সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন লক্ষীনারায়ণ কটন মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন ঘনিয়ে আসলেও তা নিয়ে ব্যাপক গুঞ্জন উঠেছে নির্বাচন না করার। বর্তমানে ম্যানেজিং কমিটির উল্লেখযোগ্য সফলতা না থাকার দরুন নতুন করে নির্বাচন দিতে অনীহা কমিটির সকল সদস্যদের। কারন নির্বাচন দিলে তা ব্যাপক ভরাডুবির সম্ভবনা রয়েছে তাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক অভিবাবক জানান, বিগত ২০১৭-১৮ কমিটি থাকাবস্থায় প্রতিটি সদস্য স্কুলে শিক্ষার মান নিয়ে ব্যাপক চিন্তাধারায় স্কুলে অনেক সফলতা পেয়েছিলো। কিন্তু বর্তমান কমিটির কর্তাবাবুরা শিক্ষার মানের পরিবর্তে অর্থনৈতিক মনোভাবটুকু একটু বেশী হওয়াতে ক্রমেই শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
২০১৭-১৮ইং শিক্ষাবর্ষে স্কুলে পিইসি পরীক্ষা জিপিএ-৫ ছিলো ১৬টি এবং সরকারী বৃত্তি ছিলো ৯টি,জেএসসি জিপিএ-৫ ১৬,বৃত্তি ছিল ৩টি,এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ ১০টি কিন্তু ২০১৮ শিক্ষাবর্ষে তা গিয়ে দাড়ায় পিইসি জিপিএ-৫ মাত্র ৩টি নেই সরকারী বৃত্তি,জেএসসিতে জিপিএ-৫ মাত্র ১টি এবং এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ মাত্র ৫টি। সার্বিক দিক বিবেচনায় ২০১৭ইং শিক্ষাবর্ষে ব্যাপক সফলতা পেলেও ২০১৮ইং শিক্ষাবর্ষে স্কুলে মেধাশূন্য হয়ে পড়ে।
অনেক অভিবাবক জানান,বর্তমানে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমানের স্ত্রী সালমা ওসমান লিপি এবং কো-অপ্ট সদস্য রয়েছে স্থানীয় কাউন্সিলর হাজী ইফতেখার আলম খোকন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র’র একগেয়ামির মনমানষিকতায় ক্রমেই ভেঙ্গে পড়ছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান।
অভিবাবকদের দাবী স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির প্রতিটি সদস্য যদি স্কুলের গুনগত শিক্ষার প্রতি মনোযোগী হতো তাহলে বিদ্যালয়ের ব্যাপক সুনাম বয়ে আনতো। আবদুল আউয়াল নামে এক অভিভাবক ক্ষোভের সহিত জানান,বিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাঘের মত না হলেও বিদ্যালয়ের ভেতরে বাঘসহ বিভিন্ন প্রতাজির পশুর ম্যুরাল রেখে দিয়ে তারা নিজেদেরকে বাঘের পরিচয় পরিচিত করার চেষ্টা করছে যা শিক্ষার সাথে কোন সর্ম্পক নেই।
শিক্ষার উন্নয়ন না হলেও স্কুলের বাহ্যিক সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি হয়েছে। আরেক অভিভাবক জানান,শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি না করে স্কুলের প্রতিটি ক্লাসের বেতন-ফি বৃদ্ধি করে স্কুলের তেমন কোন উন্নয়ন না হলেও প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্রের ৫ তলা ভবনের দুই তলার পর্যন্ত সম্পন্ন করে তুলেছেন।
এছাড়াও বিদ্যালয়ের শিক্ষা মান খারাপ হওয়ার ফলে ইতিমধ্যে অত্র স্কুলের অনেক শিক্ষার্থী স্কুল পরিবর্তন করে অন্যত্র চলে গেছেও বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি গতবার নির্বাচিক স্কুলের অভিভাবক সদস্য তার নিজ সন্তানকে অন্যত্র নিয়ে যায়।
অনেক অভিভাবকের দাবী যেহেতু বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন দ্রত ঘনিয়ে এসেছে তাই আমরা চাই কোন সিলেকশন নয় নির্বাচনের মাধ্যমেই আবার নতুন কমিটির মাধ্যমে বিদ্যালয়ের শিক।সার মান আবারও ফিরে আসুক। নতুবা নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমানের সহ-ধর্মীনি সালমা ওসমান লিপি’র ব্যক্তি ইমেজ বা মান সম্মান ক্রমেই অবনতির দিকে ধাবিত হবে। ক্ষতিগ্রস্থ হবে নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবার।
এবং পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের উপ-প্রচার সম্পাদক এনসিসি ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী ইফতেখার আলম খোকনেরও সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। নির্বাচন ব্যতিত যদি অন্য কোন প্রক্রিয়ায় ম্যানেজিং কমিটি গঠিত হলে গত বছর ১০ নং আওয়ামীলীগের কমিটির সদস্য যারা নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেছিলেন তাদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হবে এবং তৃনমুল আওয়ামীলীগের কোন্দল দেখা দিতে পারে।
অভিভাবকগন মনে করেন নির্বাচন না হলে স্থানীয় অবিভাবকরা মানববন্ধনসহ অন্যান্য আন্দোলনের পথ বেছে নিতে পারে এতে বিদ্যালয়ের সুনাম আরো ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।