দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনকারী স্বপনকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সচেতন ছাত্রসমাজের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী বিভিন্ন প্ল্যা-কার্ড, ব্যানার নিয়ে অংশ নেন।
অবিলম্বে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনকারী জাহিদুল ইসলাম স্বপনকে মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও জাহিদুল ইসলাম স্বপন কে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারে ষড়যন্ত্রকারী ও অর্থদাতা ভূমিখেকো ও দুর্নীতিবাজ আল মোস্তফা, সোনারগাঁও থানার সাবেক ওসি মোরশেদ আলম পিপিএম ও সাধন বসাকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির যৌক্তিক তিনটি দাবি মেনে নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোরালো আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সকালে সোনারগাঁও প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় র্যাব ও পুলিশের জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভূমিকার কড়া সমালোচনা ও দোষীদের চিন্হিত করে শাস্তির দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন জাওয়াদ, মোসা. মারিয়া, মো. তানবির, মো. সিয়াম, মোঃ জুনায়েদ খান, মোঃ সৌরভ, মোঃ আভির, মোঃ সিফাত, মোঃ আলভি, মোঃ কানন, মোঃ সাব্বির, নওরিন আক্তার প্রমুখ।
মানববন্ধনে জাওয়াদ বলেন, ২০১৮ সালে আল মোস্তফার থেকে ৫০ লাখ টাকা নিয়ে সোনারগাঁও থানার ওসি মোরশেদ আলম ও সাধন বসাক আমার পিতা জাহিদুল ইসলাম স্বপনকে গ্রেফতার করে নির্যাতনের কারনে ওসি ও এস.আই এর বিরুদ্ধে মামলা করায় বিগত ৭/১১/২০১৮ ইং তারিখে বিএনপি জামাত বলে সোনারগাঁও থানা যুবলীগ থেকে আমার পিতাকে বহিঃস্কার করা হয়।
এছাড়াও সোনারগাঁও থানা আওয়ামীলীগ সহ সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী আমার পিতার বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে। পরবর্তীতে আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি সহ উপজেলার চেয়ারম্যান ও সকল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সহ ৩৩জন আওয়ামীলীগের লোকজন আমার বাবার বিচার চেয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ দেয়। অথচ বিগত ০৩/১১/২০১৮ইং তারিখে সচেতন ছাত্র সমাজের প্রায় তিন হাজার ছাত্র ছাত্রী নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে সোনারগাঁও থানার সাবেক ওসি ও এস.আই এর অপসারন চেয়ে ও সুষ্ঠ তদন্তের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য মানবন্ধন করেন।
এরপর থেকে আমার বাবা আর আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত নয়। আমার বাবা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে সমর্থন দিয়েছেন ও ছাত্র ছাত্রীদেরকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন। পুনরায় আমাদের জমি দখলেন জন্য ভূমিদস্যু আল মোস্তফা, ওসি মোরশেদ ও সাধন বসাক এর ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিপুল টাকা দিয়ে র্যাব ও পুলিশকে দিয়ে আমার পিতাকে মিথ্যা মামলায় ফাসাইছে এবং গ্রেফতার করেছে। আমার বাবার মোবাইল ট্র্যাকিং করলে দেখা যাবে, যে এলাকায় মামলা হইছে, ওই থানা এলাকায় আমার বাবা যায় নাই। এমনকি আন্দোলনের সময় কোন ছবি বা ভিডিও বা কোন নিউজে আমার বাবাকে দেখাতে পারবে না। আমার বাবাকে আসামী করার পিছনে যারা যারা জড়িত আমি তদন্ত পূর্বক তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই ও আমার বাবার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার পূর্বক আমার বাবার মুক্ত চাই।
মানববন্ধনে মোসা. মারিয়া বলেন,জাহিদুল ইসলাম স্বপনকে গ্রেফতার এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। প্রশাসনের একটি অংশ অনৈতিক সুবিধা নিয়ে আন্দোলন কে প্রশ্নবিদ্ধ করেতে ও সরকারকে বিতর্কিত করার জন্য জাহিদুল ইসলাম স্বপন কে গ্রেফতার করেছে। ওনি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনকারী। সচেতন ছাত্র সমাজ অবিলম্বে তার মুক্তি ও সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানায়।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থী মো. তানবির বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনকারী জাহিদুল ইসলাম স্বপনকে সোনারগাঁ থানার সাবেক ওসি মোরশেদ ও এস.আই সাধন বসাক এবং ভূমিদস্যু আল মোস্তফা টাকা দিয়ে র্যাব ও পুলিশ কে দিয়ে গ্রেফতার করেছে। আমরা সচেতন ছাত্র সমাজ র্যাব ও পুলিশ সদস্যসহ জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই এবং স্বপন আঙ্কেল এর অবিলম্বে মুক্তি চাই।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থী মো. সিয়াম বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমর্থনকারী জাহিদুল ইসলাম স্বপনকে যদি মুক্তি দেয়া না হয় তাহলে সচেতন ছাত্র সমাজ গনস্বাক্ষর কর্মসূচী সহ কঠোর আন্দোলনের ডাক দিবে। মিথ্যা মামলায় একজন কে কারাগারে প্রেরন করা ও রিমান্ডে দেওয়া নৈতিকতা ও আইনের শাসনে পরিপন্থি। অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিতে হবে এবং জড়িত র্যাব ও পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থী মোঃ জুনায়েদ খান বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনকারী জাহিদুল ইসলাম স্বপন এর জন্য ২০১৮ সালে আমাদের সিনিয়র ভাই বোনেরা সচেতন ছাত্র সমাজের ব্যানারে মানববন্ধন করেছেন। ওনার মুক্তির জন্য ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য যা দরকার আমরা তা করবো, ছাত্র সমাজ এমন অবিচার মানবে না। টাকার বিনিময়ে পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের এমন অপকর্ম মানবো না। অবিলম্বে আল মোস্তফা, ওসি মোরশেদ ও সাধন বসাককে গ্রেফতার করিতে হবে।
উল্লেখ্য যে, জাহিদুল ইসলাম স্বপন সোনারগাঁও থানার ওসি মোরশেদ আলম পিপিএম ও সাধন বসাকের বিরুদ্ধে মামলার বাদী। বর্তমানে তাকে ফতুল্লা থানার মামলা নং-২০(৮)২৪, ২০(৯)২৪ ও যাত্রাবাড়ী থানার মামলা নং ৪২(১০)২৪ এর আসামি করা হয়। বিগত ২ নভেম্বর জাহিদুল ইসলাম স্বপনকে র্যাব গ্রেফতার করার পর থেকেই সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করেন।