দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকম: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেছেন, গণতন্ত্রের জন্য বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল। এ গণতন্ত্রকে হরণ করে নিয়েছে সরকার। আমাদের নেতাকর্মীদের আত্মত্যাগ বৃথা যেতে দেবো না। আমাদের দায়িত্ব দেশের গণতন্ত্র উদ্ধার করা। সরকার মেগা উন্নয়নের নামে মেগা চুরি করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ফতুলøার ভূঁইগড় এলাকায় আয়োজিত জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন ড. মঈন খান। বিএনপির কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ভূঁইগড় এলাকার পাসপোর্ট অফিস সংলগ্ন জায়গায় এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সরকারের সমালোচনা করে মঈন খান আরও বলেন, ‘সরকার দেশের গণতন্ত্রকে হরণ করে বাকশাল কায়েম করেছিল। তারা মুক্তিযুদ্ধের শক্তি হতে পারে না। বিশ্বের কাছেও সরকারের মুখোশ খুলে গেছে। সরকার মেগা উন্নয়নের নামে মেগা চুরি করছে। বাংলাদেশের টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করছে। দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা রাজনীতি করি মানুষের ক্ষমতার জন্য। আমরা মানুষের সেবা করতে চাই। আওয়ামী লীগ রাজনীতি করে নিজেরা ক্ষমতায় আসার জন্য। আওয়ামী লীগ যদি উন্নয়ন করে থাকে তাহলে দিনের ভোট কেন রাতে করে? তারা কেন সুষ্ঠু ভোটে ভয় পায়।’
তিনি আরও বলেন,আপনাদের ফতুলøা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু পুলিশের গুলিতে চোখ হারিয়েছেন। বিএনপির কত নেতাকর্মী জীবন দিয়েছে।
এ স্বৈরাচারী সরকার দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে দেশ চালাচ্ছে। তারা দাবি- তারা নাকি স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। যে সরকার গণতন্ত্র হরণ করে আজ অলিখিত বাকশাক কায়েম করেছে। এ সরকার কোনো দিন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হতে পারে না। এ সত্য আজ শুধু বাংলাদেশের ভেতরে নয়, বাংলাদেশের বাইরের মুক্তিকামী বিশ্বের প্রতিটি মানুষ এটা টের পেয়ে গেছে।
দ্রব্যমূল্যে মানুষের নাভিশ্বাস উলেøখ করে তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে আজ মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। রিজার্ভ এত দ্রæত কেন কমল তার জবাব এ সরকারকে দিতে হবে। যারা সুশাসনে বিশ্বাস করে তারা এদের বিরুদ্ধে। রিজার্ভ খালি করে ওরা আইএমএফের কাছে যোতে বাধ্য হয়েছে। অর্থনীতিকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। এর জন্য সবচেয়ে ক্ষতিগ্র¯Í বাংলাদেশের মানুষ।
‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা বলতাম- পাকি¯Íান ২২টি ধনী পরিবার সৃষ্টি করেছে। আমরা এর প্রতিবাদ করেছিলাম। এই সালামরা মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিল গণতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক অধিকার রক্ষা করার জন্য। আওয়ামী লীগ একই কায়দায় কতগুলো পরিবার সৃষ্টি করেছে যারা মানুষের সম্পদ বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বলে বিএনপি জন্ম নাকি ক্যাটনমেন্টে। আমরা বলতে চাই- বিএনপির জন্ম ক্যান্টনমেন্টে হয়নি, আওয়ামী লীগের জন্ম তো ক্যান্টনমেন্টে হয়নি। সে ব্যাপারে আমি কথা বলব না বললে তারা লজ্জা পাবে। আওয়ামী লীগের জন্ম তো গণতান্ত্রিকভাবে হয়েছিল। কেন তারা স্বাধীনতার দুই তিন বছরের মাথায় বাকশাল কায়েম করেছিল। বিএনপি গণতন্ত্র হরণ করেনি, উল্টো শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সেই গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান গণতন্ত্র জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
মঈন খান বলেন, ডাক্তাররা বলেছেন- বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে হবে। সরকার মানবাধিকার ক্ষুন্ন করে তাকে আটকে রেখেছে। এর জবাব আওয়ামী লীগকে দিতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা আন্দোলন করছি ক্ষমতার জন্য নয়। আমরা আন্দোলন করছি মানুষের ভোটের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য। আমরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করছি। আওয়ামী লীগ ভালো কাজ করে থাকলে মানুষ তো তাদের ভোট দেবেই। স্পষ্ট করে বলতে চাই। আওয়ামী লীগ যদি মানুষের ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা করে তাহলে আমরা ইতোমধ্যে দেখিয়ে দিয়েছি মানুষ আওয়ামী লীগকে ঘৃণা করে। আওয়ামী লীগ চলে যাক। তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হোক। আওয়ামী লীগ সে নির্বাচনে বিজয়ী হলে আমিও তাদের অভিনন্দন জানাব। কিন্তু ওরা জানে- ওরা কত অপকর্ম করেছে। তাই ওরা সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে ভয় পায়।
জনসমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মো. গিয়াসউদ্দিনের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, ঢাকা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মো¯Íাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, আজহারুল ইসলাম মান্নান, কাজী মনিরুজ্জামান, সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন প্রমুখ।