দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ দূর থেকে দেখলে হয়তবা মনে হবে এটা কোন ময়লার ভাগাড় কিন্তু বাস্তবে না নয়। এ হচ্ছে ফতুল্লা বাজারের পেছনে বুড়িগঙ্গা নদীর পাড়ের চিত্র। প্রতিদিন ফতুল্লা বাজারে কাঁচামাল ক্রয়-বিক্রয় শেষে যে ময়লাগুলো অবশিষ্ট থাকে তার পুরোটাই ফেলা হচ্ছে বাজারের পাশেই বুড়িগঙ্গা নদীতে। যার ফলে বুড়িগঙ্গা নদীর পরিবেশটা এতটাই খারাপ পর্যায়ে যাচ্ছে তা দেখেও যেন না দেখার ভান করছে বাজার সমিতির নেতৃবৃন্দ।
সরেজমিনে দেখা যায়, ফতুল্লা বাজারের পিছনের অংশে যে ঘাটলাটি তৈরী হয়েছে তার পাশেই রয়েছে ময়লার স্তুপ। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ফতুল্লা বাজারের ভেতরে যে পরিমান ময়লা অবশিষ্ট হচ্ছে তা পুরোটাই যাচ্ছে বুড়িগঙ্গার বক্ষে। মাছ বাজারের মাছের ময়লা,গরু জবাইয়ের পর যে ময়লাগুলো জমছে,কাচাঁবাজারের সমস্ত ময়লাগুলোও যাচ্ছে এ নদীতে। এছাড়াও ফতুল্লা থানার উল্টোপার্শে অবস্থিত আজাদ ডাইংয়ের কেমিক্যাল মিশ্রিত পানিগুলোও সরাসরি বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলা হচ্ছে। যার ফলে বুড়িগঙ্গার নদীর পানিগুলোও যেন সেই ডাইংয়ের পানির রংয়ে পরিচিতি লাভ করেছে।
স্থানীয়রা জানান,বাজার এবং ডাইং উভয়ই প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। এখানে সরকারী কোন নিয়ম-কানুন তারা মানেনা। তারা যেটা করছে সেটাই যেন আইনে পরিনত হয়েছে। দিনের পর দিন বাজারের বর্জ্যগুলো বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলে নদীতে দূষিত করে রাখলেও তা যেন কেউ দেখছেনা। সরকার নদী দূষনের জন্য যতই আইন করছেনা কেন তা কর্নপাত করার সময় নেই বাজার পরিচালনা কমিটির সদস্যদের। পাশাপাশি আজাদ ডাইংয়ের কেমিক্যাল মিশ্রিত পানি বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরও না দেখার ভান করে রয়েছেন। অথচ পরিবেশ নিয়ে আন্দোলনকারীরা নদী বাচাঁতে যে আন্দোলন সংগ্রাম করছে তা নিছক ব্যর্থ হচ্ছে সরকারী দপ্তর ও প্রভাবশালী নেতাদের কারনে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলেন,এ সময় বাজারের পাশেই এ নদীতে আমরা গোসল করতাম। এখন আর তা করা সম্ভব হচ্ছেনা বাজারের আবর্জনা এবং ডাইংয়ের কেমিক্যাল মিশ্রিত পানি যেন পুরো নদীকে দূষিত করে ফেলেছে। এখন গোসল করাতো দুরের কথা নদীর সামনে গিয়ে বসলেই দুর্গন্ধে পেটের ভেতরে থানা নাড়ী-ভুড়িগুলো মোচর দিয়ে উঠে। আমরা চাই অতিদ্রুত এ বুড়িগঙ্গা নদীকে এ দূষনকারীদের কবল থেকে রক্ষা করা হোক। তারা আরো বলেন,বাজারের অবশিষ্ট ময়লার পাশাপাশি বুড়িগঙ্গা নদীকে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত করছে আজাদ ডাইংয়ের ক্যামিকেল মিশ্রিত পানিগুলো সরাসরি নদী বক্ষে প্রবেশ করে। যার ফলে জীবিত বুড়িগঙ্গাকে বর্ষা শেষ না হতেই মৃতের কাফন মুড়িয়ে দিচ্ছে আজাদ ডাইংয়ের কেমিক্যাল মিশ্রিত পানি।
বুড়িগঙ্গা নদীর পাড়েই ময়লার ভাগাড় সরাতে ফতুল্লা বাজার মালিক সমিতির সভাপতি কাজী দেলোয়ার হোসেনকে একাধিকবার বলা হলেও তিনি তা কোনভাবেই কর্নপাত করছেননা। যার ফলে দিনের পর দিন বাজারের অবশিষ্ট ময়লাগুলো সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নদীর পাড়ে এবং মাঝে ছুড়ে ফেলছে ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে তিনি একাধিকবার বলেছেন যে, আমরা প্রতিটি দোকানীকে বলেছি যে, বাজারের কোন ময়লা নদীতে ফেলা যাবেনা। তোমাদের যে ময়লাগুলো জমা হয় তা ময়লা গাড়িতে করে অন্যত্র ফেলবে। এখন যদি তারা সেই কথার অবহেলা করে তাহলে অবশ্যই তারা দোষী।