দ্যা বাংলা এক্সপ্রেস ডটকমঃ নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার দাপা ইদ্রাকপুর এলাকা থেকে ৩ কিশোরকে আটকে চাঁদা দাবীর ঘটনায় কিশোর গ্যাংয়ের ২ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রবিবার (৩১ আগষ্ট) রাত ৮টা ১৫ মিনিটে ফতুল্লার দাপা ইদ্রাকপুরস্থবোরহান হাজীর ইটখোলা থেকে ৩ কিশোরকে উদ্ধার সহ কিশোর গ্যাংয়ের ২ সদস্যকে গ্রেফতার করে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ।
এ ঘটনার সাথে জড়িত অন্য আসামীরা পলাতক রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো- ফতুল্লার ব্যাংক কলোনী এলাকার মৃত আবুল হাসেমের ছেলে সুমন ওরফে চোরা সুমন ও তক্কার মাঠ এলাকার আমান উল্লাহ ভূইয়ার ছেলে রানা।
অপহৃত সোহেলের মা মোসাঃ জিয়াসমিন বলেন, আমার ছোট ছেলে সোহেল বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ডেকোরেটরে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে।
রোববার(৩০ আগস্ট) বিকাল ৪টার সময় আমার ছেলে সোহেল তার বন্ধু আকাশ এবং সোহেল (১৭) দ্বয়কে সহ আমার বাড়ির সামনে বশির এর চায়ের দোকানে চা পান করতে থাকাকালীন উল্লেখিত ধৃত ও পলাতক আসামীগন মারাত্মক দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র সহকারে উক্ত বশির এর চায়ের দোকানের সামনে এসে কথা আছে বলে আমার ছেলে ও তার বন্ধুদেরকে ডেকে কৌশলে দাপা ইদ্রাকপুরস্থবোরহান হাজীর ইট খোলায় নিয়ে তাদেরকে অন্যায়ভাবে আটক করে রাখে।
এবং আমার ছেলে ও তার বন্ধুরা মাদক দ্রব্য গাঁজা বিক্রয় করে বলে অন্যায় ভাবে তাদের নিকট হতে স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করে এবং তাদের পকেটে মাদক দ্রব্য গাঁজা ঢুকিয়ে মাদক ব্যবসায়ী সাজিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে আমার ছেলের কাছে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে।
একপর্যায়ে আমার ছেলে আসামীদের দাবীকৃত চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে আমার ছেলেকে এলোপাথারী মারপিট করে নীলফুলা জখম সহ আটক করে রাখে। আমার ছেলে আমার সাথে যোগাযোগ করতে না পারায় অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন আমার বাড়ীতে এসে আমার ছেলে ও সুমন ওরফে চোরা সুমন এর সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলিয়ে দেয়।
তখন আসামী সুমন ওরফে চোরা সুমন আমার কাছে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। তার দাবীকৃত চাঁদার টাকা না দিলে আমার ছেলে সোহেলকে খুন করে ফেলবে মর্মে হুমকি দেয় এবং মোবাইল ফোনে আমার ছেলেকে মারধর করে ডাক চিৎকার শুনায়। আমি আমার ছেলের প্রাণ রক্ষার্থে আসামীদেরকে ১০ হাজার টাকা দিতে চাইলে তারা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
আমি ফতুল্লা থানায় এসে মৌখিক ভাবে জানালে ফতুল্লা থানা পুলিশ ইং-৩০/০৮/২০২০ তারিখ রাত্র ৮টা ১৫ মিনিটে দাপা ইদ্রাকপুরস্থবোরহান হাজীর ইটখোলা হতে আমার ছেলে সোহেল সহ তার বন্ধুদের উদ্ধার করে এবং আসামী সুমন ওরফে চোরা সুমন ও রানাকে আটক করে। ঐ সময় অন্য আসামীরা পালিয়ে যায়।
ধৃত আসামীদ্বয়কে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা তাদের এবং পলাতক আসামীদের উপরোক্ত নাম ঠিকানা প্রকাশ করে এবং ঘটনার কথা স্বীকার করে। আমার ছেলে ও ছেলের বন্ধুদের নিকট বিস্তারিত ঘটনা শুনে পুলিশের সহায়তায় পলাতক আসামীদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ ও আটকের চেষ্টা করে ধৃত আসামীদ্বয়কে সহ থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করতেছি।
ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক এসআই বায়েজীদ মৃধা বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের দুই সদস্যগ্রেফতার করেছি। বাকি আসামীদেরও গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন যাবত সুমন ওরফে চোরা সুমনের নেতৃত্বে এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা এলাকার মধ্যে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়া সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা- ঘটিয়ে এলাকাবাসীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।