দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন বলেন, সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক সাধারণ মানুষকে অবশ্যই ঘরে থাকতে হবে। করোনা থেকে বাঁচতে সকলকে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে সচেতন হতে হবে। সরকার বা আমাদের একার প্রচেষ্টায় এটা সম্ভব হবে না। সেই জন্য গণমাধ্যম কর্মী থেকে শুরু করে সকলের সহযোগীতা প্রয়োজন।
সোমবার (৩০ মার্চ) বেলা ১২ টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ত্রান সহায়তার অংশ হিসেবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে মোট ৭৫ মেট্টিক টন চাউল ও ৯ লক্ষ টাকা জেলার সকল উপজেলায় বিতরন করা হয়েছে। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটিকর্পোরেশনের আওতাধীন ওয়ার্ড গুলোতে মোট ৯.২২ মেট্টিক টন চাউল ও ১ লক্ষ ১০ হাজার ৭শ টাকা উপ-বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় কাচঁপুর শিল্প এলাকা ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের এলাকায় ৮০ প্যাকেট ও বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং স্থানীয়দের উদ্যোগে প্রায় ২শ ৫০ প্যাকেট ত্রান সামগ্রী বিতরন করা হয়েছে।
করোনা ভাইরাসের কারনে যে সকল কর্মজীবি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে যেমন, ভিক্ষুক, ভবঘুরে, দিনমজুর, রিক্সাচালক, ভ্যানগাড়ী চালক, পরিবহন শ্রমিক, রেষ্টুরেন্ট শ্রমিক, ফেরিওয়ালা, চায়ের দোকান করে জীবিকা নির্বাহ করে তাদের তালিকা তৈরি করে সহায়তা প্রদানের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
এর প্রেক্ষিতে যেন্ কোন মানুষ যেন বাদ না পরে সেই দিকে খেয়াল রাখা সহ যারা বিত্তবান, সামাজিক বা রাজনৈতিক সংগঠন ও এনজিও সংস্থা কোন খাদ্য সহায়তা প্রদান করলে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে নেয়ার আহবান জানাচ্ছি।
এছাড়াও তিনি আরও উল্লেখ করেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ তাদের নিজ নিজ এলাকায় ত্রান সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন এবং আজকে সন্ধ্যায় এক্স্রিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর সহযোগীতায় সদর উপজেলা ও সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মহল্লার সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। বিদেশ প্রত্যাগত ব্যাক্তিদের সামাজিক আইন ভঙ্গের শাস্তি সম্পর্কে অবহিত করা হচ্ছে, বাজারের দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রনে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে ও হোম কোয়ারেন্টাইনের কার্যক্রম যথাযথ ভাবে চলছে।
তিনি আরও জানান, করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা-৩ জন, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ জন, আইসোলেশনে আছেন ১ জন, আশা করছি তিনি ২/১ দিনের মধ্যে বাড়ি ফিরতে পারবেন। তবে নতুন করে কোন আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়নি এবং কেউ মারা যায়নি। তবে হোমকোয়ারেন্টাইনে ৪১২ জন ছিলো, তার মধ্যে আজকেই ১৮ জন নতুন যুক্ত হয়েছে। কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়প্রাপ্ত ২৩০, এরমধ্যে আজকে ৫১ জন। ১লা মার্চ থেকে এ পর্যন্ত বিদেশ ফেরত ৬০০৩ জন, তাদের মধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে ৯৫৯ জন।
সরকারী চিকিৎসা কেন্দ্র খোলা হয়েছে ৬টি। কোভিড-১৯ চিকিৎসায় নারায়ণগঞ্জে প্রস্তুত করা হয়েছে ৩০টি বেড। এর মধ্যে কাজ করবেন ৯০ জন ডাক্তার ও ১৭৩ জন নার্স। রোগি আনার জন্য ৬টি এ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত করা হয়েছে। কোভিড-১৯ এর বেসরকারী ৭২টি কেন্দ্র ৭২টি বেড, ১০০জন ডাক্তার ও ১৮০ জন নার্স, পিপিই মজুদ ১৪০২, বিতরণ করা হয়েছে ৫৪৮টি। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে পরিছন্নতা কার্যক্রম ও মশক নিধনের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় হতে নাসিক’কে ২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শামীম হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ সেলিম রেজা সহ বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।