই অপর সভাপতি প্রার্থী আবুল হোসেনের সমর্থকদের সাথে মারামারিতে জড়িয়ে পরেন। এসময় সম্মেলনে থাকা চেয়ার ভাংচুর করা হয়। বিশৃঙ্খলা দেখে সম্মেলন স্থল দ্রুত ত্যাগ করেন আমন্ত্রিত জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোঃ শহীদ বাদল, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফউল্লাহ বাদল ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম সহ নেতৃবৃন্দরা। দফায় দফায় মারামারিতে জড়িয়ে পরেন পদ প্রত্যাশীরা। পরবর্তীতে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোঃ শহীদ বাদল আওয়ামী লীগের সম্মেলন স্থগিত ঘোষনা করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফউল্লাহ বাদল ও সাধারণ সম্পাদক এম শওকত আলী। তারা দুজনেই কাশিপুর ও বক্তাবলীর চেয়ারম্যান হয় বটে। মূলতঃ রাজনীতিতে নিজেদের প্রভাব অক্ষুন্ন রাখতে বক্তাবলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে ভিন্ন ভিন্ন প্রার্থীদের গোপনে সমর্থন করেন। বক্তাবলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে নিজ পছন্দের প্রার্থীদের পদ বাগিয়ে আনতে করেছেন বিভিন্ন নাটকীয়তা। প্রকাশ্যে যদিও গণতান্ত্রিক ধারায় সুষ্ঠ কাউন্সিলের কথা বলে বেড়ান। গোপন সমর্থনে সভাপতি পদপ্রার্থী মোঃ আবুল হোসেন প্রধান ও শফিক মাহমুদকে উস্কে দেন তারা।
তবে ঘটনার তৎক্ষনাৎ ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম শওকত আলী চেয়ারম্যান সভাপতি প্রার্থী শফিক মাহমুদ ও ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার মহিউদ্দিনের লোকজন হামলা চালায় বলে দাবি করেন। যদিও বক্তাবলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কাউন্সিল স্থগিতের নেপথ্যে কারিগর ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফউল্লাহ বাদল ও সাধারণ সম্পাদক এম শওকত আলী বলে দাবি করছেন তৃণমূল।