দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ আমাদের এখন মূল কাজ হলো নারায়নগঞ্জ জেলায় সরকারকর্তৃক এবং বেসরকারি বা ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রান বিতরনের তালিকা তৈরী করা এবং নারায়নগঞ্জ জেলার নিরাপত্তার স্বার্থে কোথাও জনসমাগম হতে না দেওয়া।
রবিবার (৫এপ্রিল) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলার করোনা ভাইরাস নিয়ে সর্বশেষ পরিস্থিতি ও প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক সরকারি খাদ্য বিতরন নিয়ে প্রতিদিনের সংবাদ সম্মেলনে নারায়নগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃজসিম উদ্দীন এই কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক সাংবাদিক ও ত্রান বিতরন যারা করবেন তাদের উদ্দেশ্যে বলেন,নারায়ণগঞ্জ জেলায় আমরা কোথাও জনসমাগম যাতে না হয় তার জন্য ঘরে ঘরে ত্রান সামগ্রী দিয়ে আসতে বলেছি। আপনারা সাংবাদিক এবং যারা ত্রান বিতরন করবেন তাদের বলছি আপনারা কেউ চাল নেবার সময় ছবি তুলবেন না। আমাদের সরকারি কোন কর্মকর্তা বা আমি নিজেও ছবি তুলতে চাই তাহলে আমাদের বাঁধা প্রদান করবেন।
তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, আপনারা যারা খবর সংগ্রহের উদ্দেশ্যে বা নিজ পরিচয় অনেকে স্বেচ্ছাসেবী কাজ করেন তারা কখনো করোনা রোগীর সন্নিকটে গেলে পিপিই বাধ্যতামূলক পড়ে যাবেন। নারায়ণগঞ্জ জেলার নিরাপত্তার জন্য জনসমাগম, জটলা বা ভিড় পরিহার, বাজার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রন ও নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী,সেনাবাহিনী ও ম্যাজিস্ট্রেটরা কঠোরভাবে কাজ করছে এবং অভিযান পরিচালনা করছে।
নারায়নগঞ্জ জেলায় করোনা বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বলেন,নারায়নগঞ্জ জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ৬জন। তার মধ্যে আরোগ্য লাভ করেছে ৩জন, ২জন মৃত্যুবরণ করেছে এবং ১জন আইসোলেসনে। বাড়িতে মোট কোয়ারেন্টাইনে ৫৭১ জনের মধ্যে ৫৭জন নতুন যুক্ত হয়েছে।কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়া পেয়েছে ৪৪৬ জন।
১মার্চ থেকে বিদেশ ফেরত মোট ৬০২১ জন প্রত্যাগত থেকে তাদের ঠিকানা ও অবস্থান চিহ্নিত প্রত্যাগত ব্যক্তি ১২৫৪ জন।করোনা ভাইরাসের জন্য সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র ৬টি, কোভিড-১৯ চিকিৎসায় প্রস্তুতকৃত বেড ৩০টি, ডাক্তারের সংখ্যা ৯০ জন, নার্সের সংখ্যা ১৭৩ জন।
এম্বুল্যান্সের সংখ্যা ৬টি।বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র ৭২টি, কোভিড-১৯ চিকিৎসায় প্রস্তুতকৃত বেড ৭২টি,ডাক্তারের সংখ্যা ১০০জন,নার্সের সংখ্যা ১৮০জন।ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী(পিপিই) বিতরন করা হয়েছে ৬৬৫টি মজিদ রয়েছে ১০৪৩টি।নারায়নগঞ্জ ৪ আসনের সাংসদ সদস্য ৩৫০টি গাউন নারায়নগঞ্জ সিভিল সার্জনকে সরবরাহ করেছে।
তিনি নারায়নগঞ্জ জেলায় বেশ কিছু জায়গায় লকডাউন সম্পর্কে বলেন, সর্বশেষ নারায়নগঞ্জ জেলায় করোনা ভাইরাসে মৃত্য ব্যক্তি নারায়নগঞ্জ সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বাংলা বাজার বড় আমবাগান (সুচিন্তাপুর নগর)এর আবু সাঈদ মাদবর(৫৫) গতকাল সকাল ৯টায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে।তাই উক্ত এলাকায় উত্তরের মাদ্রাসার শেষ মাথা হেদায়েত উল্লা খোকনের বাড়ী থেকে দক্ষিনের বাংলাবাজার ব্যাংকের মোড় পর্যন্ত এবং পূর্বে হাসেমবাগ লেন মোড় থেকে পশ্চিমে প্রধান বাড়ীর মেইনরোড পর্যন্ত লকডাউন করা হয়েছে।এছাড়া বন্দরের রসুলপুর,বাবুরাইল,বেলি টাওয়ারসহ নারায়নগঞ্জের বেশ কিছু জায়গা লকডাউন করা হয়েছে।
এসময় তিনি ত্রান সম্পর্কে বলেন,৫এপ্রিল পর্যন্ত দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে ৬০০মেট্রিক টন চাল ও ২৭ লাখ টাকা নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন সহ উপজেলা পর্যায়ে বিতরনের জন্য উপ বরাদ্দ প্রেরন করা হয়েছে এবং আমাদের লক্ষ্য মাত্রা ৪০ হাজার পরিবারে বিতরনের কাজ চলমান রয়েছে। বেসরকারিভাবে মানবিক সহায়তার জন্য নগদ ১৬লাখ টাকা ও ২৮৭৭ প্যাকেটের মধ্যে ৭৬১ প্যাকেট ইতোমধ্যে বিতরন করা হয়েছে।এছাড়া সিটি কর্পোরেশন পর্যায় ১০টাকা কেজি চাল আজ থেকে বিক্রি শুরু হবে।এই চাল সপ্তাহে রবিবার,মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার বিক্রি করা হবে এবং একজন সপ্তাহে ৫ কেজি পর্যন্ত চাল কিনতে পারবে।