দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী পাচারকারী চক্রের ৮ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১ এর একটি অভিযানিক দল। সেই সাথে মধ্যপ্রাচ্যে পাচার হতে যাওয়া ২ তরুণীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে র্যাব-১১ এর বিশেষ অভিযানে কামরাঙ্গীরচর, কেরানীগঞ্জ ও মুগদা থেকে চক্রটিকে আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- ধানসিঁড়ি ট্রাভেল এজেন্সির মালিক মো. শাহাবুদ্দিন (৩৭), তরুণী সংগ্রহকারী এজেন্ট মো. হৃদয় আহম্মেদ ওরফে কুদ্দুস (৩৫), মামুন (২৪), মো. স্বপন হোসেন (২০), মো. শিপন (২২), রিজভী হোসেন ওরফে অপু (২৭), মুসা ওরফে জীবন (২৮) ও শিল্পী আক্তার (২৭)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩৯টি পাসপোর্ট, ৬৬টি পাসপোর্টের ফটোকপি, ১৮টি বিমান টিকিটের ফটোকপি, ৩৬টি ভিসার ফটোকপি, একটি সিপিইউ, ১৯টি মোবাইল জব্দ করা হয়।
র্যাব-১১ মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলেপ উদ্দিন জানান, জিজ্ঞাসাবাদে ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, গ্রেফতাররা একটি সংঘবদ্ধ আর্ন্তজাতিক নারী পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য এবং তারা ১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সী সুন্দরী তরুণীদের মধ্যপ্রাচ্যে উচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ড্যান্স বারে অসামাজিক কার্যকলাপের উদ্দেশ্যে পাচার করে।
‘সিন্ডিকেটের সদস্যরা পাচার করা নারীদের হোটেলে নিয়ে গৃহবন্দি করে রাখতো। বিদেশে অবস্থানকালীন সময়ে ওসব তরুণীকে কোনো অবস্থাতেই নিজের ইচ্ছায় হোটেল ও বারের বাইরে যেতে দেয়া হতো না।
থমিক অবস্থায় তরুণীরা এসব আসামাজিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হতে রাজি না হলে বিভিন্ন নেশাজাতীয় দ্রব্য জোরপূর্বক প্রয়োগ করা হতো বলে জানান ওই র্যাব কর্মকর্তা।
র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ধানসিঁড়ি ট্রাভেল এজেন্সির মালিক শাহাবুদ্দিন জানান, তিনি তার বিভিন্ন এজেন্টের মাধ্যমে ১৫ হতে ২৫ বছর বয়সী সুন্দরী নারীদের সংগ্রহ করে আসছিলেন। নারীদের বিদেশে উচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে মধ্যপাচ্যে অবস্থিত বিভিন্ন ড্যান্স বারে পাচার করতেন।
তার সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের ড্যান্স বারের মালিকদের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। গ্রেফতার অন্যারা তাকে নারী সংগ্রহের এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন।
চক্রটি গত ২ বছরে সহস্রাধিক তরুণীকে মধ্যপ্রাচ্যে পাচার করেছে জানিয়ে র্যাব-১১ মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলেপ উদ্দিন বলেন, গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে ।
তিনি আরও জানান, এর আগেও র্যাব ১১ এর অভিযানে গত ২৩ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের তারাবো এলাকা হতে ৪ জন ভিকটিম তরুণীকে উদ্ধারসহ আর্ন্তজাতিক নারী পাচারকারী চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তখন জব্দ করা হয় ৭০টি পাসপোর্ট, নগদ ১ লাখ ৫৮ হাজার টাকা, ২০০টি পাসপোর্টের ফটোকপি, ৫০টি বিমান টিকিট, ৫০টি ট্যুরিস্ট ভিসার ফটোকপি, ১টি সিপিইউ, ১টি মনিটর ও ১টি অত্যাধুনিক বিলাসবহুল মাইক্রোবাস।