নাচের স্কুল বস ড্যান্স ক্লাবের নামে দুবাই ও মালয়েশিয়া সহ দেশের বেশ কয়েকটি বারে কিশোরী ও তরুণীদের পাচারকারী চক্রের ৬ সদস্যকে আটক করেছে র্যাব-১১। এদের মধ্যে গত ১৫ নভেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে নিখোঁজ হওয়া আক্তার হোসেনও রয়েছে।
র্যাবের দাবি, ২৩ নভেম্বর দিবাগত রাতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো এলাকার শাহ চন্দ্রপুরী রেস্টুরেন্ট থেকে ৫ জন এবং তাদের স্বীকারোক্তিতে রাজধানীর খিলগাঁও গোড়ান এলাকা থেকে আরো এক জনকে আটক করা হয়েছে।
রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী নগরে র্যাব-১১ সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে এসব তথ্য তুলে ধরেন র্যাব১১’র মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলেপ উদ্দিন।
আটককৃতরা হলেন, ময়মনসিংহের ধুবাউড়া এলাকার অনিক হোসেন (৩১), নোয়াখালি জেলার চাটখালি এলাকার মো. মনির হোসেন ওরফে সোহাগ (৩০), সিদ্ধিরগঞ্জের আরামবাগ এলাকার ইব্রাহিমের ছেলে মো. আক্তার হোসেন (৪০), চাঁদুপুর কচুয়ার মো. আফতাউল ইসলাম ওরফে পারভেজ (৩৭), কুমিল্লার চান্দিনা এলাকার আ. হান্নান (৫২) এবং মাদারীপুর সদর এলাকার মো. আকাশ (২৯)।
তাদের মধ্যে মো. আক্তার হোসেন। তিনি ওই এলাকার ‘গাঙচিল’ ও ‘তারার মেলা’ নামে দুটি ড্যান্স ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা প্রশিক্ষক। এবং অনিক হোসেন ‘এডিসি অনিক ড্যান্স কোম্পানি’র প্রতিষ্ঠাতা প্রশিক্ষক। তারা দুজনই ১৫ নভেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জের দুই নং ঢাকেশ্বরী এলাকা থেকে নিখোঁজ হন।
আক্তারের পরিবার দাবি করেছিলেন, অনিক হোসেন আক্তার হোসেনকে এদিন বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর আক্তার হোসেনকে তার ড্যান্স ক্লাব থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেদিন থেকেই আক্তার ও অনিকের মুঠোফোন বন্ধ ছিলো।
তবে, র্যাব-১১ সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে, ২৩ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো মোড়ের শাহ চন্দ্রপুরী রেস্টুরেন্টে ৪ তরুণীকে বিদেশ পাচার করার সময় পাঁচজনকে আটক করে। এসময় উদ্ধার করা হয়েছে পাচারের জন্য সংগৃহিত ৪ তরুণীকে।
এছাড়াও তাদের কাছ থেকে ৭০ টি পাসপোর্ট, ২শ টি পাসপোর্টের ফটোকপি, ৫০ টি বিমানের টিকেট, ৫০ টি ট্যুরিস্ট ভিসার ফটোকপি, ১ টি সিপিইউ, ১টি মনিটর এবং একটি অত্যাধুনিক বিলাসবহুল মাইক্রোবাস ও নগদ এক লাখ ৫৮ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে।
র্যাব-১১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলেপ উদ্দিন জানিয়েছেন, আটকদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছে, এরা সকলেই আন্তর্জাতিক নারী পাচারকারী চক্রের সদস্য। তারা ১৫ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে তরুণীদের উচ্চ বেতনে চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে বিদেশ পাচার করতো।
তিনি জানান, এই চক্রের সাথে বিপুল সংখ্যক এজেন্ট, পাসপোর্টের দালাল, ড্যান্স বারের মালিক, ট্রাভেল এজেন্সি, ও অসাধু ব্যক্তি যুক্ত রয়েছে। এই নারী পাচারকারী সিন্ডিকেটের এজেন্টরা নিন্মবিত্ত পরিবার, পোশাক শিল্প এবং ব্রোকেন ফ্যামেলির সুন্দরী তরুণীদের প্রাথমিক ভাবে টার্গেট করে থাকে।