দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির কমিটি ঘোষনা করার পর থেকেই অর্থ কেলেঙ্কারী নিয়ে নানা সময় স্থানীয় মিডিয়াতে সমালোচনায় পড়তে হয়েছে সদস্য সচিব এ্যাড. আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে।
আর নাসিক নির্বাচনে ২ কোটির অভিযোগ ছাড়া আহবায়ক এ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খান ছিলেন ধোয়া তুলসি পাতা। তবে এবার সেই অর্থ কেলেঙ্কারীর অভিযোগ উঠেছে ধোয়া তুলসি পাতা নেতার বিরুদ্ধেও। তাও আবার ২ কোটি নয় মাত্র আড়াইলক্ষ টাকা এ যেন পচাঁ শামুকে পা কাটার মত অবস্থা।
এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির হাইকমান্ড অংশ গ্রহন না করার পাশাপাশি কড়া হুশিয়ারী দিয়েছেন নির্বাচনের কোন সমর্থন বা প্রচার প্রচারনা থেকে বিরত থাকতে। কেন্দ্রীয় নেতাদের এই ঘোষনার পর একই সুরে বিভিন্ন সভাসমাবেশে মহানগর বিএনপির আহবায়ক ও সদস্য সচিব হুঙ্কার দিয়েছেন।
পাশাপাশি তাদের এই নির্দেশনা দলীয় কোন নেতা বা কর্মী না মানলে নেয়া হবে সাংগঠনিক ব্যবস্থা। দলের হাইকমান্ডের সাথে সুরে সুর মিলিয়ে তাদের এই বক্তব্যে পরিষ্কার এ যাবৎ পর্যন্ত অর্থ কেলেঙ্কারীর অভিযোগ যাই উঠুক না কেন, তারা এখন দলের নিষ্ঠাবান ও শহীদ জিয়ার আর্দশিক সৈনিক বটে।
তবে দলের তৃনমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগের দিকে দৃষ্টি দিলে খোঁজ মিলে সরষের মধ্যে ভূত! শুধু তাই নয় আহবায়কের যোগসাজসে এবারের বন্দর উপজেলা নির্বাচনে অর্থ আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন ইউনিয়নের দায়িত্বরত নেতারাও।
অভিযোগ রয়েছে, শুরু থেকে বন্দর উপজেলা নির্বাচন নিয়ে মহানগর বিএনপির আহবায়ক ও সদস্য সচিব ২ দফা মিটিং করেছেন মেয়র আইভী পন্থি আবু সুফিয়ানের সাথে।
তবে সুফিয়ান নির্বাচন থেকে পিছু হঠার পর দুই নেতার অর্থ আয়ের আশায় কিছুটা ছাই পড়েছে। এই ঘটনার পর থেকে বন্দর উপজেলা নির্বাচনের আয়ের পথ থেকে সদস্য সচিব এ্যাড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু পিছু হটলেও, সুযোগ ছাড়তে নারাজ আহবায়ক এ্যাড. সাখাওয়াত।
বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরনের সহযোগীতায় রাজাকার পুত্র বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী মাকসুদুল ইসলামের কাছ থেকে ৫টি ইউনিয়নের ইফতার পার্টির কথা বলে হাতিয়েছে আড়াইলক্ষ টাকা। আর সেখান থেকে এ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন ভাগ বসিয়েছে ১ লক্ষ টাকার। আর ২৫ হাজার করে ৫টি ইউনিয়নে বাটোয়ারা করেছেন ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা, বাকিটা গিলেছেন হিরন নিজেই।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ মার্চ মদনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি হিরনের ঘনিষ্ট আত্মীয় শাহজাহান নিজে উপস্থিত থেকে চেয়ারম্যান প্রার্থী মাকসুদের নির্বাচনী প্রচারনার ক্যাম্প উদ্ভোধন করেছেন। যেখানে লক্ষ্য করা যায়, মদনপুর ৪নং ওয়ার্ডের কলাবাড়িতে মাকসুদের ছেলে মাহমুদুল হাসান শুভকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি নির্বাচনী ক্যাম্পে উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানের ফিতা কাটার সময় পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন শাহজাহান।
এবিষয়ে নাম প্রকাশ করতে অনিছুক বন্দরের বিভিন্ন ইউনিয়নের দায়িত্বর কয়েকজন নেতা বলেন, ফুল ফোটেছে শুনেছি কিন্তু ঘ্রান নিতে পারিনি। তবে এই ঘটনা অনেক নেতারাই বলছে হিরন মাকসুদ চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নিছে। সেখান থেকে সাখাওয়াত ভাই ১ লাক্ষ টাকার ভাগ নিছে। আর ২৫ হাজার করে ৫ টি ইউনিয়নে ভাগ করে দিয়ে হিরন ২৫ হাজার খেয়ে ফেলছে। অথচ আমি একটি ইউনিয়নের গুরুত্বপুর্ন পদে দায়িত্বে থাকার পরও এর ঘ্রান নিতে পারিনি। তবে ঘটনা সত্য।
ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য মদনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহজাহানকে তার মুঠোফোনে কল দিলে তিনি বলেন, আসলে আমি যেতে চাই নাই কিন্তু এলাকার ভাইয়েরা আমাকে নিয়ে গেছে। তাছাড়া আমার দোকান সেখানেই তাই গিয়ে ছিলাম।
এবিষয়ে বন্দর উপজেলার সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তাকে লাইনে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে মহানগর বিএনপির আহবায়ক এ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন জানান, এটা দল থেকে বহিস্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। কারন তার সাথে বিএনপির কোন নেতা কর্মী নেই। তাই দলের নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করার জন্য ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, যারা দলের নির্দেশ অমান্য করে কোন নেতাকর্মী নির্বাচনে প্রচারনায় অংশগ্রহন করবে। যদি এর কোন প্রমান পাওয়া যায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ বিষয়ে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, এটা দলের মধ্যে ভাঙ্গন সৃষ্টি করার জন্য কেউ কেউ সুযোগ নিতে পারে। যেহেতু এই কথার কোন প্রমান নাই, আমি সেটা নিয়ে কোন কথা বলতে চাই না। আর যারা দলীয় নির্দেশ অমান্য করে নির্বাচনে প্রচারনায় যাবে। প্রমান থাকলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।